শিশুর বৃষ্টিস্নান

অলংকরণ: মাসুক হেলাল
অলংকরণ: মাসুক হেলাল

বৃষ্টি মানেই যেন একঝাঁক শিশুর খোলা মাঠে ছুটে বেড়ানোর দিন। বৃষ্টি মানেই যেন হইচই করে সারাটা বেলা কাটিয়ে দেওয়ার আনন্দ। তবে আজকালকার শহুরে জীবনে তেমনটা হয়ে ওঠে না। বাসা-স্কুল-বাসা চক্রের মধ্যে বাঁধা পড়ে থাকে বেশির ভাগ শিশুর জীবন। বৃষ্টিতে ভিজতে চাইলেই মা-বাবার নিষেধ শুনতে হয়, কখনো লুকিয়ে লুকিয়ে ভিজতে গেলেও বকা খেতে হয়।
বেশির ভাগ মা-বাবাই মনে করেন, বৃষ্টিতে ভিজলে বুঝি শিশু অসুস্থ হয়ে পড়বে। আর তার জন্য হয়তো শিশুর স্কুলের ক্লাস বাদ যাবে। এ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিশু বিভাগের অধ্যাপক মো. আবিদ হোসেন মোল্লা। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টিতে ভিজলে কোনো অসুবিধা নেই। তবে যেসব শিশুর অ্যাজমা বা হঁাপানি আছে, তাদের বৃষ্টিতে না ভেজাই ভালো।’

কিছু প্রচলিত ধারণা, যেগুলোর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই
 মা-বাবা মনে করেন, বৃষ্টিতে ভিজলেই শিশুর ঠান্ডা লেগে যাবে বা জ্বর আসবে।
 অনেকে মনে করেন যে শিশু আগে কখনো বৃষ্টিতে ভেজেনি, অর্থাৎ যার বৃষ্টিতে ভেজার অভ্যাস নেই, সে বৃষ্টিতে ভিজলে তার ঠান্ডা লাগবেই।
 শিশু বৃষ্টিতে ভিজলেই তাকে গরম কোন খাবার খাওয়াতে হবে, না হলে তার ঠান্ডা লেগে যাবে।
 বৃষ্টির পানিতে ক্ষতিকর কোনো পদার্থ থাকতে পারে, তাই তাঁরা ভাবেন শিশু বৃষ্টিতে ভিজলে অবশ্যই তাকে অন্য পানিতে গোসল করাতে হবে।
 এই প্রচলিত ধারণাগুলো কি আসলেই ঠিক, জেনে নিন বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে।

বৃষ্টিস্নানে নেই মানা
 যাদের আগে থেকে হাঁপানি আছে অথবা যাদের ঠান্ডাতে অ্যালার্জি আছে, তারা বাদে আর সব সুস্থ শিশুই বৃষ্টিতে ভিজতে পারে।
 শিশু বৃষ্টিতে ভিজে আসার পর তার শরীর মুছিয়ে দিন এবং তাকে গরম কাপড় পরিয়ে দিন।
 যদি বৃষ্টিতে ভিজতে গিয়ে শিশুর শরীরে কোনোভাবে কাদা-পানি লেগে যায়, তাহলে তাকে পরিষ্কার পানি দিয়ে গোসল করিয়ে দিতে পারেন। যদি শিশুর শরীরে কাদা-পানি বা ময়লা না লাগে, তাহলে শিশুকে আবার গোসল না করালেও চলবে।
 বৃষ্টিস্নানে নেই মানা, তবে একটানা অনেকক্ষণ বৃষ্টিতে ভেজা যাবে না।
 বৃষ্টিতে ভিজে আসার পর বেশিক্ষণ ভেজা কাপড় পরে থাকলে শিশুর অস্বস্তি হবে, শীত লাগবে এবং এক্ষেত্রে শিশুর ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। তাই শিশুকে বেশিক্ষণ ভেজা কাপড়ে থাকতে দেওয়া যাবে না।
 শিশু হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেলেও তার মাথা ও শরীর মুছিয়ে দিতে হবে এবং তার ভেজা কাপড় বদলে দিতে হবে।
স্কুলে যাওয়ার সময়
স্কুলে যাওয়ার সময় শিশু যদি বৃষ্টিতে ভিজে যায়, তাহলে সম্ভব হলে বাড়ি নিয়ে গিয়ে কাপড় বদলে দিন। আর সেটা সম্ভব না হলে সাবধানতা হিসেবে স্কুলে যাওয়ার সময় ছাতা বা রেইনকোট সঙ্গে রাখতে হবে।