শহরের পানি রক্ষায় এক অদম্য সৈনিক

পরিবেশ রক্ষায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করছেন অনেক কিশোর-তরুণ। পড়ুন এমন এক সংগ্রামীর কথা।

মেরি কোপেনি

২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ছোট্ট শহর ফ্লিন্টের পানির সরবরাহব্যবস্থায় আকস্মিকভাবে মিশে যায় বিষাক্ত সিসা এবং লিজিওনেলা ব্যাকটেরিয়া। সংকটাপন্ন হয় শহরটির প্রায় ১২ হাজার শিশুর জীবন। এই সংকটে করণীয় ঠিক করতে বড়রা যখন দিশাহারা, তখন এগিয়ে আসেন ৭ বছরের মেরি কোপেনি, আদর করে যাকে সবাই ডাকে ‘লিটল মিস ফ্লিন্ট’, তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে একটা চিঠি লেখেন। আশ্চর্যজনকভাবে সেই চিঠির জবাবও দেন প্রেসিডেন্ট, ‘তোমার মতো শিশুদের লেখা চিঠিগুলোই আমাকে ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদী করে।’ শুধু তা–ই না, ২০১৬ সালের ৪ মে ফ্লিন্টের পথে যাত্রা করেন ওবামা। প্রায় তাৎক্ষণিকভাবেই জাতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর আকর্ষণের কেন্দ্রে চলে আসে ফ্লিন্ট। শহরটির দুরবস্থা বুঝতে পেরে জরুরি অবস্থা জারি করেন ওবামা। সমস্যা সমাধানে শহরটিকে ১০০ মিলিয়ন ডলারের অনুদানও দেওয়া হয়।

জনসাধারণের রাজনৈতিক এবং মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় এখনো লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন মেরি কোপেনি। ২০১৮ সালে ফ্লিন্টে আবার পানির সমস্যা দেখা দিলে নতুন উদ্যমে অর্থ জোগাড়ে নামেন লিটল মিস ফ্লিন্ট। এক মাসের মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার মার্কিন ডলার সংগ্রহে সফল হয় মেরির দল। এই টাকা দিয়ে শহরবাসীর জন্য কেনা হয় প্রায় দুই লাখ সুপেয় পানির বোতল। ২০১৯ সালে একটি পানি পরিস্রবণ কোম্পানির সঙ্গে জোট বেঁধে নতুন করে অর্থ জোগাড়ে লেগে পড়েন মেরি। ২০২১ সালের ধরিত্রী দিবসের মধ্যেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে সফল হন।

জাতিসংঘের একটি অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বকনিষ্ঠ প্রতিনিধি হিসেবে বক্তৃতাও দিয়েছেন খুদে এই বিপ্লবী। টাইম ম্যাগাজিন, ভাইস, গার্ডিয়ান ইত্যাদি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম থেকে স্বীকৃতি পেয়েছেন। মাত্র ১৪ বছর বয়সেই যাঁর এত অর্জন, তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

মেরির ওয়েবসাইটে ঢুকলেই পেয়ে যাবেন তার জবাব। সেখানে তাঁর নামের পাশে লেখা—‘সমাজসেবক। প্রকৃতিপ্রেমী। ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট।’