মনের বাক্স

মনের বাক্স

আনন্দাশ্রু

কিছুদিন আগে ডাক্তারের চেম্বার থেকে যখন বউকে নিয়ে বের হচ্ছিলাম, তখন ডাক্তার সাহেব ডেকে বললেন, ‘মাস্টার সাহেব, আপনার ছেলে হবে নাকি মেয়ে হবে, জিজ্ঞেস করলেন না তো!’

উত্তরে বলেছিলাম, ‘স্যার, এটা আমার প্রথম সন্তান। অনুভূতি অন্য রকম। ছেলে বা মেয়ে যা–ই হোক, সে সুস্থ থাকলেই হলো।’ ডাক্তার বলেছিলেন, ‘আই অ্যাম ইমপ্রেসড, ভেরি ইমপ্রেসড।’

বাড়িতে আসার পর অনেকেই আমাকে ও স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘ছেলে নাকি মেয়ে?’

আমরা বলেছি, জানি না। ছেলে হলে আমি যতটা খুশি, ততটা খুশি মেয়ে হলেও। তবে কয়েকদিন ধরে আবার বউ দেখি মাঝে মাঝে কাঁদছে। তবে সেটা আনন্দে।

এই কান্না কি সন্তান হবে সেই আনন্দে নাকি প্রথম বাচ্চা সুস্থ আছে, এই আনন্দে তা আমি জানি না। আপাতত তাকে কাঁদতে দিচ্ছি, কাঁদুক। এ রকম কান্না সুখ বাড়ায়।

আল আমিন শিকদার, তাহিরপুর, সুনামগঞ্জ

আমার মেয়ে এখনো ঘরে

মেয়েকে প্রতিদিন বলি আম্মু বাইরে চলো, একটু ঘুরে আসো। বাইরের আলো-বাতাস দেখলে মন ভালো থাকবে, শরীর ভালো থাকবে। কিন্তু না, মেয়ে বাইরে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া যাবেই না।

সেই মার্চের ১৯ তারিখে স্কুল বন্ধ হওয়ার পর থেকে সে ঘরেই আছে। ডিসেম্বরের ১৯ তারিখে তার ঘরে থাকার ৯ মাস পূর্ণ হবে।

আমার মেয়ে নওশিন মুসতারির ঘরবন্দী জীবনের এই ৯ মাসে সে দরজার বাইরে যে সিঁড়ি, সেখানেও পা রাখেনি। আমি বলি একটু ছাদে চলো হাঁটতে। মেয়ে হেসে বলে, ‘আম্মু আমি করোনা মহামারিতে ঘরে থেকে সম্ভবত রেকর্ড গড়ব।’ এত দিনে তো মনে হয় সেই রেকর্ড হয়েই গেল! মহামারির মধ্যে আমরা মা, ছেলে, মেয়ে তিনজনের পরিবার যথেষ্ট সচেতনতা বজায় রেখে চলছি। কোথাও বেড়াতেও যাইনি। ছেলে আর আমি বিশেষ প্রয়োজনে বের হই, সচেতনতা মেনে। আমরা সুস্থ আছি।

জান্নাতুল ফেরদাউস, ঢাকা

ভালো থেকো সুপারম্যান

মা তো ‘মা’ই। মায়ের কোনো তুলনা হয় না। মায়ের কথা আসলে লেখা যায় না। ঠিক তাঁর মতো মাথার ওপরে আরও একটি সুবিশাল ছায়ার নাম বাবা। আজও বলা হয়নি, বাবা তোমাকে ভালোবাসি। কেন বলতে পারিনি, তার কোনো ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই...।

মধ্যবিত্ত পরিবারে সমস্যাটা বেশিই থাকে, কিন্তু মাথার ওপরে বাবা নামক সুবিশাল ছায়াটা আছে বিধায় আজও সমস্যা নামক শব্দটার সঙ্গে পরিচয় হয়নি। বাবার মুখের দিকে তাকালে মায়া হয়। বাবার হাত ধরেই তো কত কী শিখলাম। সবচেয়ে বড় মাছের মাথাটা মা বাবাকেই দিত, কিন্তু বাবা সেটা আমাকে দিয়ে দিত...।

