মনের বাক্স

মনের বাক্স

ভার্চ্যুয়াল বিদায়!

১০ মাসের বেশি সময় পার করছি আমরা করোনার অদৃশ্য উপস্থিতিতেই। বন্ধুত্ব ও আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করে চলেছে আমাদের মুঠোফোন। অস্বাভাবিক এ সময়কালে এটি যেন সার্বক্ষণিক সঙ্গী। কি কথোপকথন, কি দর্শন—সবই এতে সম্ভব। তাই করোনাকালে বেড়েছে এর ব্যবহার। জীবনযাপন হয়েছে প্রযুক্তিনির্ভর। যাপিত জীবনের সংজ্ঞাও যেন পাল্টে গেছে। ভিন্ন এ প্রেক্ষাপটে এগিয়ে এল প্রিয় সহকর্মীর অবসর গ্রহণের দিন। বলছি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের শিক্ষক নাঈমা আজমের কথা।

গত বছরের ২৮ অক্টোবর তারিখ ছিল তাঁর শেষ কর্মদিবস। সরকারি নির্দেশনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তখন চলছে ছুটি। অনলাইনে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। জুমে পাঠদান, পরীক্ষা, মিটিং–সবই হচ্ছে। তাই কী আর করা! ঠিক হলো আমরা জুমে মিলিত হব রাত আটটা নাগাদ। ওই দিন সন্ধ্যায় সহকর্মীর বাসায় পৌঁছে গেল ফুলেল শুভেচ্ছা। সঙ্গে কার্ড ও কেক। তেমন কিছুই না, সামান্য আয়োজন। আচমকা এসব আয়োজনে নাঈমা হলো আবেগে আপ্লুত।

সিক্ত নয়নে গভীর উচ্ছ্বাস প্রকাশ পেল ফোনে। আমিও আবেগপ্রবণ হলাম। ও তো আমার শুধুই সহকর্মী নয়, পরম বন্ধুও বটে। ১৯৮৫ সালে স্কুল কর্তৃপক্ষ দিবা শাখা খোলার এক মহতী উদ্যোগ নেয়, ১৯৮৬ সালের জানুয়ারিতেই শুরু হয় দিবা শাখার পথচলা।

একঝাঁক নবীন-প্রবীণ শিক্ষকের সমন্বয়ে পরিচালিত হয় সব কার্যক্রম। আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়ন করছি। দিবা শাখার শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেখে ওই স্কুলের অভিভাবক আমার পরম সুহৃদ খালেদা আপার উদ্যোগে আবেদনপত্র জমা দেওয়া। সাক্ষাৎকারের দিনই অসম্ভব রূপবতী নাঈমা আজমকে দেখলাম। চাকরি হলো, আমরা হলাম সহকর্মী, সেখান থেকে ভালো বন্ধু। এ আঙিনা থেকে তাঁর প্রস্থানে আমি ভারাক্রান্ত।

যাহোক, সিনিয়র-জুনিয়র, সাবেক ও বর্তমান শিক্ষকদের অনুভূতির প্রকাশ ঘটল প্রত্যেকের বক্তব্যে। বিদায়ী বক্তব্যে নাঈমা সবার প্রতি ভালোবাসা ব্যক্ত করল। এ আয়োজন এক অন্য রকম বিদায় সংবর্ধনার স্বাক্ষর হয়ে রইলে। বিদায় প্রিয় সহকর্মী। তোমার অবসরকালীন জীবন আরও সুন্দর হোক—এ প্রত্যাশা রইল।

মিনারুল আলম, শিক্ষক

ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজ, ঢাকা।

এক হারিয়ে ফেলা বন্ধু

তোর সঙ্গে আমার প্রথম দেখা প্রথম দিনের স্কুলে। তারপর একসঙ্গে কত খুনসুটি। তখন আমি আর তুই একই শাখায় ভর্তি হই, তাই প্রতিদিন দেখা হতো। তখন আমার বয়স হবে বড়জোর পাঁচ বা সাড়ে পাঁচ বছর। তারপরে অনেক দিন কথা হয়নি।

