মনেরবাক্স

সময় বয়ে যায়, স্মৃতি রয়ে যায়
শহরের নামকরা এক কলেজে ভর্তি হই। তখন তোমাকে প্রথম দেখি। পরে জানতে পারলাম তুমি আমাদের সঙ্গেই পড়ছ। ছোটবেলা থেকে আমি একটু লাজুক টাইপের। তাই মেয়েদের সঙ্গে সচরাচর কথা বলি না। তোমার সঙ্গেও হয়তো ওভাবে মেশা হয় নাই। একসঙ্গে প্রাইভেট পড়া, কলেজে ক্লাস করা এগুলো ছাড়া আর তেমন দেখা হয় নায়। তবু ওই সময়ে একটু একটু দুর্বলতা অনুভব করতাম। তবে কখনো বলার সাহস পাই নায়। প্রেম করার জন্য অনেক সাহসের দরকার হয়। অনেকে বলে, প্রেম করা আর সুইসাইড করা একই। ওসব ব্যাপারে আমি এমনিতেই একটু সেনসেটিভ। তবে এখন কিছুটা সাহস হয়েছে। এখন তুমি কোথায় আছ তা জানি না। ভার্সিটিতে চান্স পাওয়ার পর আর দেখা হয় নাই। ভবিষ্যতে দেখা হবে কি না, তা-ও জানি না। হয়তো তোমাকে ভুলে যাইনি। তবে আগের মতো অতটা অনুভব করি না। সময়ের বিবর্তনে মানুষ অনেক কিছুই ভুলে যায়। তবে ওই স্মৃতি মাঝে মাঝে মনে পড়ে। সময় বয়ে যাবে, স্মৃতি রয়ে যাবে।
মো: রাকিবুল ইসলাম
ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।
ভালো থাকিস তুই
তোকে প্রথম যেদিন দেখেছিলাম, খুব ভালো লেগেছিল। আর যেদিন প্রথম তোর সঙ্গে কথা বললাম, সেই অনুভূতি কখনো ভোলার নয়। তারপর আস্তে আস্তে বন্ধু হওয়া। মনের সব অনুভূতি ভাগ করে নেওয়া। তোর সঙ্গে কথা বলতে খুব ভালো লাগত। তারপর আমি ঢাকা চলে আসি। এই শুরু তোর আর আমার মাঝে দূরত্বের। যখন তুই দূরে চলে গেলি, তখনই তোর জন্য মনের মধ্য অনুভূতিগুলো টের পেতে লাগলাম। এর কিছুদিন পর যেটা শুনলাম, সেটার জন্য কোনো দিন প্রস্তুত ছিলাম না। শুনলাম তুই তোর পছন্দের মানুষটিকে বিয়ে করে নতুন জীবন শুরু করেছিস। আর আমার ভালোবাসা আজও আমার মনের মাঝেই ডুকরে কেঁদে মরছে। তবু বলি ভালো থাকিস তোই।
সোহেল, ঢাকা

স্বপ্নের পিছুটান
আর স্বপ্ন দেখি না তোমাকে নিয়ে, হয়তোবা ভুলে গেছি তোমাকে নয়, স্বপ্নকে। স্বপ্নের প্রবেশদ্বারটাই বন্ধ হয়ে গেছে আমার জন্য। চোখের জলের সঙ্গে মিশে আছ তুমি। যার গতি রোধ করা সম্ভব নয়। এখনো বৃষ্টি হয়, আর ভাবি না দুজনে ভিজব একসঙ্গে। এখনো আকাশ রাঙিয়ে অন্তরাগে অবস্থান করে বিকেলের সূর্য, এখন আর কারও হাতে হাত রেখে হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করে না অজানা কোনো দূর সীমানায়। আজও ফুল ফোটে আঙিনায়, আজ আমি আর মালা গাঁথি না। শরতের আকাশে আর ভাসে না দুটি শুভ্র মেঘ। আজও শিশিরে ভরে থাকে ভোরের দূর্বা ঘাস, নূপুর পায়ে সেথায় পা ভেজাতে আসে না কোনো কিশোরী। আজও আকাশে চাঁদ ওঠে, জোছনায় ঝলমলিয়ে ওঠে সারা পৃথিবী। শুধু তিমিরে ঢেকে থাকে একটি জীবন আমার পৃথিবী।
অনুপম সরকার, সাতক্ষীরা।
