বিদায়কালে বুঝতে পারছি কতটা ভালোবাসি স্কুলকে

‘বিদায়’ শব্দটা তিন অক্ষরের হলেও এটার বেদনা কতটুকু তা আমরা এখন বুঝতে পারছি। স্কুলের ছুটির ঘণ্টা আজ মনে হলো একটু তাড়াতাড়ি বেজে গেল। কিন্তু অন্যদিন এই ছুটির ঘণ্টা আর আজ ছুটির ঘণ্টার মধ্যে পার্থক্য একটাই—আজকের পর থেকে স্কুলে ক্লাস করার জন্য আর আমাদের যেতে হবে না। হয়তোবা স্কুলে এসে ক্লাসে করতে অনেক ইচ্ছা হবে। সেই ইচ্ছা পূরণ হবে না, কথাটা ভাবতেই কেন জানি মনটা খারাপ হয়ে গেল। আসলেই জীবনটা খুব ছোট। দ্বিতীয়-তৃতীয় শ্রেণিতে থাকতে ভাবতাম, কখন সপ্তম-অষ্টম শ্রেণিতে উঠব। আর সপ্তম-অষ্টম শ্রেণিতে উঠে ভাবতাম, কবে স্কুলজীবনটা শেষ করব। এখন সেই সময় এসেছে। কিন্তু আজকে কেন এত খারাপ লাগছে। কেন জানি না নিজের অজান্তেই চোখের কোণে দুই চোখের জল এসে বলছে, যেতে তো চাই না তবুও কেন তাড়িয়ে দিচ্ছ আজকে এভাবে। হতে পারে নিজের অজান্তেই স্কুল এবং স্কুলের সবাইকে অনেক অনেক ভালোবেসে ফেলেছি, যা হয়তো দ্বিতীয়-তৃতীয় এবং সপ্তম-অষ্টম শ্রেণিতে থাকতে বুঝতে পারিনি। কিন্তু এখন বিদায়কালে বুঝতে পারছি, কতটা ভালোবাসি স্কুলকে। স্কুলের বন্ধুদের ছেড়ে, স্কুলের শিক্ষকদের ছেড়ে, স্কুলের ফেলা আসা স্মৃতিগুলোর জন্য আমাদের চোখের কোণে জল আসতে পারে। স্কুলে এসে মামুদের জড়িয়ে কুশল বিনিময় করা, শেষ টেবিলে বসা, পড়া না পারলে স্যারের বকা, একজনে দোষ করে আরেকজনকে দোষারোপ করা, ফাজলামি করে স্যারদের কথোপকথন নকল করা, একেকজনকে একেক নামে ডেকে খেপিয়ে দেওয়া, রাবার দিয়ে মারামারি, ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে সবাই মিলে গান গাওয়া, একজনের টিফিন আরেকজনে খেয়ে ফেলা, কলম আনিনি বলে স্যার এবং বন্ধুদের থেকে কলম নিয়ে আর ফেরত না দেওয়া। আরও কত কী। শত চেষ্টা করলেও আর ফিরে পাব না স্কুলজীবনের সেই মুহূর্তগুলো। আজ থেকে সব কেন জানি স্মৃতি বিদ্যালয়ের স্মৃতি হয়ে গেল। স্কুলজীবনটাকে খুব মিস করব, তার থেকে বেশি মিস করব তোদের এবং শেষ কয়েকটা ক্লাস। তোদের অনেক সময় অনেক কিছু বলেছি। মনে কষ্ট দিয়ে থাকলে সবাই ক্ষমা করে দিস। সবার জন্য শুভকামনা থাকল। জানি না স্কুলকে ভালো কিছু উপহার দিতে পারব কি না, দেওয়ার চেষ্টা করব।

বিদায় দশম শ্রেণি...বিদায়!

আকাশ

হাজী ছোট কলিম উচ্চবিদ্যালয়