১০৮টি কদম ফুল

আষাঢ়ের ফুল কদম। কিন্তু আমাকে যদি কারোর আবদার মেটানোর জন্য শ্রাবণ কিংবা ভাদ্র মাসে কদম জোগাড় করতে 
বলা হয়, তাহলে তার চেয়ে দুঃসাধ্য সাধন আর কী হতে পারে? তা-ও আবার দু-একটি নয়, ১০৮টি কদম ফুলই তার চাই।
১০৮টি কেন? সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই ‘রমার হাতে ১০৮টি নীল পদ্ম’ থেকে ১০৮ সংখ্যাটি নেওয়া আর ‘নীল পদ্ম’র
স্থলে ‘কদম’ চাওয়া হয়েছিল আমার কষ্টটাকে সহজ করে দিতে।
ইট-কংক্রিটের এই ঢাকার মধ্যে শুরু হয়ে গেল আমার অবেলার ১০৮টি কদম ফুল খোঁজার প্রাণান্ত চেষ্টা। এই পাগলামির
কাছে হার মেনেই বোধ হয় সেবার দেখা দিয়েছিল একটি মাত্র বারোমাসি কদম ফুল। সেটাই আমি তাকে সেবার জোগাড়
করে দিয়েছিলাম, আর সেই সঙ্গে শর্ত থেকে গিয়েছিল, বাকি ১০৭টি কদম ফুল তাকে এনে দিতে হবে এবার আষাঢ়ে।
এখন আষাঢ় মাস, চারদিকে সব গাছে কদম ফুল। অল্প কষ্টেই তাই জোগাড় করে ফেলতে পারলাম ১০৭টি কদম। আধা
বালতি পানিতে সব কটি কদম ফুলের গোড়া ভিজিয়ে রাখলাম সারা রাত, সকালবেলাতেই যাতে তরতাজা কদম ফুলগুলো
পৌঁছে দিতে পারি তাকে।
পরদিন সকাল হলো, কিন্তু আমার কদম ফুলগুলো আর পৌঁছানো হলো না তার কাছে। আর কোনো দিন পৌঁছাবেও না সেই
কদম ফুলগুলো।
ছোবায়েল আরাফি, ঢাকা কলেজ, ঢাকা