মনের বাক্স

বিজয় দিবসে তোর জন্মদিন!

এক বছর সাত মাস পার হয়ে গেল তোর সঙ্গে কোনো কথা নেই। জানি না আর কখনো কথা হবে কি না। তবে তোর সঙ্গে কাটানো ২ বছর ১১ মাসের প্রতিটি দিন সারা জীবন আমার মনে রয়ে যাবে। একসঙ্গে ক্যাম্পাসে হেঁটে চলা, লাইব্রেরির পেছনে বসে আড্ডা আর শীতের সকালে তোর প্রিয় মাল্টা চায়ে চুমুক দিতে দিতে গল্প করা আর হয়তো হবে না। শহরে ঘুরতে গেলে রাস্তা পার না করানোর জন্য তোর অভিমানী কথাগুলো খুব মিস করব। সামান্য ভুল আর একটু বেশি অভিমানের কারণে আমাদের বন্ধুত্ব হার মেনে নিল!

১৬ ডিসেম্বর শুধু বাংলাদেশের জন্মদিন নয়, এদিন তোরও জন্মদিন। জন্মদিনে তোর সঙ্গে যে সরাসরি কথা বলব তার কোনো সুযোগ নেই। তাই এখানেই লিখলাম, শুভ জন্মদিন। ভালো থাকিস।

জীজু, সরকারি আজিজুল হক কলেজ, বগুড়া।

মিথ্যাগুলোকেই ভালোবাসি

১৩ ডিসেম্বর ২০১৬। কয়েক শ কিলোমিটার দূরে বসে ফোনের পর্দায় তাকিয়েও অচেনা দুজন মানুষের মনের অনুভূতি যে একই রকমের হতে পারে, তা সেদিনের আগে জানতাম না। একে অপরকে ‘হাই’ লিখে না পাঠালে বুঝতাম না। এরপর পরিচয়, হালকা বন্ধুত্ব, প্রতিদিনের কিছু কথাবার্তা। ভালোই চলছিল।

হঠাৎ করে আপনি দীর্ঘদিনের জন্য অনলাইন থেকে উধাও। এরপর আবার যখন আমাদের কথা হলো,‘দূরত্ব ভালোবাসা বাড়ায়’ কথার সঙ্গে সন্ধি করেই হয়তো সেদিন মুঠোফোন নম্বর বিনিময় করেছিলেন। তারপর থেকেই শুরু আমাদের সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায়। প্রতিটি সকালে সূর্য দেখার আগে ‘সুপ্রভাত’ মেসেজটাকেই বেশি খুঁজত মন। সারা দিন কত শত গল্প, কত খুনসুটি! তারপর...

আমি আপনাকে মিথ্যাবাদী বলেই জানি। এত সুন্দর এই সম্পর্কটা প্রথমে না বলে, তারপর ঠুনকো অজুহাত দিয়ে শেষ করতে চাইলেন। সে যাত্রায়ও অগোচরে আপনি চলে গেলেন। এরপর ঘুরে যা পেলাম তাতে আপনাকে আমার মিথ্যাবাদীই মনে হয়েছে। আচ্ছা দীর্ঘ এই যাত্রায়, আমাদের যে সম্পর্কটা ছিল তার কি কোনো নাম দেওয়া যায়?

কোথায়, কেমন আছেন জানি না। যদি লেখাটা চোখে পড়ে, লেখার শেষে টাঙ্গাইল থেকে নীল দেখে চমকে ওঠেন তাহলে বলব, ‘আরেকটাবার কি ফিরে আসা যায় না? আসেন নাহয় সেই মিথ্যার ফুলঝুরি নিয়েই।’

নীল, টাঙ্গাইল।

আব্বু, তোমায় ভালোবাসি

জীবনকে কখনো সিরিয়াসলি নিইনি। যখন যা ইচ্ছা হয়েছে তাই করেছি। তাই তো জীবনে এমন ঘটনা ঘটল যা, একটা মেয়ের জন্য ভয়ানক দুঃস্বপ্ন। সবার সব আশা আমি নষ্ট করে দিয়েছি, আমাকে নিয়ে সবার সব স্বপ্নের ঘটেছে পরিসমাপ্তি। কিন্তু আজও একজন মানুষ আছে, যে আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে। অন্য কেউ হলে তো পড়াশোনাই বন্ধ করে দিত, কিন্তু সে আমাকে ভিকারুননিসায় ভর্তি করে দিল।

বলো আব্বু, আমি কি এত কিছুর যোগ্য? কত কিছু সহ্য করেছ তুমি আমার জন্য। তোমাকে কখনো হয়তো মুখে বলতে পারব না এই কথাগুলো কিন্তু তুমি তো প্রতিদিন খবরের কাগজ পড়ো, এটাও হয়তো পড়বে। আমার কথাগুলো আমার তুমি না–ই বুঝলে কিন্তু তুমি এটা পড়লেই আমর অনেক ভালো লাগবে। অনেক ভালোবাসি তোমাকে আব্বু।

আমি একদিন সত্যিই তোমার স্বপ্ন পূরণ করব। আজকে আমি নিজের নাম প্রকাশ না করে এই চিঠি লিখছি কিন্তু এমন একদিন আসবে যেদিন প্রথম আলোয় আমার সফলতার গল্প ছাপা হবে।

ইতি

তোমার বোকা মেয়ে।

অবিশ্বাস্য বিচ্ছেদ আমাদের

সাত বছরের টানা সম্পর্কের পর যে বিচ্ছেদ হবে, সেটা আমাদের দুজনের পরিচিত সবার কাছেই অবিশ্বাস্য ছিল। একসঙ্গে থাকা আমাদের নিয়তিতে লেখা ছিল না বলেই হয়তো এই বিচ্ছেদ। সেটাও কত দিন হয়ে গেল!

