শাখামৃগের মহাভোজ

.
.

আয়োজন অসামান্য। একেবারে মহাভোজ। তবে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ পেয়েছে শুধু বানরেরা। থাইল্যান্ডের মধ্যাঞ্চলীয় শহর লপবুরিতে গতকাল রোববার হয়ে গেল এ অনুষ্ঠান। সেখানে শাখামৃগের দল রীতিমতো পাঁচতারকা মানের খাতির-যত্ন পেয়েছে। তবে নিজেদের সহজাত আচরণের পরিচয় দিয়েছে তারা, খাবার নিয়ে কাড়াকাড়ি করতে ভোলেনি।

লপবুরিতে প্রতিবছরই বানরদের আপ্যায়নের এই আয়োজন করা হয়। এটা চলে আসছে সেই ১৯৮০-এর দশক থেকে। এই ঐতিহ্য সেখানের পর্যটকদেরও আকৃষ্ট করে। এবারের মহাভোজে ছিল হরেক রকমের ফল। ক্ষুধার্ত অতিথিরা সেগুলো দ্রুতই সাবাড় করেছে। তাদের এই কীর্তি দেখে দর্শকদের উচ্ছ্বাসেরও কমতি ছিল না। তাঁরা ক্যামেরা তাক করে বিস্তর ছবি তুলেছেন।

থাইল্যান্ড বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হলেও প্রাক্‌-বৌদ্ধ যুগের হিন্দু ঐতিহ্যগুলো পুরোপুরি বর্জন করেনি। সে কারণেই থাই সমাজে বানরদের বিশেষ কদর রয়েছে। হিন্দু পুরাণে দেবতা হনুমানের উল্লেখ আছে। সে অসাধু রাজা রাবণের কবল থেকে রামের স্ত্রী সীতাকে উদ্ধারের অভিযানে সাহায্য করে খ্যাতি পেয়েছে। তবে শুধু এসব কাহিনির জন্যই যে লপবুরির বাসিন্দারা বানরকুলকে ভালোবাসে, তা নয়। ৮০০ বছরের পুরোনো খেমার যুগের হিন্দু মন্দির ফ্রা প্রাং সাম ইয়ত মন্দিরের যে ধ্বংসাবশেষ আছে, বানরের মহাভোজের উৎসবটি সেখানেই অনুষ্ঠিত হয়। শহরের অন্যতম আকর্ষণীয় জায়গা এটি।

মার্কিন পর্যটক অ্যামান্ডা বলেন, এতগুলো বানর একসঙ্গে রাস্তায় চলাফেরা করছে, দেখাটা সত্যিই আনন্দের। তারা ইচ্ছেমতো খাবার বেছে নিয়ে খাচ্ছিল, ঝগড়াও করছিল।

লপবুরির বানরদের কখনোই খাবারের অভাব হয় না। কারণ, স্থানীয় লোকজন ভালোবেসে সারা বছরই তাদের খাবার দেন।

চীনের একজন বিক্রয় ব্যবস্থাপক (৩৬) গতকালের উৎসব দেখতে এসেছিলেন। এএফপিকে বললেন, ‘বানরগুলো বেজায় দুষ্টু। একটা তো আমার চুলের ক্লিপ নিয়ে যেতে চাইছিল। আমার কাঁধ থেকে নামতেই চায় না। এই দেখে দুই মেয়ে তো ভয়েই দৌড়ে পালাল।’