ব্রাজিলীয় এই তরুণীর আগমনকে কেন্দ্র করে কে কী ভাবছেন, তা নিয়ে ভাবলেন এইচ এম ফজলে রাব্বী
সরকারদলীয় রাজনৈতিক নেতা
প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আপনারা নিজ চোখে দেখলেন, এ দেশে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের জোয়ারে গা ভাসাতে সুদূর ব্রাজিল থেকে এসেছেন এই তরুণী। এই কৃতিত্ব বর্তমান সরকারের। পূর্ববর্তী সরকারের আমলে এ ধরনের কোনো ঐতিহাসিক ঘটনার নজির নেই। এই সরকারের আমলে এ দেশের যুবকদের প্রতি ব্রাজিলীয় তরুণীদের আগ্রহ ও ভালোবাসার সৃষ্টি হচ্ছে। এই কৃতিত্ব শুধু এই সরকারের।
বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক নেতা
প্রিয় দেশবাসী, আপনারা সবই বোঝেন। এ দেশে বর্তমান সরকারের বালখিল্য আচরণে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র ব্রাজিল তাদের বিশেষ প্রতিনিধি পাঠাতে বাধ্য হয়েছে। আমাদের আমলে কোনো বন্ধুরাষ্ট্র দেশের সার্বিক দিক বিবেচনা করার জন্য এভাবে প্রতিনিধি পাঠায়নি। এভাবে বহির্বিশ্বে আমাদের ভাবমূর্তি নষ্টের পেছনে দায়ী বর্তমান সরকার। ঈদের পরই আন্দোলন হবে আবার।
আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের সমর্থক
সবার সব দিন সমান যায় না। আগামী বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা মূল পর্বে উঠবে কি না, তা নিয়ে একটু দুশ্চিন্তা দেখা দিচ্ছে বলে আমাদের চিরশত্রু ব্রাজিলের ফ্যানরা খাস ব্রাজিলীয় প্রতিনিধি ভাড়া করে এনেছে। এটা করে তারা আমাদের মনোবল ভেঙে দিতে চায়। এসবে লাভ হবে না। আমরা এসব সূক্ষ্ম কারচুপি বুঝি। আমরাও তাদের দেখিয়ে দিয়ে মূল পর্বে উঠে যাব, এসব ষড়যন্ত্রে কিছুই হবে না।
ব্রাজিল ফুটবল দলের সমর্থক
সাম্বা সাম্বা! ব্রাজিলের প্রতি আমাদের এত ভালোবাসা দেখে এই আপুটি আর থাকতে পারল না ব্রাজিলে। চলে এল বাংলাদেশে। এ জন্য নিখিল বাংলা ব্রাজিল ফুটবল ফ্যান সমিতির পক্ষ থেকে আমরা অতি শিগগির রাজবাড়ীর সেই ভাইকে ভিআইপি মেম্বারশিপ প্রদান করব। নিশ্চয়ই তিনি ব্রাজিলের সমর্থক। আর্জেন্টিনার সমর্থক হলে কবেই আপু তাঁকে ব্লক মেরে দিত!
সিঙ্গেল তরুণসমাজ
‘তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়...’ এ দেশের জনগণের অর্ধেকই তো নারী, তারপরও কারও কাছে পাত্তা পেলাম না। আর ওই ভাই রাজবাড়ীতে বসে ব্রাজিলের মেয়ে পটিয়ে ফেলল! কী করলাম জীবনে! সারা জীবন অ্যাঞ্জেল জরিনা, মিষ্টি মেয়ে মম আর নীল পরী মিথিলাকে অগণিত লাইক আর মেসেজ দিয়েও তো কিছু করতে পারলাম না। একেই কি বলে সভ্যতা?
অ্যাকটিভ ফেসবুক লাইকার
পিপ পিপ পিপ, মাম্মা একটু সাইড দেও তো। দেখলেন তো রাজবাড়ীর এই ভাইটি ব্রাজিলীয় আপুর সব পোস্টে নিয়মিত লাইক-কমেন্ট করে কী করে ফেললেন? তারপরও কি তোমরা বুঝবে না লাইক-কমেন্টের গুরুত্ব? আমি কিন্তু তোমাদের সব পোস্টে লাইক দিই বন্দুকের গুলির বেগে। তোমরাও দিয়ো। সময় পেলে আমার আইডিটায় ঘুরে আসার দাওয়াত রইল মাম্মারা। পিপ পিপ পিপ।
জনৈক আঁতেল বুদ্ধিজীবী
সবার আগে বুঝতে হবে, কেন সে এত দেশ থাকতে বাংলাদেশেই এসেছে। ভালোবাসা হয়তো অজুহাতমাত্র। আপনারা নিশ্চয়ই জিকা ভাইরাসের কথা ভুলে যাননি? কিংবা কেই-বা বলতে পারে, এ দেশের পুকুরে অবাধে পিরানহা চাষের নীলনকশা নিয়ে এসেছেন এই তরুণী? এ দেশের মানুষকে এতটা বোকা ভাবা উচিত নয়। আমরা এ বিষয়ে আগামীকাল একটা মানববন্ধন করব।