তোমার সঙ্গে কথা বলার জন্য মন ছটফট করে
তোমাকে অনেক ভালোবাসি। আমি জানি না তুমি আমাকে কোনো দিনও ভালোবাসবে কি না। তবে আমি তোমাকে শুধু ভালোবেসে যাব। আমি শুধু তোমাকে ভালোবাসি বিনিময়ে শুধু ভালোবাসা চাই আর কিছুই না। প্রতি রাতে তোমার সঙ্গে কথা বলার জন্য মন ছটফট করে। কিন্তু তুমি আর আগের সিম ব্যবহার করো না। নতুন কোনো ফোন নম্বর জানি না তোমার। আমি সত্যি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। জানি না তোমায় পাব কি না। যেখানে থাকো, ভালো থেকো।
মসফিকুর রহমান, বিরামপুর, দিনাজপুর।

আবারও দেখা হবে
২০০৩ সালের কথা। আই এম অলওয়েজ উইথ ইউ। একজন প্রতিশ্রুতিশীল গাইড। শুধু তোমারই জন্য। মাত্র তিন মাসের কথা, এখনো হয়নি। হ্যালো, আমাকে তুমি কোথায় স্থান দিয়েছ? উত্তরে অন্য প্রান্ত থেকে কথা আসে বাঁ দিকে। পরে বুঝলাম হার্ট তো বাঁ দিকেই থাকে। এতটাই বুদ্ধিমতী বন্ধু। তুমি যে, তোমার অনুপ্রেরণায় আজও আমি এগিয়ে চলেছি। অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে সেদিন তোমার বাসা থেকে বের হয়ে সোজা মসজিদে বসে অনেক কেঁদেছি, মনটা হালকা হলেও একটি সম্মানজনক পরিণতির জন্যই তো প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলাম। তোমার সেদিনের কান্নাকাটিও একটি শুভ ইঙ্গিত বহন করেছিল। কিন্তু কষ্ট হচ্ছে এই প্রেমের বাস্তবে রূপ লাভ করা হলো না। হয়তো আরও অপেক্ষা করা প্রয়োজন ছিল। কয়েক দিন পর সেদিন হঠাৎ হাসপাতালের বারান্দায় আচমকা দেখা হওয়ার পরও কেন অপেক্ষা করলাম না, এই কষ্টে আমার এখনো মন কাঁদে। আমার মা অনেক চালাক ও মেধাবী। তাই পরিবারের চাপে তোমার আগেই কেন যে আমি বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলাম জানি না। আমার ইন্টেলিজেন্ট ফ্রেন্ডকে দেওয়া কথা আমিই তো রাখতে পারিনি। তাই আজ ১৩ বছর পর তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি। তোমার জন্য আমার শুভকামনা রইল। কাছেই রয়েছে সব সময়। ভালো থেকো সর্বদা সর্বত্র। এই প্রত্যাশায়, আবারও দেখা হবে কোনো একদিন।
ইন্টেলিজেন্ট ফ্রেন্ড
(তোমার দেওয়া ছদ্মনাম)
চলে গেছ বলে
আমি কেন থেমে যাব?
তুমি ছেড়ে যাওয়ার পর অনেক কেঁদেছি। বিশ্বাস করো, অনেক কেঁদেছি। ভেবেছিলাম থেমে যাব, মিশে যাব অন্ধকারে ঝাপসা চোখে। এই দুনিয়ার মায়া আর সহ্য হয়নি। কিন্তু কই, তুমি চলে গেছ বলে, দুনিয়াটা থেমে যায়নি। প্রতিদিন কাকডাকা ভোরে সূর্য উঠেছে, তুমি চলে গেছ বলে আকাশে কালো মেঘে দুনিয়া আঁধার হয়নি। ঝড়ের তোড়ে বুকের ভেতরে জমে থাকা কষ্টগুলো ধুয়ে যায়নি। তুমি চলে গেছ বলে দুপুরের রোদের প্রকট কমেনি। তুমি চলে গেছ বলে সাগরের গভীরতা কমে যায়নি। তবে আমি কেন থেমে যাব? মিশে যাব অন্ধকারে?
