মনের বাক্স
মা আমার মা
মা, ৬ ডিসেম্বর তোমার মৃত্যুদিন। সেদিন সকালে হঠাৎ করে পড়ে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে, সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো। কত কী করা হলো, কিন্তু তুমি আর ফিরে এলে না। রাত ৮.২৫ মিনিটে আমাদের এতিম করে চলে গেলে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
মনে করেছিলাম, আগের মতো আবার ফিরে আসবে আমাদের মধ্যে। সামাদ বলে আবার ডাকবে, কিন্তু না, সবই মিথ্যা। আব্বা ডিসপেনসারিতে রোগী দেখতে ব্যস্ত থাকতেন, আর তুমি আমাদের পাঁচ ভাইবোনকে সব ব্যথা–বেদনা, আপদ–বিপদে দুহাতে আগলে রাখতে। তোমার স্নেহের বাঁধনে বেঁধে রেখেছিলে আমাদের। হঠাৎ করে আব্বা চলে যাওয়ার পর তুমি ছিলে আমাদের বটবৃক্ষ।
তোমার জীবনধারাকে উপলব্ধি করেছি, আর সেই মতো আজও চলেছি। এই ৭৬ বছর বয়সেও এর কোনো পরিবর্তন হয়নি। মাঝেমধ্যে ভুল হলে তোমায় স্মরণ করে আবার ফিরে আসি তোমার রীতিনীতিতে। তোমার শূন্যতা আমাদের কষ্ট দেয়, কাঁদায়। মনকে সান্ত্বনা দিই, একদিন তো যেতেই হবে। এখন শুধু তোমার জন্য দোয়া করতে পারি। দানখয়রাত করতে পারি। পরম করুণাময় তোমাকে যেন বেহেশত নসিব করেন।
আবদুস সামাদ, গেন্ডারিয়া, ঢাকা
ভালোবাসার প্রিয়জনেরা
প্রথমে আমার মা-বাবা এবং ছোট ভাইবোনকে বলছি, তোমাদের আমি অনেক ভালোবাসি।
এরপর আমার চাচা-চাচিদের বলছি, তোমাদের কারণে আজ আমি আমার মনের কথা খুলে বলতে পারছি। আমি এমন এক মানুষ, যে কখনো কারও সঙ্গে কথা বলতে পারি না। আমার মনের কথা, সুখ-দুঃখের কথা তোমরাই বুঝতে পারো। বিশেষ করে আমার প্রিয় তামান্না চাচি, তুমি আমার সঙ্গে আমার মতো করে কথা বলেছ। আমি যা বলতে পারি না মা-বাবার সঙ্গে, তা–ও কেন জানি আমি তোমার কাছে বলতে পেরেছি। তোমার এই অবদান ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। সত্যিই তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি। তুমি ছাড়া হয়তো কেউ বুঝত না আমার দুঃখ।
আমার মা, আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি। সত্যিই তোমাদের আমি হৃদয়ের গহিন থেকে ভালোবাসি। আজ সে ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারলাম।
ফারহান নাজীব, গাজীপুর
ওগো অপরিচিতা
আমার মনের এক কুঠুরিতে তোমাকে রেখেছি। খুব ভয় হয়, জানি না আমি সত্যিই তোমায় ভালোবাসি কি না। কিন্তু তোমার কথা আমার মনে হলে কেন জানি না এক অদ্ভুত অনুভূতি জাগে। সেটা যে কী রকম, তা হয়তো আমি বলে বোঝাতে পারব না। শুধু আমি কেন, পৃথিবীর সেরা সাহিত্যিক বা মনোবিজ্ঞানীরাও পারবে না সেটা ব্যাখ্যা করতে।
তুমি কি জানো, তোমার লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া মুখটি কী অপরূপ লাগে! আমি এর আগেও এ কথাটি বিশ্বাস করতাম না। কিন্তু যেদিন থেকে আমি নিজে দেখছি, তখন থেকে আর মেনে না নিয়ে পারছি না। জানো, আমি নিজের মতো করে এর এক নাম দিয়েছি ‘ভালোবাসার রেড অ্যালার্ট’। শুনে হয়তো তুমি হাসছ। তোমায় ভুলতে আমি পারব না কখনোই।
ফাহিম স্বাগত, লালমনিরহাট
এখনো ভালোবাসি
আমাদের পরিচয় হয়েছিল ফেসবুকে। কে জানত যে এই পরিচয়টুকুই আমার জীবনে ভালোবাসার স্বর্গ নামিয়ে আনবে!
