মনের বাক্স

আমাদের বন্ধুত্বটাই অন্য রকম
তুই মনে হয় অনেক ভালো আছিস? ও, তোরে তো তুই বলে ডাকতাম না। কিন্তু তুই করে ডাকতেই বেশি ভালো লাগবে। আমাদের বন্ধুত্বটাই অন্য রকম। সবার থেকে ভিন্ন, আলাদা। বন্ধুত্বটাও হয়েছিল খানিকটা উদ্ভটভাবে। তুই আমার চেয়ে অনেক বড় ছিলি। তুই বলেছিলি, ‘মতলব কী?’ আমি বলেছিলাম, ‘বন্ধুত্ব করতে আমার মতলব লাগে?’ হয়ে যায় আমাদের বন্ধুত্ব। জানিস, তুই এখানে যত দিন ছিলি আমার সময়গুলো খুব ভালোই কেটেছিল। আর এখন তোকে মিস করি। বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচের দিন, তুই আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলি, কিন্তু আমি কেন জানি তোর সঙ্গে কথা বলিনি। সত্যি অসময়ে, অবসরে তোর কথা খুব বেশি মনে পড়ে। আমার কথা তোর মনে পড়ে? আমাকে তুই নাহিম বলে ডাকতিস। আর আমাদের চাটগাঁইয়া কথা নিয়ে তোর-আমার ঝগড়াটা বেশ জমত। আর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলাটাকে খুব বেশি মিস করি। এখন সব স্মৃতি। তোর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারি না। খুব কষ্ট হয়। তুই এখানে কখন আসবি? জানিস, তোর চেহারাটাও এখন ঝাপসা হয়ে আসে। তবুও তোকে খুব বেশি মনে পড়ে।
নাঈম
পটিয়া সরকারি কলেজ
তুমি কি কিছুই বোঝো না?
বার্ষিক পরীক্ষার সময় আমার সিট থেকে উঠে তোমার কাছাকাছি গিয়ে বসেছিলাম। কেন বসেছিলাম, তা কি তুমি একবারও ভেবে দেখেছ? প্রতিটি ক্লাসে তোমার যত কাছে বসা সম্ভব সেখানেই বসি। কেন একবারও তা ভেবে দেখলে না? কারণ, তোমায় একটু ভালো করে দেখব বলে। তুমি কি কোনো দিনই খেয়াল করোনি যে আমি সব ভুলে শুধু তোমার দিকে তাকিয়ে আছি? তোমার দিকে তাকিয়ে আমার মুচকি হাসিগুলোর কি কোনোই অর্থ নেই তোমার কাছে? তাই আজ শুধু একটাই প্রশ্ন তোমার কাছে, ‘তুমি কি কিছুই বোঝো না?’
সায়হাম মাহবুব
বাকেরগঞ্জ।
তোমার তুলনা তুমিই
একটা মানুষের হাসি কত বেশি সুন্দর হতে পারে, হাসি কতটা শৈল্পিক, কতটা সৌন্দর্য, কতটা মায়া, কতটা ভালোবাসা লুকিয়ে থাকতে পারে, তা তোমাকে না দেখলে বুঝতাম না। আর সব ছন্দ, উপমা ব্যর্থ হয়ে যায় তোমার ঘন কালো লম্বা চুলের কাছে। তোমার তুলনা তুমি নিজেই।
সম্রাট হাসান
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।
দেখো মা, আমি একদিন ঠিক বড় মানুষ হব
রাত আনুমানিক তিনটা বাজে। বুকের বাঁ পাশে অসহ্য চিনচিন ব্যথায় ঘুম ভেঙে গেল। ঝাপসা ঝাপসা চোখে দেখি জানালা দিয়ে চাঁদের আলো এসে আমার মুখে পড়ছে। বিছানা ছেড়ে উঠতে চাইলাম পারলাম না। মাথাটা খুব ব্যথা করছে। হয়তো জ্বর এসেছে। সঠিকভাবে বুঝতে পারলাম না। বিছানার এপাশ-ওপাশ করতেই বাঁ হাতের আঙুল দিয়ে মোবাইল স্ক্রিনে চাপ পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে তোমার সুন্দর মুখখানার ছবি ভেসে উঠল। ছবির সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বললাম। চোখের কোণে অশ্রু এসে ভিড় জমাল। মা তোমার কথা মনে পড়লে আমার খুব কান্না পায়।
সেই কবে গ্রাম ছেড়ে, তোমাকে ছেড়ে, শহরে এসেছি। কত দিন হলো দেখি না মা তোমাকে। আগস্ট মাস শেষে টিউশনি থেকে কিছু টাকা পাব। সেই টাকা দিয়ে তোমার জন্য একটি শাড়ি কিনব। এক জোড়া জুতা কিনব। সেই জুতা পরো তুমি স্কুলে ক্লাস নিতে যাবে। তখন তোমাকে আর কেউ বলতে পারবে না তুমি ছেঁড়া জুতা পরে স্কুলে যাও। দেখো মা, আমি একদিন ঠিক বড় মানুষ হব। তখন তোমাকে নিয়ে এই ব্যস্ত নগরীতে ঘুরব। তুমি আমার মুখে দিকে তাকিয়ে হেসে বলবে, এত বড় শহরে, তোর ভয় করে না বাবা! আমি ততক্ষণে তোমার আদরের হাতগুলো ধরে বলব, আমার সোনার মতো মা থাকতে ভয় কিসের! সকালের আলো ফুটতে শুরু করেছে। আজ রাখি মা। তুমি ভালো থেকো।
