সুষম খাবারের ছয়টি উপাদানের কথা আমরা সবাই জানি। এই ছয় উপাদানের মধ্যে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান অন্যতম। তবে ভিটামিনের রকমফের আছে। কেবল শাকসবজি, ফলমূলই নয়, প্রাণিজ উৎস থেকেও ভিটামিন পাওয়া যায়। প্রাণিজ উৎস থেকে পাওয়া যায় এমন একটি ভিটামিন হলো ভিটামিন বি-১২।
ভিটামিন বি-১২-এর অভাবে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা, দুর্বলতা, মাথা ঘোরানো, দুশ্চিন্তা, বিষণ্নতা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। রক্তশূন্যতাও দেখা দিতে পারে। রক্তশূন্যতায় রোগী দুর্বল হয়ে পড়ে, অল্প শ্রমেই ক্লান্ত ও হাঁপিয়ে ওঠে, বুক ধড়ফড় করে। পাকস্থলীর সমস্যায় ভুগতে পারেন, হতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য।
কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ শরীর ঝিনঝিন করা, অবশ লাগা কিংবা বৈদ্যুতিক শকের মতো অনুভূতিও হতে পারে এই ভিটামিনের অভাবে। এ ছাড়া দৃষ্টি ঘোলাটে লাগতে পারে, একটি জিনিস দুটি দেখা, চুল সাদাটে হওয়া বা পড়ে যাওয়া, নখের স্বাভাবিক রং হারানো এবং ত্বকের নানা সমস্যাও দেখা দিতে পারে। দীর্ঘদিন ভিটামিন বি-১২-এর ঘাটতির কারণে স্নায়বিক সমস্যা হতে পারে। ফলে হাঁটতে-চলতে এবং ভারসাম্য রাখতে অসুবিধা হয়। রক্তশূন্যতা বা স্নায়বিক সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ঝুঁকিতে যাঁরা
বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকিও বাড়ে। অনেকে প্রায়ই বা মাসের পর মাস গ্যাসের ওষুধ সেবন করেন। এতেও ভিটামিন বি-১২-এর ঘাটতি হতে পারে। নিরামিষাশী ব্যক্তির ভিটামিন বি-১২-এর ঘাটতির ঝুঁকি বেশি। জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি সেবনকারী নারীরাও আছেন এই ঝুঁকিতে। মদ্যপানেও ভিটামিন বি-১২-এর ঘাটতির ঝুঁকি বাড়ে। পাকস্থলী ও অন্ত্রের কিছু রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ভিটামিন বি-১২-এর ঘাটতি হয়।
যেভাবে পাবেন ভিটামিন বি-১২
যেকোনো খাদ্য উপাদানের ঘাটতি এড়াতে চাই সুষম খাদ্যাভ্যাস। প্রাণিজ উপাদান যেমন মাংস, কলিজা, দুধ, ডিম চাই রোজকার আহারে। খোলসযুক্ত প্রাণী (জলজ প্রাণী) আর সামুদ্রিক মাছ (স্যামন, সারডিন) থেকেও ভিটামিন বি-১২ পাওয়া যায়। তবে মাংস হচ্ছে ভিটামিন বি-১২-এর সবচেয়ে ভালো উৎস।
বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে যাদের দিকে
পরিবারের বয়স্ক সদস্যের দিকেও খেয়াল রাখুন। গর্ভবতী ও প্রসূতির জন্য ভিটামিন বি-১২ জরুরি।