মনের বাক্স

অলংকরণ: তুলি
অলংকরণ: তুলি

হঠাৎ ওর বিয়ে হয়ে গেল
হ্যালো, কাকে চান? শুরুটা গতানুগতিকই ছিল। তারপর পরিচয় হলো। কথা শুরু, ভালো লাগল। পেয়ে গেলাম ভালোবাসাও। প্রথম কোনো মেয়ে আমাকে বলল আমি আপনাকে ভালোবাসি, আমার মনের মন্দিরে একটা সুখের নিদারুণ ঝড় বয়ে গেল। তারপর সকাল-বিকাল পেতাম অলৌকিক আদর, কখনোবা সুখের অভিমান। এমনই করে কাটছিল। দুজনের প্রেমের বাসর, হঠাৎ তার মা ও বোনের নিষেধাজ্ঞা এল। বন্ধ হয়ে গেল কথাবার্তা। বিয়ে হয়ে গেল ওর। আমি যেন ফোন না দিই, সেটিও জানাল। আজকাল কেন যেন খুব মিস করি তোমাকে।
সম্রাট, রাজশাহী।
তুই যদি এমন করিস
কেমন আছিস? জানি মোটামুটি। এর বেশি ভালো থাকা তোর পক্ষে সম্ভব নয়। আর আমি? খুবই অসুস্থ। তোকে জানিয়েছিলাম। তুই তো আর খোঁজ নিলি না। কয়েক দিন আগে বাড়িতে গিয়েছিলাম। তুই তো জানিস, বাড়িতে গেলে তোকে একটু বেশি মিস করি। ফোন দিলাম, ধরলি না। পরেও ফোন দিলি না। ভীষণ খারাপ লাগে। তুই তো এমন ছিলি না, কেমনে এমন হইলি? তোকে কত ফোন দিতাম, তুইও দিতি। আর এখন? ভাবতেই পারি না, কীভাবে সম্ভব? দশটা না, পাঁচটা না একটা মাত্র বন্ধু আমার! তুই যদি এমন করিস, কেমন লাগে? কয়েকটা দিন যে কীভাবে কাটছে, বলে বোঝানো যাবে না। কত কথা জমা আছে রে। তোর সঙ্গেই আমি সবকিছু শেয়ার করি। যখন মিষ্টি খাই, তখন তোর কথা মনে পড়ে, কেন জানিস? আমার আগের বন্ধুকে ফেরত চাইছিলাম। কই, দিলি না তো? আমার বাচনভঙ্গি মনে হয় ভালো না, এ জন্য কথা বলতে ইচ্ছে করে না। ঠিক আছে, আর বিরক্ত করব না। ভালো থাকিস। আমাকে মাফ করে দিস। তোর অবহেলাগুলো দিন দিন অসহনীয় হয়ে উঠছে। ঘৃণায় পরিণত হচ্ছে।
ইব্রাহিম
কুমিল্লা
তোমাকে হারানোর ভয়
জীবনে প্রথম প্রেমে পড়া তোমার সঙ্গে। সেই থেকে তুমি আমার জুলিয়েট। চেয়েছিলাম রানীহীন রাজা হয়ে থাকব। কিন্তু হতে দিলে না। কখন যে মনে জায়গা করে নিলে, বুঝতেও দিলে না। ভালোবাসার ভাগ নিয়ে বসলে আমার আপনজন হয়ে। তোমার সঙ্গে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত আমার কাছে নতুন রঙে ধরা দেয়। তোমার মনে আছে? তোমার সঙ্গে যেদিন প্রথম হেঁটেছিলাম। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে যেদিন একসঙ্গে ঘুরলাম? আমি যত দিন বেঁচে আছি, ভুলতে পারব না। জানো, তোমার ফোনকলটার অপেক্ষায় সারা দিন হাতে ফোন রাখি? শুধু মনে হয়, এই বুঝি তোমার ফোন এল! তোমার কণ্ঠ কানে এলে তবেই যেন সব ঠিক। অনেক কিছু বলতে ইচ্ছে করে তোমায়, কিন্তু কিচ্ছু বলতে পারি না। প্রথম প্রেমের অনুভূতিগুলো বুঝি এমনই হয়। তোমায় বড় বেশি ভালোবেসে ফেলেছি বলেই হয়তো কোনো দিন ভুলতে পারব না। তাই মনে হয় তুমি আমায় ছেড়ে চলে যাবে, সেটা আমার পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তোমাকে আমার কাছ থেকে কোনো দিন যেতে দেব না। তোমাকে হারানোর ভয়টা আমার সব সময়ই ছিল। তাই এখনো বলছি, তুমি পারবে আমি জানি...হেরে যেয়ো না। তোমায় সারা জীবন উৎসর্গ করে ভালোবাসতে চাই, শুধু একটি সুযোগ করে দাও। একটি...