১০ বছর পর একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় তোকে ফেসবুকে খুঁজে পাই আমি। তারপর কত কথা। আসলে যেদিন তুই আমাকে ফোন করেছিলি, সেদিন আমার খুব মন খারাপ ছিল। তোর সঙ্গে কথা বলার পর মনটা ফুরফুরে হয়ে যায়।

তোর আর আমার কথা হতো এর মধ্যে, তবে দেখা করার সুযোগ ছিল কম। তবে আবার দেখা হয় একই কলেজে পরীক্ষা দিতে আসার সময়। আমি তোকে দেখে একবারে চিনলেও তুই আমাকে প্রথমবারে চিনতে পারিসনি। তারপর ওই দিন আমরা আরও কত গল্পে সময় পার করেছি। হঠাৎ তোর বাবার গুরুতর দুর্ঘটনা হলো। বাবা সুস্থ হলো। তারপর তুই একটা ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে গেলি। ছেলেটা একদম ভালো ছিল না। তুই মন খারাপ করে থাকতি বেশির ভাগ সময়। তারপর এল করোনা। তুই যেন কোথায় হারিয়ে গেলি।

আমাদের আর যোগাযোগ হয় না। কোথায় হারালি? তোর প্রিয় পত্রিকার মাধ্যমেই তোকে ডেকে পাঠাচ্ছি ফিরে আয় বন্ধু। তোকে যে বড় মিস করছি।

ইনশিয়াক, সাতক্ষীরা

এ কেমন হীনম্মন্যতা আমার

আমি মনেপ্রাণে চাই আমার ভালোবাসার মানুষটি ভালো থাকুক। আমি যেহেতু তাঁকে ভালো রাখার দায়িত্বটুকু পাইনি, যে পেয়েছে সে যেন ঠিকমতো দেখে রাখে, সেটাই চাই। অথচ আমি যখন শুনি, লোকটি নিজের দায়িত্বটুকু খুব যত্নের সঙ্গে পালন করছেন, তখন আমার হিংসে হয়, তাঁর কোনো সুনাম আমার সহ্য হয় না।

একদিকে চাই আমার প্রাণপ্রিয় মানুষ আনন্দে থাকুক, আবার অন্যদিকে চাই আমার চাইতে বেশি ভালোবাসা কেউ যেন তাঁকে দিতে না পারে। এ কেমন হীনম্মন্যতা আমার!

আমার কেন জানি মনে হয়, আমার চেয়ে বেশি ভালোবাসা তাঁকে কেউ দিতে পারে না।

কার্তিক চন্দ্র দাস, কুমিল্লা।

তুই আমার জীবনের ধ্রুবতারা

প্রিয় বন্ধু সাইমুন, তুই আমার জীবনের ধ্রুবতারা। ৬ জানুয়ারি প্রকাশিত অধুনাতে পড়েছিলাম ‘বন্ধু হওয়ার চাইতে কোনো বড় সম্পর্ক হতে পারে না।’ এটা সত্যি শেষ আশ্রয়স্থল।

সাইমুন, তোর সঙ্গে পরিচয়ের এই চার বছরে অনেক মান–অভিমান হয়েছে। তবে সৌভাগ্য এতে আমাদের বন্ধুত্বে কোনো ছেদ পড়েনি। তোর মতো বন্ধু পেয়ে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। আমি স্বপ্ন দেখি বেঁচে থাকার। শেষ সময় পর্যন্ত আমরা একসঙ্গে থাকব, দুজনে একে অপরের প্রাণপ্রিয় বন্ধু হয়ে থাকব।

সাইমুন তুই হারিয়ে যাবি না তো? জীবনে চলার পথে অনেক লোকের সঙ্গেই তোর বন্ধুত্ব হবে।

প্রিয় বন্ধু, প্লিজ তাদের ভিড়ে আমাকে ভুলে যাস না। তোর জীবনের কঠিন দুঃসময়গুলোতে আমাকে পাশে রাখিস।

মোহাম্মদ ইয়াসিন, ফেনী

লেখা পাঠানোর ঠিকানা

অধুনা, প্রথম আলো, প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবন, ২০–২১ কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

ই-মেইল: [email protected], ফেসবুক: facebook.com/adhuna.PA খামের ওপর ও ই-মেইলের subject–এ লিখুন ‘মনের বাক্স’