বছরজুড়ে রঙের খেলা

লিপস্টিকে গাঢ় সাহসী রংগুলো বেশি দেখা যাবে এ বছরও
লিপস্টিকে গাঢ় সাহসী রংগুলো বেশি দেখা যাবে এ বছরও

রং দিয়ে নাকি মন চেনা যায়। একেকটা রং একেক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের প্রতীক। যেমন লাল রং মানে সাহস, শক্তি ও উদ্দীপনা। পরিচ্ছন্ন, পবিত্র কিংবা দক্ষতা বোঝাতে ব্যবহৃত হয় সাদা রং। তাই জীবনযাপনের প্রতিটি মুহূর্তই যেন রঙের খেলা! জীবনের নানা অনুষঙ্গে ব্যবহৃত রং আপনার ব্যক্তিত্বের প্রকাশ। ২০১৬ সালে কোন রংগুলো বিভিন্ন অনুষঙ্গে জনপ্রিয় হবে, সে সম্পর্কে বিভিন্ন পেশার বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই ধারণা দিয়েছেন। ধারণাগুলো মূলত পাশ্চাত্যভিত্তিক হলেও পুরো বিশ্বকেই তা রাঙিয়ে যাবে বছরজুড়ে। মিলিয়ে নিন আপনার রংগুলো!
চুলের রং
গলানো রং:
ইংরেজিতে বলা হচ্ছে কালার মেলটিং। চুল রং করার একটি নতুন ট্রেন্ড এটি। বেশ কিছু রং একসঙ্গে করে মাল্টিডাইমেনশনাল কালার লুক তৈরি করা হয়।
লাল রং: কুইভরে রেড, কপারের লালরঙা এই শেডটি ২০১৬ সালের অন্যতম জনপ্রিয় রং হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া অটাম রেড, বোল্ড বারগেন্ডি রংগুলো চুলে দোলা দেবে এ বছর।
নিয়নরঙা চুল: পুরো চুল তো আর নিয়ন রঙে রাঙানো সম্ভব নয়। আমাদের দেশের মেয়েদের ত্বকের রঙের সঙ্গে তা মানাবেও না। মাঝেমধ্যে কয়েকটি চুলে নিয়ন রঙের ঝলক দেখা যাবে। শুধু রং করালেই হবে না, এটি বহন করার মতো সাহসিকতা থাকতে হবে। 

গাঢ় ব্রাউন শেড: গাঢ় রঙের মধ্যে যদি থাকতে চান, তাহলে গাঢ় বাদামি শেডগুলো আপনার জন্য। চকলেট থেকে এসপ্রেসো রংগুলো দেখা যাবে বেশ।
রেইনবো ব্যাংগস: কপালের ওপর ব্যাংগস স্টাইলে কাটা চুলগুলোতে বিভিন্ন রং খেলা করবে এ বছর।
ডিপ-ডাই: দেখলে মনে হবে নিচের অংশের বেশ খানিকটা চুল কোনো একটি উজ্জ্বল রঙে ডুবিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ কারণেই ডিপ-ডাই নামে পরিচিত চুল রং করার এই পদ্ধতিটি ইতিমধ্যেই পাশ্চাত্যে বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছে।
লিপস্টিক: লিপস্টিকে গাঢ় সাহসী রঙের রংগুলো বেশি দেখা যাবে এ বছরও। গাঢ় বাদামি, বারগেন্ডি, লাল, গোলাপি, বেগুনি ইত্যাদি রং জমকালো ভাব নিয়ে আসবে চেহারায়।
পোশাক: পোশাকে এবার রাজত্ব করবে বিভিন্ন রং। বারগেন্ডি, কোরাল, রোস কোয়ার্টজ, পিচ ইকো, সেরেনিটি, স্নরকেল ব্লু, বাটারকাপ (উজ্জ্বল হলুদ), লিপপেট শেল (হালকা নীল), লিলিয়াক গ্রে, ফিয়েস্তা (উজ্জ্বল কোরাল রং), গাঢ় টিল, ইন্ডিগো, পারসিমোন, নিউট্রাল শেড, মুনস্টোন ব্লু, লেমন শিফন, আইসড কফি, গ্রিন ফ্লাশ, কালো, সাদা, পেইল ব্লাশ (হালকা গোলাপি), নেভি ব্লু, অ্যামেথিস্ট পারপল, পেরিউইনকেলের (উজ্জ্বল শকিং নীল রং) মতো রংগুলো বছরজুড়ে বিভিন্ন পোশাকে দেখা যাবে বলে মনে করছেন পাশ্চাত্য ফ্যাশন বিশেষজ্ঞরা।
দেয়ালের রং: গাঢ় ও হালকা নীল, ছাই রং, হালকা বেগুনি, সাদা ও চাঁপা সাদার বিভিন্ন শেডগুলো এ বছর রাজত্ব করবে। ল্যাভেন্ডার, হালকা বেগুনি রংগুলো শিশুদের ঘরের রং হিসেবে ধরা হয়। যথাযথভাবে ব্যবহার করা হলে বড়দের ঘরেও তা মানিয়ে যাবে দারুণভাবে। গাঢ় অবারজিন বা রেইনস্ট্রম রংটি পুরো ঘরে ব্যবহার না করে একটি অংশকে রাঙাতে পারেন। এটি বেশ জমকালো রং। বাড়িতে ঢোকার মুখে, লাইব্রেরির এক কোনায় কিংবা বাথরুমের একটি অংশেও ব্যবহার করতে পারেন। ওপরের রংগুলো বিভিন্ন নামে পরিচিতি পাবে হরিজন গ্রে, কাপাচিনো ওয়াইট, ব্লু ক্লাউড, প্যারাডাইজ ফাউন্ড, পিয়ানো কি, অলিভ, বিয়ার রান, পেপার মিন্ট পিংক, কোরাল ফ্লাওয়ার, সিলভার ট্রফি, ম্যানিলা ট্যান, মিন্ট স্প্রিং ইত্যাদি। এ ছাড়া মিল্কি ব্লু, পারমা গ্রে (নীল ও ল্যাভেন্ডার রঙের একটি মিশ্রণ), ব্লু হেরন (ফ্রেঞ্চ ব্লু, কিন্তু ছাইরঙা প্রভাব আছে), ফিওলই ডার্ক আইরিস (নেভি ব্লুর সঙ্গে বেগুনি রং মেশানো ), গাঢ় টিল প্রভৃতি রং অভিজাত ভাব নিয়ে আসবে। এ রংগুলো মনকে শান্ত রাখতেও নাকি কিছুটা ভূমিকা রাখে। যাঁরা হালকা রঙের মধ্যেই থাকতে চান, ফ্যাশন ট্রেন্ডে তাঁদের জন্যও আছে সমাধান। নিউট্রাল শেড, হালকা গোলাপি, ফাংকি ইয়েলো, সাদার বিভিন্ন শেড, ক্রিম ডিলাইটগুলো বেছে নিতে পারেন। সবুজের মধ্যে বোল্ড গ্রিন (গাঢ় কিন্তু উজ্জ্বল) ও চাপা গাঢ় সবুজ রং দুটি বেশ জনপ্রিয় হবে।

সূত্র: গুডহাউসকিপিং ডটকম, হাউসবিউটিফুল ডটকম ও রেডবুকম্যাগ ডটকম অবলম্বনে