বাগান করার কাজটি নিজেই করুন

.
.

আমাদের কাছে ছুটির দিন মানেই সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘুমানো, দুপুরে বিশেষ পদের খাবার। কিংবা অলস দুপুরে ভাতঘুম নয়তো টেলিভিশন দেখা। এই বিশেষ দিনটিতে আরও অন্য কিছু করা যায় কি? এমন কিছু যা উপকারে আসে, সতেজ করে, কিংবা আপনার ফিটনেসটাও বাড়ায়? এমনই একটি উদাহরণ হতে পারে বাগান করা।
হয়তো ভাবছেন, এই ইট-কাঠের শহরে বাগান করবেন কোথায়? কিন্তু আজকাল শহরের ফ্ল্যাটবাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্টগুলোতেও ছোট ছোট বাগান গড়ে উঠছে, একুট খোঁজ নিলেই তা জানবেন। হয় ছাদে বা গাড়ি বারান্দায়, কিংবা বেডরুমের পাশে ছোট বারান্দাটায়। অনেক অ্যাপার্টমেন্টে বেতনভোগী মালিও আছে। কিন্তু কাজটা নিজের হাতে তুলে নিলে কেমন হয়?
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ বলছে, ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট বাগানে কাজ করা মাঝারি মানের অ্যারোবিক ব্যায়ামের সমপরিমাণ, যা পাঁচ মাইল বাইক চালানো বা দুই মাইল হাঁটার সমান। বাগানে কাজ করা একধরনের শারীরিক পরিশ্রমও বটে। আসুন জেনে নিই এই কাজ করে কী কী উপকার হতে পারে।
প্রকৃতির সান্নিধ্য এভাবেই আমাদের বিষণ্নতা ও উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। সপ্তাহে অন্তত এক দিন কিছুটা সময় গভীরভাবে বাগানে বা প্রকৃতির কাছে কাটালে মানুষ আগের চেয়ে সুখী বোধ করে, কেননা ফুল, লতা, পাতা গাছের একধরনের ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে আমাদের মস্তিষ্কের ওপর।

.
.

তাই আসুন ছুটির দিনটা অলসভাবে না কাটিয়ে ঘরের এক কোণে বা বারান্দায় কয়েকটা গাছ লাগাই, গাছের পরিচর্যা করি। ইট-কাঠের এই আবর্জনার মাঝে এই একটুখানি বাগান অনাবিল আনন্দ হয়ে দেখা দিতে পারে।
ওজন কমানোর জন্য ক্যালরি ক্ষয় জরুরি। বাগানে কাজ করে আপনি বেশ খানিকটা ক্যালরি ক্ষয় করতে পারেন। খুনতি দিয়ে খোঁড়াখুঁড়ি বা গর্ত করতে আপনার খরচ হবে ১৯৭ ক্যালরির মতো, তারপর গাছ লাগাতে বা গাছের পরিচর্যা করতে আরও ১৭৭ ক্যালরি, আগাছা পরিষ্কার করতে ১৫৭ ক্যালরি। 

.
.

বাগানে কাজ করার সময় শরীরের বড় পেশিগুলো ব্যবহৃত হয়। এর ফলে সন্ধিগুলোর শক্তি ও নমনীয়তা বাড়ে, রক্তচাপ ও রক্তের শর্করা, চর্বি ইত্যাদি কমে, হাড় ক্ষয় রোধ করে। ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।

বাগানে কাজ করলে মানসিক চাপ কমে—এটা গবেষণালব্ধ তথ্য। একই সঙ্গে এটা রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও বাড়ায়। গাছের গোড়ায় বা টবের মাটিতে থাকে মাইকোব্যাকটেরিয়াম ভাকা নামের জীবাণু, যা নাকি আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে উদ্দীপ্ত করে। এ ছাড়া এটি মস্তিষ্কের সেরোটোনিন নামের রাসায়নিক নিঃসরণ বাড়ায়, যা মেজাজ ও মন ভালো রাখে।

সূত্র: পারমাকালচার রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ওয়েবএমডি।