সস্তা খ্যাতির মোহ তৈরি করছে টিকটক
অল্প দিনের মধ্যেই বিশ্বজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে টিকটক। অনেকে বলছেন, সামাজিক এই যোগাযোগমাধ্যমই প্রযুক্তি দুনিয়ার ‘নেক্সট বিগ থিং’। আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানোর মাধ্যম হিসেবে টিকটককে গুরুত্ব দিচ্ছে বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে টিকটকে রুচিশীল কনটেন্টের অভাব, এটি তরুণদের বিপথে নিয়ে যাচ্ছে—এমন অপবাদও শোনা যায়। তরুণদের মধ্যেও রয়েছে টিকটক নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। দেশের নানা প্রান্তের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীর কাছে আমরা জানতে চেয়েছিলাম টিকটক সম্পর্কে তাদের ভাবনা।
টিকটকের জন্য ভিডিও তৈরি বা টিকটক দেখা আমার কাছে স্রেফ সময় নষ্ট। এখন তো পৃথিবী তরুণদের শুধুই অনুসরণ বা অনুকরণে উৎসাহ দেয়। টিকটকের কারণে মৌলিক সৃজনশীলতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করি। যেহেতু হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ডের পেছনে ছোটার দিকেই টিকটক ব্যবহারকারীদের আগ্রহ বেশি, তাই আমি মনে করি, এটা একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা।
ভিডিও কিংবা গান বিনোদনের অংশ হিসেবে দেখা যেতে পারে, কিন্তু অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো না। তরুণদের বিশাল একটা সময় এখন টিকটক নষ্ট করে দিচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুলার রোড এলাকায় মাঝেমধ্যে টিকটক ভিডিও নির্মাতাদের দেখা যায়। আমি যেকোনো সৃজনশীল কাজের পক্ষে। সিনেমা, ডকুমেন্টারি তৈরি কিংবা যেকোনো ভিডিও ধারণ বা নির্মাণের কাজই পরিশ্রমের। কিন্তু টিকটকের অনেক ভিডিওর রুচিশীলতা নিয়েই প্রশ্ন আছে। বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের যেখানে বিতর্ক বা সৃজনশীল সংগঠনের সঙ্গে জড়িত হওয়ার সুযোগ আছে, সেখানে টিকটক ভিডিও তাঁদের কোন মঞ্চে দাঁড় করাচ্ছে, তা নিয়ে কেউ ভাবছে না। একজনের একটা ভিডিও প্রচুর ভিউ পেল, তা দেখে আরও দশজন একই রকম ভিডিও তৈরি করতে নেমে পড়ল। এভাবে খ্যাতির মোহে আমরা আটকে যাচ্ছি। বইপড়া, সিনেমা দেখা, গান শোনা কিংবা প্রকৃতির কাছাকাছি যাওয়ার মতো অনেক সুযোগ আমাদের আশপাশে আছে। সব সুযোগ আমরা কেন ৩০ সেকেন্ডের ভিডিওর কাছে ছেড়ে দিচ্ছি?