রস‍+আঠারো = রসাঠারো

প্রথম আলোর ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ২৫ নভেম্বর রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে দিনভর অনুষ্ঠিত হয় পাঠক উৎসব। এবারের উৎসবের নাম ছিল ‘এসো আঠারোয়’। বরাবরের মতো এবারও রস‍+আলোও নানান ‘যন্ত্রণা’ নিয়ে হাজির ছিল সেখানে। কী হলো এবার? জেনে নিন বিস্তারিত।

লেখা: আবদুল্লাহ মামুর, হুমায়ুন হানিফ, মাসউদ ফোরকানমাহবুবআলম

ছবি: সাফায়াত হোসেন

.
.

বর্ষার ঘুষি খেয়েও খুশি

অনন্ত জলিল থাকবেন, বর্ষা না থাকলে চলে? তাই পাঠকের জন্য ছিল বর্ষার হাতে ঘুষি খাওয়ার অপূর্ব সুযোগ। দিনভর ছেলে-বুড়ো সবাই ঘুষি খেয়ে খুশিমনে ছবিও তুলেছেন। বিপত্তি বেধেছিল শেষ দিকে। রস‍+আলোর এক ‘ছোট্টবন্ধু’-টাইপ ভক্ত মায়ের কাছে আবদার করে বসল, বর্ষার ঘুষি না খেয়ে সে যাবে না! কিন্তু তার যা উচ্চতা, তাতে করে ঘুষি খাওয়ার উপায় নেই। অগত্যা নাছোড়বান্দা সন্তানকে কোলে তুলে বর্ষার হাতে ঘুষি খাওয়ালেন মা স্বয়ং!

.
.
.
.
.
.
.
.

মঙ্গলগ্রহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী এরশাদ
কেবলে দেশে ভোট নেই! দেশে ভোটের আবহ ফিরে এনেছিল সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও মহাজাগতিক মানের নির্বাচন কমিশন (রস‍+আলো)। মঙ্গলগ্রহের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, ভ্লাদিমির পুতিন, জেনালের আলাদিন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। সকাল থেকেই দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেন শিশু থেকে অশীতিপর ভোটাররা। কেউ কেউ তো সোনার হরিণতুল্য ভোট দিতে পেরে আবেগে হু হু করে কেঁদেও ফেলেছিলেন। যা হোক, নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন বাংলার গর্ব হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ!
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ: ৮০ শতাংশ
ডোনাল্ড ট্রাম্প: ১৫ শতাংশ
জেনালের আলাদিন: ৩ শতাংশ
ভ্লাদিমির পুতিন: ২ শতাংশ
নির্বাচন আবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হচ্ছে। দেখেন, আমার ছোটভাইও এসেছে ভোট দিতে। আজকে আমরা অনেক ভোট দিছি।

.
.
.
.
.
.

সার্টিফিকেটের জন্য মার!
সবপ্রতিযোগিতায় বিজয়ী পাঠকদের জন্য ছিল ‘রস‍+আলো সার্টিফিকেট অব মেরিট’। খবর পেয়ে একজন অতিসচেতন অভিভাবক পাঠক এসেছিলেন তাঁর তিন সন্তান নিয়ে। তাঁর প্রথম সন্তান অত্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে ‘এক ঢিলে দুই পাখি’ মারল এবং জোড়া লাগাল অনন্ত জলিলের ভাঙা হৃদয়। এমন প্রতিভাকে রস+আলো সম্মান জানাল ‘মেরিট অব সার্টিফিকেট’ দিয়ে। অভিভাবক ভাবলেন, বড় সন্তান তাঁর মুখ উজ্জ্বল করেছে, পরের দুটো সন্তানও যদি সার্টিফিকেট পায়, তবে তিনি রত্নগর্ভা হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন। এই বিশ্বাস থেকে তিনি আরও দুটি সার্টিফিকেটের জন্য অনড় অবস্থান নিলেন। একপর্যায়ে হুমকি দিয়ে বললেন, ‘সার্টিফিকেট দেবেন কি না বলেন?’ পাশ থেকে একজন উসকানি দিয়ে বললেন, ‘মাইর দেন আপা, মাইর দেন।’
সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলেন না সেই মা। সত্যি সত্যিই তিনি একটা মার দিয়ে বসলেন রস‍+আলোর এক লেখককে!

.
.
.
.

অনন্ত জলিলের হৃদয় চুরি!
অসম্ভব সম্ভবকারী অনন্ত জলিলের হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্টের ব্যবস্থা রেখেছিল রস‍+আলো। বিভিন্ন আকারের ‘হৃদয়’ ছিল, সেখান থেকে একবারের সুযোগে যিনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের মতো জটিল সার্জারি করতে পেরেছেন, তিনিই হয়েছেন বিজয়ী। বেশ চলছিল প্রতিযোগিতাটি। দুপুরের পর হঠাৎ দেখা গেল, অনন্ত জলিলের জন্য জুতসই ‘হৃদয়টি’ আর নেই! কোনো এক ‘সহৃদয়বান’ ব্যক্তিই হয়তো হৃদয়হীন কাজটি করেছেন!

.
.
.
.

এক ঢিলে দুই পাখি
বাস্তবে প্রায় অসম্ভব ব্যাপারটিই সম্ভব করার সুবর্ণ সুযোগ করে দিয়েছিল রস‍+আলো। PETA কর্তৃক অনুমোদিত এই খেলায় দড়িতে ঝোলানো দুটি পাখিকে (অবশ্যই খেলনা পাখি) এক ঢিলে কুপোকাতও করেছেন অনেকে। তবে একজন এমন ঢিলই ছুড়লেন যে পাখি দুটোর গায়ে তো লাগলই, আচমকা বলের ঢিল খেয়ে নাকাল হলেন রস‍+আলোর একজন লেখকও!

.
.

জাস্ট ফর লাফ
Just for laugh নয়, এটা জাস্ট ফর লাফ মানে লম্ফ। চেয়ার থেকে যে যত দূরে লাফাতে পারেন। পাঠকের লম্ফঝম্ফ দেখে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের পুকুরে বসবাসকারী এক ব্যাঙ তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘এ তো অসম্ভব!’ আর তাই সংগত কারণে আয়োজনটির স্পনসর ছিল পঙ্গু হাসপাতাল!