সীমানা পেরিয়ে কবিতার মোহনায়

১৬ অক্টোবর সন্ধ্যা ছয়টা। অনুষ্ঠান শুরুর আগেই শেষের বাঁশি। ভারতীয় তিন আবৃত্তিশিল্পীর আগমনের বিষয়ে যথাযথ অনুমতি না নেওয়ার অভিযোগ এনে অনুষ্ঠান আয়োজনে বাদ সাধল পুলিশ প্রশাসন। নগরের জেলা শিল্পকলা একাডেমীর মূল মিলনায়তন ততক্ষণে দর্শকে পরিপূর্ণ। আয়োজকদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সারতে সারতে সময় গড়াল। প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে শুরু হলো অনুষ্ঠান।
শুরুটা নানা বিপত্তি ভরা। তাতে কী? একজন দর্শকও আসন ছেড়ে নড়লেন না। আর দর্শকদের এই অপেক্ষার প্রতিদানও মিলল। বাচিক চর্চাকেন্দ্র তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের আয়োজনে কবিতায় কবিতায় কেটে গেল পুরো সন্ধ্যা। শিল্পকলার মূল মিলনায়তনে কবিতা ও আবৃত্তির মধ্য দিয়ে রচিত হলো দুই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আবৃত্তিশিল্পীদের দারুণ এক মেলবন্ধন।
‘সীমানা পেরিয়ে কবিতার মোহনায়’ শিরোনামের এই আয়োজনে চমৎকার সব পরিবেশনায় কণ্ঠে আবৃত্তির ঝংকার তোলেন বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা এবং ভারতের কলকাতা, ত্রিপুরা ও আসামের আবৃত্তিশিল্পীরা।
আয়োজনের শুরুতে ছিল কথামালা পর্ব। এই পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা মফিজুর রহমান, কবি এজাজ ইউসুফী, ব্যবসায়ী এম এ মোতালেব, আবৃত্তিশিল্পী বেলায়েত হোসেন, শুভ্রজিৎ ভট্টাচার্য ও মো. জোবায়ের। এ সময় বক্তারা বলেন, এই আয়োজন বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন জনপদের মানুষের মধ্যে একটি সুন্দর মেলবন্ধন সৃষ্টি করবে। কবিতা ও আবৃত্তির মধ্য দিয়ে সৃষ্ট এই মেলবন্ধন দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের আবৃত্তিশিল্পী সংগীতা দেবীর কণ্ঠে রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ রচিত ‘মানুষের মানচিত্র’ আবৃত্তির মাধ্যমে শুরু হয় পরিবেশনা। এরপর মঞ্চে আসেন চট্টগ্রামের বোধন আবৃত্তি পরিষদের ইসমাইল সোহেল, কুমিল্লার কাজী মাহতাব সুমন ও আবু নাছের মানিক এবং তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের সাইদুর রহমান। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিন আবৃত্তিশিল্পী মনির হোসেন, বাছির দুলাল ও রোকেয়া দস্তগীরের তিনটি পৃথক আবৃত্তি পরিবেশনা ভালো লেগেছে দর্শকদের।
অপেক্ষা ছিল ভারতীয় আবৃত্তিশিল্পীদের জন্য। ভারতের আসামের সংহিতা পাল, ত্রিপুরার শুভ্রজিৎ ভট্টাচার্য ও কলকাতার চন্দ্রিমা রায় সুমন চট্টোপাধ্যায় ও সব্যসাচী চক্রবর্তীর কবিতা শুনিয়ে মুগ্ধতায় ভাসালেন দর্শকদের।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় আবৃত্তিশিল্পী মাহিদুল ইসলাম, বেলায়েত হোসেন ও জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়ের মনোমুগ্ধকর আবৃত্তি পরিবেশনার মাধ্যমে শেষ হয় এই আয়োজন।