ইতি
তোমারই রোমিও

অলংকরণ: তুলি
অলংকরণ: তুলি

ভাই ওকে ভালো রাখবেন
সবে স্কুল পাসের পর কলেজে ভর্তি হয়েছি। সবই নতুন, শুধু স্কুলের বন্ধুগুলো বাদে। প্রথম প্রথম কলেজে যেতে ভালোই লাগত। এরই মাঝে আকস্মিক এক দিন একটা মেয়ে চোখে পড়ল। কেমন চেনা চেনা লাগে। পরে জানতে পারলাম, মেয়েটির সঙ্গে নাকি ছোটবেলায় একসঙ্গে কোচিং করেছি। প্রথম দেখাতেই একদম প্রেমে পড়ে না গেলেও আমাকে স্বীকার করতে হবে যে আমি চোখ ফেরাতে পারছিলাম না। যাহোক, এরপর কলেজে যেই কদিনই গিয়েছি, বেশ কয়েকবার এদিক-সেদিক খোঁজ করতাম, যদি একপলক দেখা যায়! হাতে গোনা দুই-তিনবারের বেশি চোখে পড়েনি। কয়েক সেকেন্ডের জন্য হলেও ভালো লাগত। আরও ভালো লাগল যখন দেখি জীববিজ্ঞান ও ইংরেজির শিক্ষকের কাছে পড়তে এসেছে মেয়েটি। সত্যি, খুব অল্প কয়েক মুহূর্তের জন্য দেখতাম, তারপরও ভালো লাগত। কী সুন্দর করে ধীর ধীরে কথা বলত মেয়েটা। এভাবেই দেখতে দেখতে পরীক্ষার সময় চলে এল। ফলাফলও বের হলো। অনেক চেষ্টা করে একবারের জন্যও দেখতে পারিনি। শুধু জানতে পেরেছি, ঢাকার ভালো একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে শুধু খোঁজ নিয়েছি ভালো আছে কি না, কারণ দেখার তো সুযোগ নেই। ভালো আছে শুনেছি, কিন্তু দেখা আর মেলেনি।
যাহোক, কিছু দিন আগের খবর। মেয়েটির বিয়ে ঠিক হয়েছে। পাত্র তারই পছন্দের। শোনা ছাড়া আমার কিছু করার ছিল না। আসলে কখনো তাকে বলাই হয়নি, বলার সুযোগ হয়নি কিংবা বলার পরিস্থিতিই ছিল না। বলে না সাধ আর সাধ্যের মধ্যে তফাত আছে। দোয়া করি মেয়ে তুমি অনেক ভালো থাকো, অনেক সুখে থাকো। তোমাকে সুখী দেখলে সত্যি বলছি, আমার অনেক ভালো লাগবে, একটুও কষ্ট হবে না। আর ভাইয়ের উদ্দেশে বলতে চাই, ভালো থাকবেন আপনারা দুজন আর মেয়েটিকে ভালো রাখবেন। আমি কিন্তু কথা নিলাম আপনার কাছ থেকে!
রহমান (ছদ্মনাম)
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

বোকা মা!
পৃথিবীর সবচেয়ে বোকা মানুষ আমার মা। এই তো দেখতে দেখতে পার হয়ে গেল আটটি বছর, আমার বাবা মারা গেছেন। তখন ছিলাম অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। ছোট ভাই ছিল সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। বাবা মারা যাওয়ার পর এই মমতাময়ী মা আমাদের আগলে রেখে ছিলেন তাঁর নিরাপদ আশ্রয়স্থানে, অফুরন্ত ভালোবাসা দিয়ে; বুঝতে দেননি কখনো বাবার অনুপস্থিতি। নিজে না খেয়ে আমাদের মুখে তুলে দিয়েছেন খাবার, নিজের চিকিৎসা না করিয়ে অস্থির হয়ে যেতেন আমাদের জন্য। একটু অসুস্থ হলে পাগল হয়ে যেতেন। নিজের জন্য ভালো পোশাক না নিয়ে আমাদের জন্যই ছিল তাঁর আয়োজন। কেন পারতেন না এ মানুষটা আমাদের চেয়ে ভালো থাকতে! হয়তো নিজের সুখ বিসর্জন দিয়েছেন।
আম্মু, ভালোবাসি তোমাকে অনেক বেশি, এ কথা হয়তো বলা হয় না তোমাকে, আজ বললাম সবার সামনে।
শরিফুল ইসলাম
ফেনী


মনের বাক্স

প্রিয় পাঠক
আপনার মনের না-বলা যেকোনো কথা বা স্বীকারোক্তি বলে ফেলুন অধুনার
‘মনের বাক্স’ বিভাগে। ফেসবুক, ই-মেইল বা চিঠি লিখে জানাতে পারেন মনের কথা।

লেখা পাঠানোর ঠিকানা:
অধুনা, প্রথম আলো, সিএ ভবন, ১০০ কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫। ই-মেইল: adhuna@prothom-alo.info ফেসবুক: facebook.com/adhuna.PA খামের ওপর ও ই-মেইলের subject-এ লিখুন ‘মনের বাক্স’