
একটা সময় ছিল যখন মানুষ নিজের মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করেছে। হাতের কাছে যা পেয়েছে তাতেই লিপিবদ্ধ করতে চেয়েছে নিজের না-বলা কথাগুলো। যখন ধীরে ধীরে মানুষ আলোকিত হতে শুরু করল তখনই অনুভব করল তার বর্তমান জ্ঞানকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করা প্রয়োজন, ব্যস শুরু হয়ে গেল বই লেখার চেষ্টা। বই এককভাবে এমন এক বস্তু যা দেখলে একটু নেড়েচেড়ে দেখতে ইচ্ছে করে। যে পড়তে জানে না, সেও পড়তে না-পারার দুঃখ মনে নিয়ে গভীর আগ্রহে উল্টে পাল্টে দেখে। অন্তত বইয়ের ছবি দেখে সাধ মেটায়। আর পাঠকেরা জ্ঞানের ক্ষুধা মেটাতে যান গ্রন্থাগারে। লাইব্রেরিতে গিয়ে অনেকেই জোরে কথা বলেন কিংবা মুঠোফোন নীরব (সাইলেন্ট) করে রাখেন না। এতে লাইব্রেরিতে থাকা অন্য পড়ুয়াদের মনোযোগ নষ্ট হয়। লাইব্রেরি ব্যবহারের নিয়মকানুন যেমন মানতে হবে তেমনি লাইব্রেরিতে এমন আচরণ করতে হবে যাতে পড়াশোনার পরিবেশে ব্যাঘাত না ঘটে।
লাইব্রেরিতে যা করবেন, যা করবেন না
আড্ডা নয়, পড়ার উদ্দেশ্যে লাইব্রেরিতে যান।
ডিউই ডেসিমেল ক্লাসিফিকেশন (ডিডিসি) পদ্ধতিতে বই রাখা হয় লাইব্রেরিতে। তাই লাইব্রেরিতে গিয়ে বুকশেলফ থেকে বই নিয়ে যথাযথ স্থানে আবার রেখে দিন। না হলে পরে বই খুঁজে পেতে কষ্ট হবে। অনেক লাইব্রেরিতে আবার বই রেখে দেওয়ার নির্দিষ্ট স্থান আছে। সে ক্ষেত্রে ওই জায়গায় রাখুন। পরে কর্তৃপক্ষ নিজেদের মতো করে গুছিয়ে রাখতে পারবে।
বুকশেলফ থেকে কত বই নিচ্ছেন, তার একটি তালিকা করে রাখুন। এতে একটি হিসাব থাকবে।
অনেকে অনেক বই নিয়ে টেবিলে অগোছালো করে রেখে দেন। কিংবা বই অগোছালোভাবে খোলা রেখে খেতে যান। এটি করবেন না।
পা দুলিয়ে পড়বেন না। এতে অভদ্রতা প্রকাশ পায়।
বইয়ের পাতা ভঁাজ করা বা বইয়ের পাতা ছিঁড়ে নেওয়া একদমই উচিত নয়। বইতে বা টেবিলে কোনো কিছু লিখবেন না।
লাইব্রেরিতে এসে উচ্চ আওয়াজে কথা বলবেন না। এতে অন্যের মনোযোগ নষ্ট হতে পারে। যদি পারেন একেবারেই কম কথা বলুন।
অনেকে বই পড়ার সময় ফিসফিস আওয়াজ করে বই পড়েন। বই পড়ার সময় কোনো ধরনের আওয়াজ নয়।
মুঠোফোন বন্ধ রাখলে ভালো। সম্ভব না হলে সাইলেন্ট করে রাখুন। কল এলে বাইরে গিয়ে ফোন ধরুন।
লাইব্রেরি থেকে বই নিয়ে এলে যথাসময়ে ফেরত দিন।
আপনার কাছে বই থাকা অবস্থায় বইয়ের নিরাপত্তার ভার আপনার ওপরই বর্তায়। এ জন্য এমন কিছু করবেন না বা বই এমন স্থানে রাখবেন না, যাতে বইয়ের ক্ষতি হতে পারে।
লেখক: বিভাগীয় প্রধান, গ্রন্থাগার বিভাগ, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, ঢাকা।