মনের বাক্স

জানি তোমরা অনেক কষ্টে আছ

প্রিয় বাবা,

কেমন আছ তোমরা? আমি জানি তোমরা অনেক কষ্টে আছ। কিন্তু আমি যে সন্তান হয়ে তোমাদের দুঃখ-কষ্টের ভারগুলো ভাগাভাগি করে নিতে পারছি না, তার জন্য আমাকে মাশুল দেওয়ার পাত্র বানিয়োনা। মা, তুমি তো একবার বলেছিলে, আমার ছেলে কলমে কথা বলবে। সেদিন থেকে আমি আমার জীবনের সব ব্যর্থতাকে একত্র করে সেখান থেকে শক্তি সঞ্চয় করতে শিখেছি। তাই উচ্চশিক্ষার জন্য শহরে চলে এসেছি। পড়ালেখার খরচগুলো আমাকে প্রতিনিয়ত ছাত্রজীবনের ইতি টানার জন্য প্ররোচিত করছে। আসলে আমার জীবনটা যুদ্ধ আর প্রতিযোগিতায় ঘেরা। জীবন বাঁচাতে যুদ্ধ করতে হচ্ছে আর ক্যারিয়ার গড়তে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে। তাই তোমাদের খোঁজখবর নিতে পারছি না। আসলে আমি অনেক কষ্টে আছি। আমার জন্য দোয়া করিও। জানি না কবে কখন তোমাদের দেখা পাব। মা! আমি মানুষ হওয়ার আগে তোমরা আমায় ছেড়ে যেও না। আমি মানুষ হলে বড় ভাইদের বুঝিয়ে দেব যে টাকাপয়সা আসলে কিছুই নয়, ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আর বৃদ্ধ মা-বাবার দেখাশোনাই হলো জীবনের বড় সাফল্য। আমি জানি মা! তাদের খাবারের উচ্ছিষ্টগুলোও তোমাদের ক্ষুধা মেটাতে অনিচ্ছুক। বাবা প্লিজ, আমাকে তাদের মতো ভেবো না। ভালো থেকো।

ইতি

তোমাদের কনিষ্ঠ সন্তান

মুহাম্মদ মুনাজ্জিল মুনতাসির

পেকুয়া, কক্সবাজার

.
.

ফিরে এসো
রূপকথার ঠিক গল্পের মতো তুমি এসেছিলে আমার জীবনে। সুখ-দুঃখে একই সঙ্গে পথচলার কথা দিয়েছিলে। কিন্তু জীবন আর বাস্তবতা বড়ই কঠিন। অভাব যেখানে বাসা বাঁধে, ভালোবাসা সেখানে জানালা দিয়ে পালায়। মিথ্যা মরীচিকায় আশায় আর স্বার্থের টানে সবই ভুলে গেলে। পর করে দিলে আমায়। শত আঘাত আর কষ্টের মাঝে তোমার এক টুকরো হাসি আমার কাছে অনেক দামি। জীবনে প্রকৃত ভালোবাসা কভু ভোলা যায় না। তুমি রবে চিরকাল আমার মনের মাঝে। তাই তো বারবার এই মন শুধু তোমারই নাম জপে।
ফিরে এসো, দেখো, আমি আজও তোমারই পথপানে চেয়ে বেঁচে আছি, থাকব আজীবন...

মো. নূর ই আলম শেখ
পলাশতলা, জামালপুর

হঠা‍‌ৎই মনে পড়ে গেল

বিদায়ী তুমি,

হৃদয়ের মাঝে জমে থাকা তুমি থেকে আজ হঠা‍‌ৎই মনে পড়ে গেল প্রথম বিকেলের কথা। হাজারো হৃৎকম্পনে নার্ভাস আমি নীরবতাকে জয় করে বলেছিলাম, ভালোবাসি তোমাকে। কিন্তু তুমি মিষ্টি হাসিতে চলে গেলে আজও আমি তার অর্থ বুঝিনি। ঠিক আজও তুমি চলে যাচ্ছ। পার্থক্য শুধু এতটুকুই, আজ যাওয়ার বেলায় তুমি একবারও পেছন ফিরে তাকাওনি। পেছনে দাঁড়িয়ে আমি একা...। আবেগপ্রবণ আমি থমকে গেছি। কিছুক্ষণ আগে তোমার বলা কথাগুলো হয়তো কখনো ভোলা যাবে না। বিদায়ী তোমার শেষ স্পর্শ যেন কোনো শিহরণই জাগাতে পারেনি আমার মনে। শুধুই মনে হচ্ছে এ আমার বিসর্জন, যার মাঝে হয়তো তুমি অর্জন করতে পেরেছ অনেক কিছুই। মাঝে কেটে গেছে অনেকটা বছর, অনেক কথা; যার শেষ লাইনটা আজ এসে ঠেকেছে শুধুই ছোট্ট একটা ‘বিদায়’ শব্দে। আর কখনো হয়তো নিয়ম করে দেখা হবে না আমাদের। অনিয়মের দেখায় যেন হাজার বছরের অপরিচিত কোনো এক যুবক আমি তোমারই কাছে। তবু বলব, আজ বেলা শেষে তোমার ঘরে ফেরা যেন চিরসুখের হয়।

ইতি

অভিজিৎ কর্মকার

সখীপুর, টাঙ্গাইল।

এখন আমি কী করব?

