
আকাশ থেকে নামার সময় শুরুতেই আমি তাজ্জব। চারদিকে পানি আর সবুজ। এর মাঝখানে মাটির রাস্তা। নৌকাও চোখে পড়ছে দু-একটা। সবচেয়ে মুগ্ধ করেছিল যে জিনিস, সেটা ঘরের বারান্দায় আর ছাদে শুকোতে দেওয়া রং-বেরঙের কাপড়। এই দৃশ্যটা দেখেই মনে হচ্ছিল, আমি অন্য একটা দেশে আছি। বাকি জীবন এই দৃশ্যটা মনে থাকবে আমার। আকাশ থেকে বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো দেখছিলাম। প্রথম দেখাতেই দেশটা আমাকে মুগ্ধ করেছে।
আমাদের জাপানে বড় শহরগুলোতে সবকিছু খুব বেশি বাঁধাধরা। যানবাহনগুলো খুব নিয়ম মেনে চলে। এখানে ট্রাফিক জ্যাম আছে। সে জন্য একটা অনিশ্চয়তা থাকে, কোথায় কখন পৌঁছাব বলা মুশকিল। সত্যি বলতে িক, পর্যটক হিসেবে এই ‘সিস্টেম’টাও খারাপ লাগেনি আমার।
জাপানে আমি অভিনয় করি। ইজো নামের একটা সিনেমায় অভিনয় করেছি। কাজ করেছি বেশ কয়েকটা বিজ্ঞাপনচিত্রেও। মঞ্চনাটকও করা হয়েছে অনেক। গান-বাজনারও শখ আছে আমার। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান আমি শুনেছি। লালনের গানও আমাকে মুগ্ধ করে। বাংলায় গান গাইবার খুব ইচ্ছে। এবার গান গাওয়ার সুযোগ হয়নি। হয়তো সামনে কোনো একটা সময় হবে।
প্রথম আলো বাংলাদেশের প্রধান দৈনিক। আমাদের আসাহি সিম্বুন-এর মতো। প্রথম আলো অফিসে গিয়ে ভালো লেগেছে। যদিও ভাষা না জানার কারণে পত্রিকাটা পড়ার সুযোগ হয়নি। আশা করছি, ওয়েবসাইটে অনুবাদ করে এটা পড়তে পারব।
সব মিলিয়ে সপ্তাহ খানেক আমার কেটেছে বাংলাদেশে। এই দেশে আমি আবার আসব খুব তাড়াতাড়ি। বাংলাদেশে বিলের ধারে একটা মাটির ঘর বানাতে চাই। কী ভালোই না হতো, যদি বিলের ধারে একটা বাড়ি বানাতে পারতাম। শেষ বয়সটা ওই বাড়িতেই আমি কাটিয়ে দিতে পারি খুব আরামে।
তাতসুইয়া কোদা
জাপানি অভিনেতা ও পর্যটক।
জাপানি ভাষা অনুবাদে সহায়তা: সলিমুল্লা কাজল।