সেরা সুন্দরীর টায়রা!

ইয়াঙ্গুনে সাবেক মিস মিয়ানমার মায় মায়াত নোর সংবাদ সম্মেলনে ২০১৪ সালের মিস এশিয়া প্যাসিফিক প্রতিযোগিতার সেরা সুন্দরীর টায়রা। ছবি: রয়টার্স
ইয়াঙ্গুনে সাবেক মিস মিয়ানমার মায় মায়াত নোর সংবাদ সম্মেলনে ২০১৪ সালের মিস এশিয়া প্যাসিফিক প্রতিযোগিতার সেরা সুন্দরীর টায়রা। ছবি: রয়টার্স

মণি-মাণিক্যখচিত মহামূল্য সেই টায়রা। সেরা সুন্দরীর ললাটেই তা শোভা পাওয়ার কথা। হয়েছিলও তা-ই। দক্ষিণ কোরিয়ায় মে মাসে মিস এশিয়া প্যাসিফিক ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতার বিজয়ী এক মিয়ানমার-সুন্দরীর ভাগ্যে জোটে তা। কিন্তু ‘মিথ্যা কথা বলা’ ও ‘অবিশ্বস্ততার’ অভিযোগে ওই টায়রা ফিরিয়ে নিতে চাইছেন প্রতিযোগিতার আয়োজকেরা। এদিকে, আয়োজকদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করে মিয়ানমারের এই সুন্দরী বলেছেন, ‘অসদাচরণের’ জন্য ‘ক্ষমা না চাইলে’ টায়রাটা আয়োজকদের ফেরত দেবেন না তিনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় এই সুন্দরী প্রতিযোগিতার প্রতিষ্ঠাতা চোই ইয়োন বুধবার গণমাধ্যকে বলেন, সাবেক মিস মিয়ানমার মায় মায়াত নো সেরা সুন্দরীর টায়রাটা নিয়ে তাঁর দেশে পালিয়ে গেছেন। টায়রা ফেরত না দিলে পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়ারও হুমকি দেন তিনি। দক্ষিণ কোরিয়ার গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী টায়ারাটির মূল্য প্রায় এক লাখ মার্কিন ডলার। এদিকে, নানা অভিযোগ এনে এই মিয়ানমার সুন্দরীর কাছ থেকে ইতোমধ্যেই মিস এশিয়া প্যাসিফিক ওয়ার্ল্ডের সেরা সুন্দরীর খেতাবও ফিরিয়ে নিয়েছেন আয়োজকেরা।

ইয়াঙ্গুনে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সাবেক মিস মিয়ানমার মায় মায়াত নো। ছবি: রয়টার্স
ইয়াঙ্গুনে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সাবেক মিস মিয়ানমার মায় মায়াত নো। ছবি: রয়টার্স


সাবেক মিস মিয়ানমার মায় মায়াত নো এই প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মধ্য দিয়ে মিয়ানমারের প্রথম আন্তর্জাতিক সুন্দরী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। কিন্তু এই টায়রা নিয়ে বিবাদে দেশে এবং দেশের বাইরে তাঁর ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। অবশ্য বুধবার ইয়াঙ্গুনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রতিযোগিতাটির আয়োজকদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন।

মায় মায়াত নো জানান, টায়রাটা নিয়ে দেশে ফিরে আসার সময়ও তিনিই মিস এশিয়া প্যাসিফিক ওয়ার্ল্ডের এবারের সেরা সুন্দরী ছিলেন। কিন্তু দেশে ফেরার পরপরই তিনি এক চিঠিতে জানতে পারেন যে, তাঁর কাছ থেকে সেরা সুন্দরীর খেতাব ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ইয়াঙ্গুনে সংবাদ সম্মেলনে আসার পথে মায়ের সঙ্গে সাবেক মিস মিয়ানমার মায় মায়াত নো। তাঁর হাতে বাক্সের মধ্যে ২০১৪ সালের মিস এশিয়া প্যাসিফিক প্রতিযোগিতার সেরা সুন্দরীর টায়রা। ছবি: রয়টার্স
ইয়াঙ্গুনে সংবাদ সম্মেলনে আসার পথে মায়ের সঙ্গে সাবেক মিস মিয়ানমার মায় মায়াত নো। তাঁর হাতে বাক্সের মধ্যে ২০১৪ সালের মিস এশিয়া প্যাসিফিক প্রতিযোগিতার সেরা সুন্দরীর টায়রা। ছবি: রয়টার্স

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, তার বয়স ১৬ বছর হলেও আয়োজকেরা তাঁকে ১৮ বছর দেখিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে বাধ্য করেছেন। এ ছাড়া আয়োজকেরা তাঁকে বক্ষ স্ফীত করার জন্য অস্ত্রোপচার করাতেও জোর জবরদস্তি চালান। তবে, তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। মায় মায়াত নো আরও জানিয়েছেন, একটা গানের অ্যালবাম প্রকাশের বিষয়েও আয়োজকদের সঙ্গে তাঁর কথা হচ্ছিল। কিন্তু আয়োজকেরা বলেছেন, অ্যালবাম প্রকাশের টাকা জোগাড় করার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার কিছু শিল্পপতির সঙ্গে তাঁরা ‘যখন চাইবেন তখন সময় কাটাতে’ হবে। কিন্তু মায় মায়াত নো ওই প্রস্তাবও ফিরিয়ে দিয়েছেন।

এদিকে সাবেক মিস মিয়ানমারের এসব অভিযোগকে ডাহা মিথ্যা কথা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন প্রতিযোগিতাটির প্রতিষ্ঠাতা চোই। তিনি বলেন, ‘এটা নির্জলা মিথ্যা। এসব সত্য না।’ চোই দাবি করেন, আগস্টের ২০ তারিখে বুশান শহরে মায় মায়াত নোর দেহে অস্ত্রোপচার হয়েছে এবং তাঁর মায়ের সম্মতির মধ্য দিয়ে আইনগতভাবেই তা করা হয়েছে। চোই আরও বলেন, প্রতিযোগিতায় আবেদনের সময়ই বয়স সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন মায় মায়াত নো। অবশ্য রয়টার্সের কাছে চোই স্বীকার করেছেন, সঠিক বয়স ১৬ জানার পরও মায় মায়াত নোকে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন আয়োজকেরা।