ছোটবেলায় প্রথম তোমাকে ভালো লেগেছিল বলে আজ ১৭ বছর পরেও তোমাকে খুঁজি। এর আগে তোমাকে রংপুর শহরে খুঁজে বের করার চেষ্টায় বেশ কিছু পাগলামিও করেছি। ফেসবুকের অনেক গ্রুপে এই ছবিটি আপলোডও করেছি।

গ্রামের গঞ্জের সেই কিন্ডারগার্টেন স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার পর সেই ক্লাসেই ভালো লেগে যায় তোমায়। সেখানে পড়াশোনা করা সম্ভব হয়নি আমার। ফিরে এসে গ্রামের প্রাইমারিতে আবার পড়াশোনা শুরু করি। তাই আর এগোতে পারিনি। সেদিন আমি অনুভব করেছিলাম কত ছোট আমি!

সেদিনের সেই ছোট্ট আমি আজ কপিরাইটধারী লেখক। ‘খেলাঘর-২’ নামের আমার একটি রোমান্টিক চিত্রনাট্য আছে, যাতে আমি নায়িকা চরিত্রের নামটি তোমার নামই দিয়েছি। সেই চিত্রনাট্য থেকে ছবি বানানোর স্বপ্ন হয়তো এখন আমার কল্পনা মাত্র। কিন্তু আমার প্রতিষ্ঠিত ‘লাইফবোট’ নামের অনলাইন ম্যাগাজিনটি আমি তোমাকেই উৎসর্গ করেছি।

আমার ভালোবাসা প্রকাশের পদ্ধতিটা একটু ভিন্ন।

তুমি কি ফিরে আসবে আমার কাছে?

মেহেদী হাসান

বেরোবি, রংপুর।

.
.

কী অদ্ভুত জীবন
জীবনে কিছু জিনিস থাকে, যা একবার হারালে তা আর কোনো কিছুর বিনিময়ে ফিরে পাওয়া সম্ভব হয় না। যা হারানোর কথা আমি এখন ভাবছি, যা হারানোর ভয়ে এখন আমি স্তম্ভিত! আমি জানতাম না, তা আমার কোনো দিনই ছিল না। ভাবতেই পারি না যেটা নিয়ে আমি এতগুলো দিন পার করলাম, যার আশাই পথ চেয়ে বসে ছিলাম, যে আসবে বলে মন সাজালাম, যার উৎসাহে মন রাঙালাম, সে কখনো কোনো দিন আমার ছিল না। কোনো দিন হবেও না! সৃষ্টিকর্তার কাছে আমার প্রশ্ন, ওকে আমার করে দিলে না কেন? তুমি যখন দেবে না বলে ঠিক করেই রেখেছিলে, তবে কেন তার প্রতি এত অধিকারবোধ সৃষ্টি করালে? কেন তার প্রতি আমার মনে এত ভালোবাসা জন্মাতে দিলে? কেন তাকে আমার বেঁচে থাকার মানদণ্ড হিসেবে সৃষ্টি করলে? তুমি কেন তাকে এক পথে আর আমাকে অন্য পথে হাঁটাচ্ছ, তা তুমিই ভালো জানো!

নাসরিন

তুমি কি ফিরে আসবে আমার কাছে?

তুমি কি বুঝতে পারো না এক বছর ধরে আমি তোমাকে একটা কিছু বলতে চেষ্টা করছি। হয়তো এত দিনে সুযোগ করে বলেও ফেলতাম, কিন্তু ভার্সিটিতে পড়ি বলে তোমার মতো বেশি সময় গ্রামে থাকতে পারি না। তাই বাসায় গেলেই খুঁজে দেখি তুমিও সেই সময় বাসায় গেছ কি না। সর্বশেষ সুযোগ করে সেদিন তোমার বাসার সামনে গিয়ে উঠানেই তোমায় পেয়ে গেলাম, কিন্তু তুমি একটু বাড়িতে ঢুকে বসতেও বললে না; কয়েকজনের সামনে রাস্তা থেকেই কথা বলে বিদায় করে দিলে।

নামপ্রকাশেঅনিচ্ছুক

তোমাকে খুঁজেছি কত বৈশাখী মেলাতে...

কোনো এক বৈশাখী মেলায় তাকে দেখেছিলাম। মনে পড়ে, আমার বন্ধু লিটন আর আমি পৌর উদ্যানে মেলা দেখতে গিয়েছিলাম। বনলতার মতো চোখ দিয়ে একটি মেয়ে বারবার আমার দিকে তাকাচ্ছিল। আমি ঝালমুড়ি খেতে খেতে তোমাকেও দেখছিলাম লুকিয়ে লুকিয়ে। কী দুঃসাহস মেয়েটির, আমার পাশে দাঁড়িয়ে ঝালমুড়ি অর্ডার করল। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো কথা বলা হলো না। তারপর মেয়েটি এত লোকের ভিড়ে কোথায় যেন হারিয়ে গেল! তারপর থেকে যতবারই পৌর উদ্যানে গিয়েছি, ততবার মেয়েটির মুখ ভেসে উঠেছে মনের আয়নায়। আর কি কোনো দিন দেখা হবে না?

 হাবিব

টাঈাইল

মনের বাক্স

প্রিয় পাঠক

আপনার মনের না-বলা যেকোনো কথা বা স্বীকারোক্তি বলে ফেলুন অধুনার

‘মনের বাক্স’ বিভাগে। ফেসবুক, ই-মেইল বা চিঠি লিখে জানাতে পারেন মনের কথা।

লেখা পাঠানোর ঠিকানা:

অধুনা, প্রথম আলো, সিএ ভবন, ১০০ কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫। ই-মেইল: [email protected] ফেসবুক: facebook.com/adhuna.PA খামের ওপর ও ই-মেইলের subject-এ লিখুন ‘মনের বাক্স’