শিল্পকলায় পঞ্চকবির গান

ঘড়ির কাঁটায় তখন সাড়ে ছয়টা। সমবেত কণ্ঠে সুর তুললেন শিল্পীরা—‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে’। গানের সঙ্গে গলা মেলালেন দর্শকেরাও। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা দর্শনার্থীরাও জমায়েত হলেন দর্শকসারিতে। একে একে চলল গান। সুরের খেয়ায় দর্শকেরা পার করলেন অন্য রকম সন্ধ্যা।
১৭ নভেম্বর এমনই উপলক্ষ এনে দেয় প্রথম আলো চট্টগ্রাম বন্ধুসভা। শিল্পকলা একাডেমির অনিরুদ্ধ মুক্তমঞ্চে বসে পঞ্চকবির গানের আসর। বন্ধুসভাসহ বিভিন্ন সংগঠনের শিল্পীদের কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, রজনীকান্ত সেন, অতুলপ্রসাদ সেন ও কাজী নজরুল ইসলামের গান মুগ্ধ করে দর্শকদের।
আয়োজনের প্রথম পর্বে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত গান পরিবেশন করেন বন্ধুসভার শিল্পীরা। শুরুতে উৎপল মল্লিকের কণ্ঠে ‘চরণ ধরিতে’ ও রিমি বিশ্বাসের কণ্ঠে পরিবেশিত ‘এরা সুখের লাগি’ গান দুটি মুগ্ধ করে দর্শকদের। এ ছাড়া রক্তকরবীর শিল্পী অমি দেব পরিবেশিত ‘দিবস রজনী’ গানটিও প্রশংসা কুড়ায়। এরপর শাকেরা আক্তারের কণ্ঠে ‘বেলা বয়ে যায়’ গানের মাধ্যমে শুরু হয় দ্বিজেন্দ্রলাল রায় রচিত গানের পর্ব। রিতু বড়ুয়া করেন ‘আজি নতুন রতনে’।
এই পর্ব শেষে মঞ্চে আসেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শিক্ষাবিদ আনোয়ারা আলম। তিনি বলেন, সংস্কৃতিচর্চা তারুণ্যকে সব ধরনের কলুষতা থেকে দূরে রাখতে পারে। কথামালা শেষে রজনীকান্ত সেন রচিত গান নিয়ে মঞ্চে আসেন শিল্পীরা। ‘সখা, তোমারে পাইলে আর’ গানটি দিয়ে শুরু করেন সুপ্তা দাশ গুপ্ত। বাবলু চক্রবর্তীর গাওয়া ‘আমি অকৃতি অধম’ গানটিও মুগ্ধতার আবেশ ছড়ায়।
এরপর মঞ্চে আসেন চট্টগ্রাম বন্ধুসভার উপসাংগঠনিক সম্পাদক জাকিয়া কবির। পঞ্চকবির গানের অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্দেশ্যের কথা তুলে ধরেন তিনি। সংক্ষিপ্ত কথামালা শেষে অতুলপ্রসাদ সেনের ‘বধূ নিদ নাহি আঁখিপাতে’ গানটি করেন অভ্যুদয় সংগীত অঙ্গনের শিল্পী সেঁজুতি দে। এই পর্বে সমাপ্তি বড়ুয়া ও রোকসানা আক্তার পরিবেশন করেন অতুলের আরও দুটি গান।
এবার নজরুল পর্ব। কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘আমার আপনার চেয়ে’, ‘প্রিয় যায় যায়’, ‘মোর ঘুম ঘোরে’ গানগুলোর পরিবেশনা আনন্দ দিয়েছে দর্শকদের। এ ছাড়া ‘পার্থ সারথী’ ও ‘বধূ কোন আলো’ দুটি গানের সঙ্গে একক নৃত্য পরিবেশন করেন স্বস্তিকা সেনগুপ্তা।
সবশেষে চট্টগ্রাম বন্ধুসভার সভাপতি জয়শ্রী দাশের সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয় বর্ণিল এই আয়োজন। এতে শিল্পীদের কিবোর্ডে রুপন সেন, তবলায় প্রদীপ নন্দী, পারকিউশনে রতন মিত্র ও বাঁশিতে সুচয়ন দে সহযোগিতা করেন। পুরো আয়োজন সঞ্চালনায় ছিলেন বেনজির বিনতে শওকত ও ফাহিম উদ্দিন।