
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক মেহতাব খানম। তিনি আপনার মানসিক বিভিন্ন সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান দেবেন। অল্প কথায় আপনার সমস্যা তুলে ধরুন।—বি. স.
সমস্যা
১৭ বছর বয়সে আমার একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেম হয়। সেটি ২০০৪ সালের কথা। তখন তিন মাস পর পর তার সঙ্গে আমার দেখা হতো। ফোনে প্রতিদিন ২০০ মিনিট পর্যন্ত কথা বলতাম। ২০১১ সালে প্রমাণ হয়, আমার সঙ্গে সম্পর্ক থাকা অবস্থায় অন্য ছেলের সঙ্গে সে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। তার ভিডিওচিত্রও প্রকাশ হয়। এরপর আমি তার সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ রাখিনি। বর্তমানে আমার স্ত্রী ও একটি সন্তান আছে। ওই মেয়েটির এখনো বিয়ে হয়নি। সে একটি ব্যাংকে চাকরি করে। সে বারবার আমাকে ফোন করে বিরক্ত করছে। বারবার বিয়ে করার জন্য বলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
পরামর্শ
যখন মেয়েটির সঙ্গে তোমার সম্পর্ক শুরু হয়েছিল তখন তোমার বয়স কম ছিল। অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ হলে ঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হয়। আমার মনে হয় প্রচুর কথা বলার পরও তোমাদের মধ্যে আস্থা এবং সম্মানের জায়গাটি তৈরি হয়নি। মেয়েটির এ ধরনের ভিডিও কি তুমি নিজে দেখেছ? অনেক সময় কিন্তু প্রযুক্তির বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে অনেকের ব্যক্তিগত ও সামাজিক মর্যাদার ওপর আঘাত করা হয়। একজনের চেহারায় অন্যজনের দেহ জুড়ে দিয়ে বিশেষ কারও ভিডিও হিসেবে চালানো হয়েছে।
মেয়েটি যদি সত্যিই নৈতিকতাবহির্ভূত কোনো কাজ করে থাকে, তুমি তো তার কাছে এর ব্যাখ্যা চাইতে পারতে। তুমি লিখেছ এর পর থেকে ওর সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ রাখোনি। তাহলে সে যে এখন ব্যাংকে কাজ করছে এবং অবিবাহিত এই খবরটি কীভাবে জানতে পারলে?
এখন ওর ফোনের জবাব দিয়ে তো আবারও ওর প্রতি পুরোনো আবেগ অনুভব করতে পারো, তাই না? সে তোমাকে বিয়ে করার জন্য চাপ সৃষ্টি করলে তাতে সিদ্ধান্তহীনতা তৈরি হওয়ার তো কথা নয়। তুমি কি নিশ্চিত যে মেয়েটির প্রতি এখন তোমার রাগ ও ঘৃণা ছাড়া কিছু নেই?
যদি তোমার স্ত্রী ও সন্তানের প্রতি যত্নশীল ও দায়িত্ববান হতে চাও তাহলে তো শুধু একবার ওর সঙ্গে কথা বলে খুব দৃঢ়তা ও ভদ্রতার সঙ্গে তাকে স্পষ্টভাবে তোমার সিদ্ধান্তটি জানিয়ে দিতে পারতে। আশা করি, নিজের মনটিকে ভালোভাবে যাচাই করে নিয়ে তুমি অবিলম্বে এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার মতো মনের জোর তৈরি করতে পারবে।