
বাসন্তী অথবা লাল শাড়ির সঙ্গে পছন্দের গয়না নিশ্চয়ই কেনা হয়ে গেছে এরই মধ্যে। বাসন্তী সাজে কীভাবে সাজাবেন নিজেকে তার জন্য কিন্তু একটু আগেভাগেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।
পয়লা ফাল্গুন মানেই সারাটা দিন ঘরের বাইরে উৎসবের মধ্যে ফাল্গুনকে আমন্ত্রণ জানানো। এদিন ত্বকের ওপর বেশ ঝক্কি যায় বৈকি। সঙ্গে, খেয়াল রাখতে হয় যে সারা দিন মেকআপটা ঠিক থাকবে কি না।
ফাগুনের সাজের প্রস্তুতি নিন দুই-তিন দিন আগে থেকেই। ঘরে বসে নিজেই বা পারলারে গিয়ে ত্বক অনুযায়ী ফেশিয়াল আর ম্যানিকিওর-পেডিকিওর করে নিতে পারেন।
ফাল্গুন আসছে। তবে হালকা শীত কিন্তু রয়েই গেছে আর সঙ্গে আছে ত্বকের শুষ্কতা। ঘরে বসে যাঁরা ত্বকের যত্নটা সেরে ফেলতে চান তাঁরা প্রথমেই ত্বক উপযোগী স্ক্রাব দিয়ে ত্বকের মৃত কোষগুলো পরিষ্কার করে নিন। এরপর পাকা পেঁপের রস, আলুর রস, মধু আর মুলতানি মাটি দিয়ে প্যাক তৈরি করে তা ১৫ মিনিটের জন্য মুখে লাগিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকে ব্রণের সমস্যা থাকলে স্ক্রাবিং এড়িয়ে যান।
ফাগুনের সকালে সাজের শুরু করুন স্ক্রাবিং দিয়ে। মিনিট খানেক স্ক্রাব করে ফেস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন এবং ময়েশ্চাইরাজার লাগান। এটি মুখে পুরোপুরি বসে যেতে মিনিট পাঁচেক সময় দিন। এবার সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম লাগান এবং আবার ১৫ মিনিট সময় দিন। এই বাড়তি অপেক্ষার সময়ের মধ্যে দৈনন্দিন কাজগুলোও কিন্তু সেরে ফেলতে পারেন। মেকআপের শুরু করুন প্রাইমার দিয়ে। এটি দীর্ঘক্ষণ মেকআপ ঠিক রাখতে সাহায্য করবে। এরপর পছন্দমতো ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিন। ত্বকের স্বাভাবিক রূপকে ধরে রাখতে চাইলে বিবি ক্রিমও ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকের দাগ-ছোপ ঢাকতে ত্বকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে কনসিলার ব্যবহার করুন। ফাউন্ডেশন আর কনসিলার প্রয়োগের ক্ষেত্রে মনে রাখবেন, ‘যত অল্প তত ভালো’।
ত্বক তৈলাক্ত হলে পাউডারের প্রলেপ বুলিয়ে নিন। এবার পছন্দমতো ব্লাশ পরে নিন। চোখের আর ঠোঁটের সাজের জন্য কিছুটা সতর্ক হতে হবে, যেহেতু পোশাকের রং বাসন্তী বা লালের মতো চড়া। যদি লাল বা কমলার মতো গাঢ় লিপস্টিক পরতে চান তাহলে চোখের সাজ হালকা রঙে করুন। কিংবা কালো, নীল, বাদামি, সবুজ ইত্যাদি গাঢ় রঙের স্মোকি লুক দিন। ঠোঁটের রং যদি হালকা পরতে চান তাহলে চোখে পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে পছন্দমতো রঙের ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে চোখের ওপরের পাতায় হালকা ভাব রেখে নিচে রঙিন লাইনার পরে চোখের সাজে ভিন্নতাও আনতে পারেন। সম্ভব হলে চোখের সাজের উপযোগী প্রাইমার ব্যবহার করুন। আর সাজটি যেহেতু পুরো দিনের জন্য তাই কাজল এবং মাশকারা পানিরোধক হলে সবচেয়ে ভালো হবে। সবশেষে খোঁপা বা বেণি করা চুলে গাদা ফুলের মালা, রঙিন কাচের চুড়ি আর একটি টিপ আপনার ফাল্গুনের সাজে পূর্ণতা এনে দেবে।
ঘর থেকে বের হওয়ার আগে হাতব্যাগে নিয়ে নিন ছোট টিস্যু বা ভেজা টিস্যুর প্যাকেট, প্রেসড পাউডার, লিপস্টিক, ছোট আয়না, পারফিউম আর পানি। এতে করে সারা দিনে যদি আপনার সাজ একটু এদিক-সেদিক হয়ে যায় তাহলে তা তৎক্ষণাৎ ঠিক করে নিতে পারবেন। অনেকটা হাঁটাহাঁটির পরিকল্পনা থাকলে হিল-স্যান্ডেল না পরে চটি-স্যান্ডেল পরুন, সেটি যেমন আরামদায়ক হবে, তেমনি তাতে বাঙালিয়ানাও বজায় থাকবে।
বাড়িতে ফিরে ভালোভাবে মেকআপ পরিষ্কার করে ফেলুন, ব্যবহার করতে পারেন বেবি-অয়েল বা যেকোনো মেকাপ ক্লেনজার। আর পরের দিন আরেকবার ঘরোয়া ফেশিয়াল করে নিন, যাতে আগের দিনের সব ক্লান্তি ত্বক থেকে ধুয়ে-মুছে যায়।
লেখক: ব্লগার