আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে প্রথম যেদিন সন্তানের আকার দেখলাম, আত্মা প্রশান্ত হয়ে গেল। ভালোবাসা আরও বেড়ে গেল। প্রথম যখন ওর নড়াচড়া অনুভব করলাম, মনে হলো এ যেন এক নতুন আমি। পুরোই বদলে যেতে লাগল আমার পৃথিবী। সব সময় কথা বলতাম অনাগত সন্তানের সঙ্গে। মাঝেমধ্যে সে নড়াচড়া করে মায়ের কথায় সাড়া দিত।
হঠাৎ করে পেটের মধ্যে লাথি মারত, ধাক্কা দিত। কখনো ভাবতে পারিনি মা হওয়া এতটা সুখের। আবার হরমোনের পরিবর্তনের কারণে অকারণে হাসতাম, ছোট্ট ছোট্ট কথায়ও কান্নাকাটি করতাম, অযথা রেগে যেতাম। এ সময়ে আমার ভেতরে যে মানসিক ও শারীরিক পরিবর্তন এসেছিল, সেটা দারুণভাবে সামলে নিয়েছিল নাছের। মা হওয়ার পুরোটা সময় আমাকে সঙ্গ দিয়েছে, আমার যত্ন নিয়েছে। বিশেষ এ সময়ে স্বামীকে যেন নতুন করে চিনলাম। দুজনের মিলে অপেক্ষা করেছি কবে সন্তানের মুখ দেখব।
অবশেষে সেই সুন্দর মুহূর্ত যখন এল, সব কষ্ট ভুলে গেলাম। ছোট্ট মানুষটাকে দেখে চোখ ভরে গেল। সন্তানের জন্মের পর মনে হলো জীবনের সেরা উপহার পেয়েছি। মনে হয়েছে আর কিছুই চাওয়া পাওয়ার নেই।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সবার আগে আমার নিজের মায়ের একটি কথা মনে পড়ল, তিনি সব সময় বলতেন, ‘মা হও, বুঝতে পারবে।’ এখন বুঝি, মা আমাদের জন্য কতই-না কষ্ট করেছেন। এখন মনে হচ্ছে, মা হওয়া আসলেই এত সহজ না। অনেক ধৈর্য অনেক ত্যাগের বিনিময়েই মা হওয়া যায়। পৃথিবীর সব মাকে তাই আজ আমার সালাম, সব মাকে শ্রদ্ধা।
লেখক: নৃত্য ও অভিনয়শিল্পী