কেন বাবা? সব বুঝি! আজ ১৭ বছর পর বলতে চাই, ‘বাবা সত্যি তোমাকে ভালোবাসি।’ হয়তো কখনো বলিনি তোমার ছেলে তোমাকে নিয়ে ভাবে। তোমার মুখটা সব সময় অন্তরে গেঁথে থাকে। তোমার গদ্যের মতো সহজ–সরল জীবনে অবিরাম বয়ে যাক সুখের ধারা। করোনা মহামারির সঙ্গে নিপাত যাক সব বেদনা, হতাশা, আর মনের চাপা কষ্ট।

ভালো থেকো। সুপারম্যান (বাবা)।

জুবায়ের, নেত্রকোনা সরকারি কলেজ

কুয়াশার সকাল

চারদিকে কুয়াশা, জনমানবশূন্য, সকালের সূর্যটাও পর্যন্ত দেখা যায় না। সেই রকমই কোনো এক সকালে তোমাকে প্রথম দেখেছিলাম। সম্পূর্ণ ভিন্ন বেশে। যদিও সেদিন তোমাকে চিনতে আমার সময় লেগেছিল। তবু সারা জীবন তোমাকে ভুলতে আমার সময় লাগবে না। কারণ, তোমাকে ভোলার আগেই আমি এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করব। সেই দুই মিনিটের পথচলা আমি আজও ভুলতে পারিনি। তোমার বলা প্রতিটি কথা এখনো আমার মনে বাজে। যদিও গোপনেই রয়ে গেছে আমাদের সেই পথচলা। আমি চাই, সেদিনের সেই সকালবেলা প্রতিদিন আমার জীবনে আসুক। তোমাকে না পেলাম, তোমাকে কল্পনা করে নিয়ে পায়ে পা মিলিয়ে কিছুক্ষণ হাঁটতে তো পারব। এটাই–বা কম কী? যেখানেই থাকো, ভালো থেকো।

ইতি

তোমার মেঘ

রূপকথার রানি

তোমার সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হওয়ার পর তোমায় ছাড়া চিন্তা করিনি আমার ভবিষ্যৎ। এই ডিসেম্বরে তোমার দেখা না পাওয়ার এক বছর পূর্ণ হলো। তবু এখনো তোমায় রেখেছি আমার ভবিষ্যৎ সাথিরূপে। জানি, তুমি নেই আমার লৌকিক যাপনে। কখনো একটি মুহূর্তের জন্য হওনি আমার একান্ত কেউ। বোধ করি তাই তোমায় স্বপ্নে টেনে আনি কাছে। রূপকথার গল্পের মতো সুখের সংসার সাজাব বলে। বাস্তবে যা অবাস্তব, কল্পনায় তার সবই সত্যি।

ইমরান হোসেন, বিএএফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম

কানে বাজবে তোমার সেই কথা

যেদিন তুমি জানালে যে তোমার বিয়ের দিন ধার্য হয়েছে। সেদিন তোমাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলাম। তোমার কাছে আমি কাপুরুষ হিসেবেই চিহ্নিত হলাম। কিন্তু আমার এই অনিশ্চয়তার জীবনে তোমাকে সঙ্গী করতে চাইনি। এমনিতেই একটা চাকরির জন্য এত সংগ্রাম, সঙ্গে করোনা মহামারি, জীবন কোথায় গিয়ে আমাকে দাঁড় করাবে জানা ছিল না। ভালো থাকো তুমি, আমি প্রাণপণে তাই চেয়েছি। ভেবেছি এমন কেউ তোমার দায়িত্ব নিক, যে তোমাকে ভালো রাখতে পারবে। এত এত ভালোবাসা দেবে, যাতে আমাকে তোমার মনেই পড়বে না। তুমি ভালো আছ জেনে, আমিও ভালো আছি।

পুরোটা জীবন আমার কানে বাজবে, ‘আমি এখন কী করব?’

কার্তিক চন্দ্র দাস, কুমিল্লা

লেখা পাঠানোর ঠিকানা

অধুনা, প্রথম আলো, প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবন, ২০–২১ কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

ই-মেইল: [email protected], ফেসবুক: facebook.com/adhuna.PA খামের ওপর ও ই-মেইলের subject–এ লিখুন ‘মনের বাক্স’