৪২০ সমাচার

ফোরটোয়েন্টি বা ৪২০। সংখ্যাটি শুনলেই মনে হয় কোনো প্রতারক বা ভণ্ডের কথা। বাংলাদেশে আইনের ধারা অনুযায়ী এটি প্রতারণার সমার্থক শব্দ। যেহেতু একেক দেশে একেক সংস্কৃতি; তাই দেশভেদে ৪২০-এর অর্থও ভিন্ন।
গতকাল বুধবার এই ফোরটোয়েন্টির অর্থ ও উৎস বা ইতিহাসের কথা তুলে ধরেছে যুক্তরাজ্যের দ্য ইনডিপেনডেন্ট অনলাইন।
বেশির ভাগ দেশেই গাঁজা একটি নিষিদ্ধ বস্তু। কিন্তু বিশ্বজুড়ে বন্ধ রাখা যায়নি গাঁজার চাষ। অনেক দেশে আবার গাঁজা খাওয়া বৈধও। কিন্তু বছরের একটি নির্দিষ্ট দিনে উৎসব করে গাঁজা খাওয়া তা ঠিক ঠিক নিঃসংকোচে বিশ্বাস করার মতো নয়।
তবে আপনি বিশ্বাস করবেন না বলে উৎসব তো আর বন্ধ থাকবে না। প্রতিবছরের এপ্রিল মাসের ২০ তারিখ গাঁজায় অনুরক্তদের উৎসবের দিন। সারা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এদিন আয়োজন করে প্রকাশ্যে গাঁজা খাওয়া হয়। সঙ্গে থাকে সংগীতের আয়োজন। চলে দিনব্যাপী গাঁজা সেবন। একে ইংরেজিতে বলে উইড ডে। আবার এপ্রিলের ২০ তারিখ আয়োজিত হয় বলে একে ‘৪২০ বা ৪/২০’ নামেও ডাকা হয়। ৪২০ হয়ে দাঁড়িয়েছে গাঁজা-সংশ্লিষ্ট সংস্কৃতির ‘কোড নেম’।
কিন্তু কেন বেছে নেওয়া হলো ৪২০ সংখ্যাটিকে? এ নিয়ে নানা মত চালু আছে। শহুরে মিথ অনুযায়ী ৪২০ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় চালু গাঁজাবিরোধী আইন। তবে আদতে যুক্তরাষ্ট্রে ৪২০ নম্বর আইনটি উন্মুক্ত স্থানে বাধা সৃষ্টিকারীদের প্রতিরোধে প্রয়োগ করা হয়।
হাফিংটন পোস্ট বলছে, ক্যালিফোর্নিয়ায় গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে পাঁচজন স্কুলশিক্ষার্থী গাঁজা খাওয়ার গুপ্ত নাম বা কোড নেম হিসেবে ৪২০ ব্যবহার করত। ওই শিক্ষার্থীরা স্কুলের বাইরে ঠিক বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে একত্র হওয়ার জন্য এ সংখ্যা ব্যবহার করেছিল। পরে এটিই সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এবং নিষিদ্ধ বস্তু গ্রহণে লুকোচুরির ব্যাপারটিও সহজ হয়ে ওঠে। কারণ, ৪২০ বললে কোনো অভিভাবকই বুঝতে পারতেন না যে এতে গাঁজার কথা বলা হচ্ছে।
ওই পাঁচজনের একজন স্টিভ ক্যাপার বলেন, ‘গাঁজা খাওয়ার কথা সরাসরি বলার চেয়ে শুধু ৪২০ বললেই হতো। এতে করে শিক্ষক বা অভিভাবক—কেউ ঘুণাক্ষরেও কিছু টের পেতেন না।’
পরে এই পাঁচ বন্ধু ‘গ্রেটফুল ডেড’ নামের একটি ব্যান্ড দলের সঙ্গে সময় কাটাতেন। আর ওই ব্যান্ড দলের মাধ্যমেই গাঁজার সমার্থক হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে ৪২০ সংখ্যাটি। আর সেটি উদ্যাপন করতেই সারা পৃথিবীতে পালিত হয় উইড ডে।