এখন পর্যন্ত অনেককে ভালো লেগেছে, কিন্তু তাদের জন্য আমার মনে বিন্দুমাত্র অনুভূতি জন্মায়নি; যেটা হয়েছিল আফিফার জন্য। কখনো সামনাসামনি দেখার সৌভাগ্য হয়নি, তবে ছবিতে দেখেছি। তার কয়েকটি ছবি খুব যত্নে রেখেছি, বিধাতা যেন তাকে কোনো কিছু কম দিয়ে সৃষ্টি করেননি। তার দুটি চোখ দেখলেই আমার মনে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। সে পরি হয়ে এসেছিল আমার জীবনে। তাকে কতটা ভালোবাসি এটা বলা হয়ে ওঠেনি কখনো। ভয় হতো, যদি আমাকে সে প্রত্যাখ্যান করে।
অনেক পরে দেখলাম আমার ভাবনাটাই ঠিক। আমি তাকে আমার ভালো লাগার কথা জানিয়েছিলাম, আর সে আমাকে না করে দিয়েছিল। আমার মনে ঘোর অমানিশা নেমে আসছিল। যাক, সব ভালোবাসাই তো আর পূর্ণতা পায় না। আমি নাহয় কল্পনায় ভেসে বেড়াব। মনে মনে ভালোবাসলে তো আর নিষেধ করার কেউ নেই।
আবির রহমান, টাঙ্গাইল
আর কি হবে দেখা
সিংড়া গ্রামের একটি বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানে আপনাকে প্রথম দেখেছিলাম। আপনার নাম মিম বলে জেনেছি। নিষ্পাপ চেহারার অধিকারী আপনি। সবার আড়ালে শুধু আপনাকে দেখেছি। কেন জানি মনে হচ্ছিল আমি আপনাকে প্রথম দেখায় ভালোবেসে ফেলেছি। কিন্তু সেটা কতটুকু সত্য আমার জানা নেই। রাত হয়ে এলে আপনাকে আর দেখতে পেলাম না। আমি কিছুটা অতৃপ্তি নিয়ে আপনাদের গ্রাম ত্যাগ করলাম সেই রাতে। মনে মনে ভেবেছিলাম, আবার যদি দেখা হয়, তখন বলব, ওগো কল্যাণী, আপনাকে ভালোবাসি।
আল-আমিন, মহেশপুর সরকারি কলেজ, ঝিনাইদহ
শুভ জন্মদিন ভাই
ছোট, এবার তোর জন্মদিনে বাড়িতে না থাকার কারণে এই লেখাটি জন্মদিনের উপহার দিলাম।
পৃথিবীর বুকে মা-বাবার পরে শুধু তোর ওপরই ভরসা রাখার আত্মবিশ্বাস আছে আমার। বড় ভাই হিসেবে তোকে একটু শাসন করি বটে, কিন্তু দিন শেষে তোকেই অসম্ভব ভালোবাসি। ছোটবেলায় যখন কোনো অপরাধ করতি, তখন তোকে রাগের মাথায় অনেক মেরেছি। হয়তো অনেক রাগ, অভিমান, কষ্ট নিয়ে থাকতি তখন। দিন শেষে আবার আমারই বেশি কষ্ট হতো। পিঠাপিঠি দুই ভাই আমরা। তুই মায়ের আদরের ছেলে আর আমি বাবার আদের ছেলে। কোনো অংশে কেউই কম না। দেখতে দেখতে তুই ১৯ বছরে আর আমি ২২ বছরে পা দিলাম এই ডিসেম্বর মাসে।
জীবন কত সংক্ষিপ্ত, ভাবতেই অবাক লাগে। জীবনের কোনো ক্ষেত্রেই আমাকে ভুল বুঝিস না। আজীবন একসঙ্গে থাকার চেষ্টা করিস। জীবনের যেকোনো অংশে যেকোনো বিপদ-আপদে আমাকে পাশে পাবি।
আল-আমিন, বকশীবাজার, ঢাকা
ভালো থাকুক ভালোবাসা
নিজ হাতে তিল তিল করে গড়া ভালোবাসাও একদিন শেষ হয়ে যায়। হার মানে বাস্তবতার কাছে। আকাশের মতো বিশাল রৌদ্রময় দিনগুলোতে নেমে আসে ঘন কুয়াশাজড়ানো মেঘের দিন। তবু মেনে নিতে হয়, মানাতে বাধ্য করে সমাজ। যে সমাজে ভালোবাসার নামে চলে মিথ্যে আবেগের নাটক, সেখানে দু–চারটা হৃদয় উজাড় করা ভালোবাসার ইতি হলে কারও কিছু যায় আসে না। কিন্তু দুজনের ঠিকই অনেক কিছু যায় আসে। ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ে কষ্ট বুকে চেপে রেখে লোকদেখানো হাসিতে নিজেকে পরিবারের কাছে উপস্থাপন করলেও রাতে, একান্ত মন খারাপের দিনগুলোতে তাকে খুব মনে পড়ে। খুব ইচ্ছা করে তার কাছে ছুটে যেতে। একটু কথা বলতে কিন্তু হাজার ইচ্ছা থাকলেও সেটা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এভাবেই ভালোবাসা অস্তমিত হয়ে যায় কালের গর্ভে। এ সমাজে ভালোবাসাটাই যেন পাপ। তবু সব ভালোবাসা পূর্ণতা পাক, ভালো থাকুক ভালোবাসা।
জান্নাতুল ফেরদৌস, নাগেশ্বরী ডিগ্রি কলেজ, কুড়িগ্রাম