বাদশা বাপ্পী
মোহাম্মদপুর, ঢাকা
জীবনের বাঁক
জীবন কখনো হয় সুখের স্বর্গ, কখনোবা নরকের মতো বিষাদ যন্ত্রণাময়। জীবন চলার মাঝে কত কিছুই পাই আবার কত কিছুই হারাই জ্ঞাত-অজ্ঞাতসারে। পাওয়া না–পাওয়ার হিসাব কষতে কষতে জীবন একসময় তার গতি হারিয়ে স্তব্ধ হয়ে যায়। আমাদের জীবনে নানামুখী কল্পনায় কত স্বপ্ন, কত আকাঙ্ক্ষা থাকে। জীবনের সব স্বপ্নই বাস্তবে সব সময় মনের দরজায় এসে উঁকি মারে না। এর মধ্যেও কিছু স্বপ্ন, কিছু আকাঙ্ক্ষার বস্তু থাকে, যা দূর আকাশের ওই চাঁদের মতো দূর থেকে দ্যুতি ছড়ায়, কাছে টানে কিন্তু ধরা দেয় না।
জীবনের বাঁকে কত মানুষের সঙ্গে পরিচয় ঘটে, তাদের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো স্মৃতিপটে জীবন্ত থাকে। তেমনি কিছু আরাধ্য স্বপ্নের মতো দূর আকাশের দ্যুতিময় চাঁদের মতো কিছু মানুষের সংস্পর্শ মনের গভীর থেকে মানুষকে কাছে টানে। যাকে ছাড়া জীবনের মুহূর্তগুলো অসম্পূর্ণ মনে হয়। যদি সেই প্রিয় মানুষটিকে বাস্তব জীবনের অনুভূতির মধ্যে খুঁজে না পাওয়া যায়, তখন জীবনের সুখের মুহূর্তগুলোর নানা অনুভূতিও হয়ে দাঁড়ায় খুব যত্নে লালিত খাঁচায় বন্দী পাখির মতো, যে সব পেয়েও মুক্তির সুখ থেকে বঞ্চিত। আর সেটাই পরম যত্নে লালিত পাখির জীবনে চরম না পাওয়ার বেদনা।
দূর থেকে দ্যুতি ছড়ানো না পাওয়া সেই আরাধ্য মানুষটি তুমি। আর যাকে না পাওয়ার বেদনায় আমার জীবন পরম দুঃখের নদীতে বাঁক নিয়েছে।
মো. রাকিব আহমেদ
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।
তোমার রং
আমার মনটা যদি হয় একটি ক্যানভাস, তবে তুমি হলে রংতুলি। রং ছাড়া একটি সাদাকালো ছবি যেমন পরিপূর্ণতা পায় না, তুমি ছাড়া তেমনি আমিও অপূর্ণ। রংতুলি দিয়ে একজন শিল্পী যেভাবে তাঁর ক্যানভাস রাঙিয়ে তোলেন, আমিও ঠিক তেমনি তোমার রং দিয়ে আমার হৃদয়টা রাঙিয়েছি। তুমি চাও বা না–ই চাও, আজ যেমন তুমি আমাকে রাঙালে, ঠিক তেমনিভাবে সারা জীবনই আমাকে রাঙাবে। হয়তো আমার কাছে থেকে নয়, অনেক দূর থেকে। তুমি হয়তো কখনো জানতে পারবে না, একটা ছেলে তোমায় কতটা ভালোবেসেছিল।
সায়হাম মাহবুব
বাকেরগঞ্জ সরকারি কলেজ, বরিশাল।
খুব মনে পড়ে
বন্ধু, তোমাকে আজও খুঁজে বেড়াই। কোথায় আছ! কেমন আছ? বড্ড জানতে ইচ্ছে করে। জীবন চলার পথে কোনো এক সময় তোমার সঙ্গে আমার হয়েছিল দেখা। খুব মনে পড়ে, কটিয়াদী বাজারে ছন্নছাড়া হয়ে ঘুরছিলাম। সেই সময় তুমি ছিলে আমার কাছে এক অচেনা মানুষ। শত শত মানুষের ভিড়ে তোমার সঙ্গে আমার হয়েছিল কথা। তুমি আমাকে পথ দেখিয়েছিলে। সেই দুর্দিনে তুমিই দাঁড়িয়েছিলে আমার পাশে। টানা সতেরো দিন তোমার সঙ্গে ছিলাম। খুব ভালো ছিলাম। সুখে–দুঃখে দুজনে কত কথাই না হতো। সেই সতেরো দিনে তোমার সঙ্গে আমার কত স্মৃতি রয়ে গেছে। জানি না তুমি কেমন আছ? যেখানে থাকো, ভালো থাকো তুমি। ভালো থাকুক তোমার চারপাশ। পাঁচ বছর পরও ভুলতে পারিনি তোমাকে। তোমার থাকা সেই সতেরো দিনের কথা।
এম. মোবারক হোসেন
লেখা পাঠানোর ঠিকানা
অধুনা, প্রথম আলো, সিএ ভবন, ১০০ কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫। ই-মেইল: [email protected] ফেসবুক: facebook.com/adhuna.PA.
খামের ওপর ও ই-মেইলের subject-এ লিখুন ‘মনের বাক্স’