যেসব কারণে গরু এমন করে
কোরবানির হাট থেকে গরু বাসায় এনেছেন, অথচ পথে গরু নিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হননি, এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া কঠিন। সেসব বিড়ম্বনা, কারণ ও প্রতিকার তুলে ধরার চেষ্টা করেছে রস+আলো।

যা করে: ঢুস বা গুঁতা দেওয়া
কারণ: সারা দিন রোদের মধ্যে হাটে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আবার বিক্রি হওয়ার পর ধুলা-বালিময় রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে এমনিতেই গরুর মাথা থাকে হট। তার ওপর কেউ কেউ আদরের নামে গরুর গায়ে-মাথায় হাত বোলাতে থাকে। এতে করে গরুর কাতুকুতু লাগে। তাই ঠিক তখনই মাথা হট হয়ে থাকা গরুটি ঢুস বা গুঁতা মেরে আদরকারীকে অনাদর করার চেষ্টা করে বসে।
প্রতিকার: আদরের নামে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে গরুকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলা থেকে বিরত থাকুন।

যা করে: আচমকা পথে দাঁড়িয়ে পড়া
কারণ: পথিমধ্যে ট্রাফিক সিগন্যাল দেখে গরু দাঁড়িয়ে পড়তে পারে। কেননা, গরুসমাজে ট্রাফিক আইন মেনে চলার ওপর কঠোর আইন প্রচলিত আছে। তা ছাড়া রাস্তাঘাট যদি চলাচলের অনুপযুক্ত হয় (কবিগুরুর ‘ছোটনদী’র মতো হাঁটুজল থাকে), তাহলেও গরু দাঁড়িয়ে পড়তে পারে।
প্রতিকার: নিজে ট্রাফিক আইন মেনে চলুন এবং গরুকেও মানতে সহযোগিতা করুন। অন্যদিকে যেহেতু স্থলপথ চলাচলের অনুপযুক্ত, সুতরাং আকাশপথ ব্যবহার করা যায় কি না, তা ভেবে দেখতে পারেন।

যা করে: পথে দাঁড়িয়ে পড়া
কারণ: দ্রুত হাঁটানোর জন্য ইচ্ছার বিরুদ্ধে গলার দড়ি ধরে টানাটানি করলে গরু বিনা নোটিশে পথের মধ্য দাঁড়িয়ে যাবে। আবার অনেকে অযাচিত ক্ষমতা প্রয়োগ করতে গিয়ে গরুর গলার সঙ্গে পায়েও দড়ি লাগান। এতে গরু ভয়ংকর অপমানিতবোধ করে। এর ফলে গরু অভিমান করে পথিমধ্যে দাঁড়িয়ে পড়তে বাধ্য হয়।
প্রতিকার: গরুকে স্বাধীনভাবে চলতে দিন। প্রয়োজনে গরুর গলা ও পায়ের দড়ি খুলে দেওয়া যায়।

যা করে: হাম্বা হাম্বা বলে ডাকাডাকি করা
কারণ: পথে যেতে যেতে হঠাৎ পথের অপর পাশ থেকে আসা গরুটিকে দেখে ছোটবেলার হাটে হারিয়ে যাওয়া ছোট ভাই মনে হলে গরুরা হাম্বা হাম্বা বলে ডেকে ওঠে। অনেক সময় সাবেক প্রেমিকাকে দেখেও অনেক গরু হাম্বা হাম্বা বলে ডাকাডাকি করে নিজেদের আবেগ প্রকাশ করে।
প্রতিকার: হাট থেকে বাসায় আনার পথে গরুকে টিনের চশমা পরিয়ে আনুন, অনাকাঙ্ক্ষিত আবেগ থেকে আপনার গরুটিকে মুক্ত রাখুন।

যা করে: আচমকা ছুট দেওয়া
কারণ: মানুষের মতো গরুদেরও ‘ক্রাশ খাওয়া’ বলে একটা ব্যাপার আছে। তারাও বিপরীত লিঙ্গের ওপর ক্রাশ খায়। এর ফলে পথে কোনো রূপবতী গরু দেখে ক্রাশ খেলে তারাও সেই গরুর চোখে নিজেদের সর্বনাশ দেখে এবং দ্রুত নিজের হৃদয়ের কথাটা অপরজনকে জানাতে দড়ি ছিঁড়ে ক্রাশের কাছে ছুটে যায়।
প্রতিকার: সিনেমার চৌধুরী সাহেবের মতো নির্দয় হবেন না! গরুকে তার ক্রাশের কাছে যাওয়ার সুযোগ করে দিন।

যা করে: পা/লেজ দিয়ে আঘাত করা
কারণ: গরুর দড়ি হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকে আবেগের বশে গরুকে খরগোশ ভেবে বসেন। তাঁরা ভাবেন, গরুর লেজ ধরে টানাটানি করলেই গরু খরগোশের মতো লাফিয়ে লাফিয়ে চলবে। যেটা একটি গরুর ব্যক্তিত্বে প্রবলভাবে আঘাত হানে। তাই গরু লেজ কিংবা পা দিয়ে আঘাত করে আবেগতাড়িত ব্যক্তিকে আবেগে কাঁদিয়ে ফেলার চেষ্টা করে।
প্রতিকার: মানুষকে অমানুষ ভাবলেও গরুকে গরুই ভাবুন। গরুকে অন্য প্রাণী ভেবে নিজের প্রত্যাশা তার ওপর জোর করে চাপিয়ে দিতে যাবেন না।