শিশুর মুখে প্রথম ভাত

শিশুর মুখে প্রথম ভাত
শিশুর মুখে প্রথম ভাত

শিশুর প্রথম শক্ত খাবার খাওয়ার দিনটিকে মুখে ভাত উৎসব হিসেবে পালন করা হয়। সত্যি বলতে কি একটি শিশুর জীবনে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ছয় মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের দুধ শিশুর পূর্ণাঙ্গ পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম, কিন্তু ছয় মাস বয়সের পর থেকে মায়ের দুধের পাশাপাশি তাকে সম্পূরক খাদ্য দিতে হবে। প্রথম খাবার কী দেওয়া যায়, কীভাবে দেওয়া যায় ইত্যাদি নিয়ে অভিভাবকদের থাকে দুশ্চিন্তা, আছে অনেক ভুল ধারণাও।
দিতে পারেন সব কিছুই
আপনি বাড়িতে যা খান তার প্রায় সব উপাদানই ধীরে ধীরে শিশুকে দিতে পারেন। তবে একেকটি নতুন খাবার দেওয়ার পর অন্তত এক সপ্তাহ অপেক্ষা করুন। এরপর আরেকটি খাবার দিন। চাল-ডালের নরম খিচুড়ি দিয়ে শুরু করে তাতে একে একে সবজি, মাছ, মুরগি ইত্যাদি চটকে মিশিয়ে দেওয়া যায়। আলু, মিষ্টি আলু, সুজি, পায়েস, হালুয়া, সেমাই, পুডিং, ফল ও ফলের রস, ডাল-ভাত সবই একে একে শুরু করুন। রান্নায় পর্যাপ্ত তেল দেবেন, নয়তো ভিটামিন দ্রবীভূত হবে না।
শাকসবজি ঢেকে রান্না করলে ভিটামিন নষ্ট হয় না। বাসি খাবার দেবেন না, শিশুর খাবার ঢেকে রাখবেন। পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখবেন। খাবার পানি অন্তত ৩০ মিনিট ফুটাতে হবে। তৈজসপত্রও ফুটানো পানি দিয়ে ধুয়ে নেওয়া ভালো।
ব্লেন্ডারের তরল নয়
শিশু শক্ত খেতে পারবে না বলে মায়েরা সব কিছু ব্লেন্ডারে তরল করে খাইয়ে থাকেন। এটি ঠিক নয়। শিশুর স্বাদগ্রন্থি ও রুচি তৈরি হওয়ার জন্য আধা শক্ত দানাদার খাবারের দরকার। তরল খাবারে অভ্যস্ত হলে পরে শিশুরা আর শক্ত খাবার খেতে পারে না। তরল খাবার বোতলে ভরে খাওয়ানো অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর একটি অভ্যাস। শিশুকে দানাদার ও আধা শক্ত খাবার বাটি-চামচ ব্যবহার করে খাওয়ান। ধীরে ও ধৈর্য ধরে খাওয়ান, তাড়াহুড়া করবেন না।
টিনজাত খাবারকে না বলুন
টিনজাত খাবারে উচ্চ ক্যালরি থাকলেও আঁশ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান নেই। বাজারে যেসব টিনজাত খাবার বা রেডিমেড খাবার পাওয়া যায় তাতে নানা ধরনের খাদ্য সংরক্ষক ও রাসায়নিক মেশানো থাকে। তাই টিনজাত খাবারকে না বলুন।
ঘন ঘন খাবার নয়
শিশুকে এক বা দুই ঘণ্টা পর পর খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না। খিদে পেতে দিন। একবার পেট ভরে খেলে পাকস্থলি খালি হতে তিন-চার ঘণ্টা লেগে যাওয়ার কথা। বড়দের মতো সকাল, দুপুর ও রাতে তিনবার মূল খাবার রাখুন। এর মধ্যে আরও দুবার হালকা নাশতা। খাবার নিয়ে জোর করলে খাদ্যে অনীহা আসবে, কখনো বমি হবে।  শিশু বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল।