
কেউ কখনো রেগে চেঁচামেচি, বকাবকি করে পাড়া মাথায় তুললে তার মুখে চট করে এক খিলি পান ধরিয়ে দিন। এক নিমেষে মন ঠান্ডা হয়ে যাবে। কারণ, উনি পান চিবুবেন, না রাগারাগি করবেন। এটা হালকা কথা। গ্রামবাংলায় চির প্রচলিত একটি পদ্ধতি। আজকাল জীবন অনেক বেশি দ্বন্দ্বমুখর। হাজারো সমস্যার মুখে ঠাস করে রেগে ওঠা খুব স্বাভাবিক। এই রাগ নিয়ন্ত্রণ বেশ কঠিন। তাও কয়েকটি কৌশল নেওয়া যেতে পারে।
১. প্রথমে ভেবে দেখুন, সাধারণত দিনের কোন সময়টিতে আপনি হঠাৎ রেগে ওঠেন। এটা কি সকালে কাজে যাওয়ার পথে প্রচণ্ড যানজটের সময়? অফিসে যেতে আপনার দেরি হয়ে যাচ্ছে? নাকি ঘর থেকে বের হওয়ার সময় কারও সঙ্গে কথা-কাটাকাটির কারণে? যেসব ঘটনার জন্য প্রায়ই রাগ ওঠে, সেগুলো চিহ্নিত করুন। বাসা থেকে বের হওয়ার আগে মনে মনে জপ করুন, যেন ওসব পরিস্থিতির জন্য রাগ না ওঠে। পূর্বপ্রস্তুতি থাকলে রাগ নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।
২. দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় বেছে নিন, যখন আপনার মনকে প্রশমিত করার জন্য ছকবাঁধা কাজের চাপ থেকে কিছুক্ষণ মুক্ত থাকবেন। যেমন, বিকেলে একটু পার্কে হাঁটা। অথবা কাজের ফাঁকে চেয়ার ছেড়ে উঠে একবার একটু পায়চারি করা।
৩. সকালে পাঁচ-সাত মিনিটের হালকা ব্যায়াম করুন। যেমন স্কিপিং। বুক ভরে শ্বাস নিন এবং যতটা পারা যায় বুক খালি করে শ্বাস ত্যাগ করুন। গভীর মনোনিবেশের সঙ্গে এই নিশ্বাস-প্রশ্বাসই আসলে ‘ব্রিদিং এক্সারসাইজ’। এই ব্যায়ামটি মন হালকা করার একটি পরীক্ষিত উপায়।
৪. যদি আপনার রক্তচাপ বেশি থাকে, তাহলে অবশ্যই চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে। নিয়মিত ওষুধ খেয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন নয়। তা ছাড়া পরিমিত খাওয়া, দিনে সাত-আট ঘণ্টা ঘুম ও শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবন যাপন করলে মেজাজ ফুরফুরে থাকে, সহজে রাগ ওঠে না।
৫. অবশ্য এটাও মনে রাখবেন যে মাঝেমধ্যে রেগে ওঠা সব সময় খারাপ নয়। আসল কথা হলো, মানসিক চাঞ্চল্য সময়মতো রাশ টেনে ধরতে পারছে কি না। ছোটখাটো রাগ সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ বলে ধরে নেওয়া যায়। কিন্তু রাগ যেন ক্ষতিকর পর্যায়ে না যায়, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।
সূত্র: ফাইন্ড এ সাইকোলজিস্ট ওয়েবপেজ