আকাশ ইকবাল, চট্টগ্রাম।
১০৪ ডিগ্রি জ্বর নিয়েও ক্লাসে এসেছিলাম
তোমাকে দেখার পর থেকেই আমার মনের গোপন জায়গাটিতে একটু নতুনভাবে সাজানো শুরু করেছিলাম। নিজেকেও সাজিয়েছিলাম তোমার মনের মতো, শান্ত-শিষ্ট-ভদ্র। কত কোটি স্বপ্ন যে তোমাকে নিয়ে বুনেছিলাম, তা কেবল আমার সৃষ্টিকর্তা জানে। স্বপ্ন দেখেছিলাম একদিন শীতের রাতে শীতল বাতাসে কাঁপতে কাঁপতে দুজন মিলে গ্রামীণ কোনো আঁকাবাঁকা পথে হাঁটতে হাঁটতে গল্প করব। মায়াবী আলোয় মসৃণ ঘাসের ওপরে বসে বসে গল্প করব। আরেকবার ভেবেছিলাম বৃষ্টির দিনে গাড়িতে তোমাকে পাশের সিটে বসিয়ে পুরোনো দিনের কিছু গান ছাড়ব এবং নিজে ড্রাইভিং করে হারিয়ে যাব বহুদূরে। শুধু একবার তোমাকে নিজের হাতে লাগানো গাছের ফুল দেওয়ার জন্য একটা গোলাপ গাছ কিনেছিলাম। তোমার জন্য একটা ডায়েরি বানিয়েছিলাম যেখানে আমার লেখা সব কবিতা দিয়ে ছন্দের জাদু তৈরি করেছিলাম। তোমার কথা শুনব বলেই তো গুরুত্বপূর্ণ ক্লাসের কথা বলে, নানা রকম অজুহাত দেখিয়ে ১০৪ ডিগ্রি জ্বর নিয়েও ক্লাসে এসেছিলাম। তুমি একটা আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে না যাওয়ার কারণে আমিও দাওয়াত পাওয়ার পরও আমার যাওয়ার প্রোগ্রাম বাদ দিয়েছিলাম। অনেকবার ছক এঁকেছিলাম তোমার সঙ্গে মন খুলে কথা বলব। কিন্তু তা পারিনি, কেন পারিনি তা-ও জানি না। তুমি যখন কোনো কারণে ক্লাসে অনুপস্থিত থাকতে, তখন মনে হতো ক্লাস তার সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলেছে। একবার টিফিনের জমানো টাকা দিয়ে অনেক শখ করে একটা কলম কিনেছিলাম, কিন্তু কলমটি আছাড় খেয়ে তার লাবণ্য হারিয়ে ফেললেও আমার কাছে তার অনেক মূল্য ছিল। গ্রীষ্মের বিশাল ছুটিতে তোমার কথা শোনার জন্য তোমার বাসায় কল করেছিলাম এবং তোমার কণ্ঠের ধ্বনি শুনে ‘সরি, রং নম্বরে চলে গেছে মনে হয়’ বলে লাইনটা কেটে দিয়েছিলাম। তুমি বোর্ডের বিশেষ মেধাবী তালিকায় স্থান পেয়েছ শুনে খুব খুশি হয়েছিলাম। তোমার বাবাকে ভয়ে ভয়ে তোমার খোঁজখবর অনেক কৌশলে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। অনেক অনেক ভালোবাসতে চেয়েছিলাম তোমাকে। কিন্তু বিনিময়ে তোমার একটু হাসি দেখার খুব শখ ছিল।
মিয়াজী, ঢাকা সেনানিবাস
আমার আলো
অন্য সবার মতো কলেজের প্রথম দিন আমার ততটা সুখের নয়। প্রিয় বন্ধুদের ক্যাম্পাস থেকে হারিয়ে যখন আমি ক্লান্ত, তখনই প্রিয়র খাতায় লিখিয়ে নিলি তোর নাম। যেন গ্রীষ্মের দাবদাহে মৃতপ্রায় গাছটি বর্ষার বর্ষণে ফিরে পেয়েছে তার আদিরূপ। এর মধ্যেই আবার ঝড়। কারও করা মন্তব্যে সেদিন আমার মেজাজ চরমে। আর তুই এসে প্রসঙ্গ টানলি পুতুলের। আর নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তোকে দিলাম এক চড়। ব্যস, তুই আমাকে ভুল বুঝলি। এরপর বারবার তোকে কাছে টানতে চেয়েছি। কিন্তু তুই আসিসনি। আমার একটাই দুঃখ, শুধু একটা ভুলের জন্য আমাকে ভুল বুঝলি!
লেখা পাঠানোর ঠিকানা
অধুনা, প্রথম আলো, সিএ ভবন, ১০০ কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫। ই-মেইল: [email protected] ফেসবুক: facebook.com/adhuna.PA. খামের ওপর ও ই-মেইলের subject-এ লিখুন ‘মনের বাক্স’