শুনেছি, বিয়ে করেছ। বউ, সংসার, পরিবার নিয়ে হয়তো সুখে আছ। আমাকে যে ভুলে থাকতে পারবে না, এটা বেশ ভালো করেই জানি আমি। তোমাকে ছাড়া কাটানো দিনগুলো কেমন জানি ধূসর, তবু কেটে যায় একরকমভাবে।

চাকরির জন্য তুমি আমি আলাদা শহরে, কিন্তু মন এখনো ঠিক একই জায়গায়। ছুটিতে পুরোনো শহরে যখন হঠাৎ দেখা হয়ে যায়, তখন সময় যেন থমকে দাঁড়ায়। কত কথা, কত স্মৃতি! কিছুই মলিন হয়ে যায় না। কিন্তু নিজেদের সঙ্গে অভিনয় করে ভালো থাকতে হয়। নতুন মানুষটার তো কোনো দোষ নেই। তাকে নিয়ে সুখী হও, ভালো থাকো।

নাম ও ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক।

প্লিজ ফিরে এসো

কারণে-অকারণে মন খারাপ হয়, হয় অজস্র অভিমান। সময়ের স্রোতে মিশে একাকার সব প্রতিশ্রুতি। তবু অবাধ্যতায় বা অনিচ্ছায় হোক এই মন তোমাকে চায়। কেউ অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেলে তাকে ভুলে থাকা ভীষণ রকম কঠিন। কিন্তু তবু ভুলে যেতে হয়, ভুলে থাকতে শিখতে হয়। তোমায় আজও ভুলতে পারিনি আমি। মিশে আছ আমার শিরা–উপশিরায়। রক্তের প্রতিটি কণায় তোমার নাম লেখা। যেখানেই থাকো, ভালো থেকো। তোমায় বড্ড মনে পড়ে গো। প্লিজ সব অভিমান ভুলে আবার একবার ফিরে আসা যায় না?

সাজ্জাদ সিয়াম, ভূরুঙ্গামারী, কুড়িগ্রাম।

‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’

ফেসবুক সময়ের মতো মূল্যবান জিনিস কেড়ে নিলেও দিয়েছিল তোমার মতো মহামূল্যবান মানুষকে। তোমার নাম এতটাই অদ্ভুত যে ছেলে বলেই মনে হতো। তুমি আমাকে ভুল প্রমাণ করতে প্রস্তাব দিলে দেখা করার। আমিও লুফে নিলাম আনন্দ চিত্তে। দেখা হলো লালবাগ কেল্লায়। উপহার হিসেবে দিলে বঙ্গবন্ধুর বই অসমাপ্ত আত্মজীবনী। স্বপ্নের মতো দেখা। উপহারটাও ছিল তোমারই মতো চমৎকার।

এর পরে কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে, কখনো নীলক্ষেতে বইয়ের দোকানে দেখা। সহস্র উদ্দীপনায় মৃদু হেসে ভেবেছিলাম, এবার বুঝি নিঃসঙ্গতার ছুটি। মিতব্যয়ী প্রেম ভালোই চলেছিল। কখনো সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, কখনো হুমায়ূন আহমেদ, কখনো–বা আনিসুল হকের মা উপন্যাস নিয়েই কেটে যেত পুরো দিন। পড়াশোনা, বই আর ক্যারিয়ার নিয়ে আলাপ করতে করতেই চার বছর কেটে গেল।

অবিন্যস্ত স্বপ্নগুলো সাজানোর আগেই দুঃস্বপ্নের মহামারি। করোনা অনেকের অনেক কিছু কেড়ে নিলেও, আমার কেড়ে নিল পুরোটাই। এমন প্রস্থানের আগে আমার আয়ু কেন শেষ হলো না প্রিয়তি। তবু আমার মতো একজনকে চার বছর ভালোবাসার জন্য রইল প্রার্থনা। ভালো থেকো। এটুকু জেনে রেখো, তোমার আশীর্বাদবার্তা লিখলাম তোমারই পছন্দের পত্রিকায়। পড়ে নিয়ো ওপারে বসে।

রিদওয়ান ওমর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

লেখা পাঠানোর ঠিকানা

মনের বাক্সে পাঠানো যাবে ই–মেইলে, ডাকে এবং প্র অধুনার ফেসবুক পেজের ইনবক্সে।

ই–মেইল ঠিকানা: [email protected] (সাবজেক্ট হিসেবে লিখুন ‘মনের বাক্স’)

ডাক ঠিকানা: প্র অধুনা, প্রথম আলো, প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবন, ২০–২১ কারওয়ান বাজার, ঢাকা ১২১৫। (খামের ওপর লিখুন ‘মনের বাক্স’)

ফেসবুক পেজ: fb.com/Adhuna.PA