'কলপ দিয়ে একদিন দুর্নীতিও কমিয়ে দেব'

‘কলপ দিয়ে একদিন দুর্নীতিও কমিয়ে দেব’ এবং আনোয়ারস স্পেশাল চুলের কলপ। প্রচ্ছদ: জুনায়েদ আজীম চৌধুরী
‘কলপ দিয়ে একদিন দুর্নীতিও কমিয়ে দেব’ এবং আনোয়ারস স্পেশাল চুলের কলপ। প্রচ্ছদ: জুনায়েদ আজীম চৌধুরী

খবর: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে দুই পক্ষের মতপার্থক্য নিরসন নিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনেই বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন মেয়র পদে মনোনয়ন পাওয়া সেলিনা হায়াৎ আইভী ও স্থানীয় সাংসদ শামীম ওসমান।

২২ নভেম্বর রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বৈঠকের সময় একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ দেন। অভিযোগ খণ্ডনের সময় একে অপরের প্রতি আঙুল উঁচিয়েও কথা বলেন তাঁরা। তাঁদের এই আচরণে বিরক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও নারায়ণগঞ্জের একাধিক নেতার সূত্রে এসব কথা জানা গেছে।

বৈঠক সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় ভীষণ মনঃক্ষুণ্ণ হন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করতে চান। তখন প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রতি কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলেন, তাঁকে তিনি অনেক পছন্দ করেন। জিজ্ঞাসা করেন, তাঁর বয়স কত হয়েছে। তখন তিনি বলেন, ৬২ বছর। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চুল দেখে তো মনে হয় না।’ তিনি বলেন, ‘কলপ দিয়ে থাকি তো।’

এরপর প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত নির্বাচনে শামীমকে মনোনয়ন দিয়েছি, তুমি (আনোয়ার) আইভীর পক্ষে কাজ করেছ। এবার আইভীকে মনোনয়ন দিলাম। তুমি তাঁর পক্ষে না। যদি ইচ্ছা হয়, তাহলে পদত্যাগ করো। বিদায় দিয়ে দেব।’ (সূত্র: প্রথম আলো, ২৩ নভেম্বর ২০১৬)

.
.

রস+আলো: কেমন আছেন?
আনোয়ার হোসেন: খুব ভালো! খুব ভালো!
র. আ.: শুনলাম, আপনি নাকি পদত্যাগ করছেন?
আ. হো.: বি স্ট্রেইট। শুনলাম-ফুনলাম না বলে সোজাসুজি জিজ্ঞেস করুন। প্যাঁচগোছ একদম পছন্দ না আমার।
র. আ.: সরি! সত্যিই পদত্যাগ করছেন নাকি?
আ. হো.: কেমন উদ্ভট প্রশ্ন! মিথ্যা পদত্যাগ বলতে আবার কিছু আছে নাকি?
র. আ.: সরি সরি! আসলে জানতে চাইছি যে আপনি পদত্যাগ করছেন কি না?
আ. হো.: হ্যাঁ...না মানে এমনটা ভেবেছিলাম। কিন্তু...
র. আ.: কিন্তু?
আ. হো.: বয়স কমছে তো, ফলে এত তাড়াতাড়ি পদত্যাগ করি কী করে!
র. আ.: বয়স কমছে মানে?
আ. হো.: আমার বয়স যে ৬২, এটা দেখে মনে হয়?
র. আ.: মোটেও না! মনে হয়, সদ্যই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে বেরিয়েছেন।
আ. হো.: হুঁ হুঁ, এখানেই তো আটকে গেলাম! আসলে আটকে দিলাম বলতে পারেন। বয়সটা এক জায়গায় আটকে রাখতে পেরেছি বলেই কিন্তু আজ আমি সফল।
র. আ.: তো এই সাফল্যের রহস্য কী?
আ. হো.: সাফল্যের রহস্য বলতে নেই। তবে আপনাকে বলতে সমস্যা নেই। কারণ, রস‍+আলোয় প্রকাশিত কোনো কথা কেউ বিশ্বাস করবে না!

র. আ.: হ্যাঁ, তা তো করবে না। কারণ, আমরা তো আপনাদের কাণ্ডকীর্তিই তুলে ধরি; যা এক কথায় অবিশ্বাস্য। সে যা হোক, রহস্যটা বলুন।

আ. হো.: খোঁচা দিলেন মনে হচ্ছে! আসলে এটাই তো খালি পারেন। তো রহস্যের কথা বলছিলেন, আমার সাফল্যের রহস্য হলো কলপ।

র. আ.: কলপ? মানে কলপই আপনার পদত্যাগ আটকে দিল? কিন্তু কীভাবে?

আ. হো.: কলপ দিয়ে থাকি তো, ফলে আমার বয়স কম দেখায়। আর এ কারণেই আমার পদত্যাগের বিষয়টা একটা জায়গায় আটকে গেছে।

র. আ.: বাহ্‌, বেশ বেশ। তো এই কলপ দিয়ে শুধু বয়সই কমাবেন...?

আ. হো.: না না, শুধু বয়স কেন? এই কলপ দিয়ে অন্যায়, অবিচার সবই কমানোর জন্য গবেষণা করছি আমি!

র. আ.: এটা তো যুগান্তকারী গবেষণা!

আ. হো.: তা তো বটেই! দেখবেন, এই কলপ দিয়ে একদিন দুর্নীতিও কমিয়ে দেব।

র. আ.: সেদিন কি তাহলে এই কলপ দিয়ে সেলিনা হায়াৎ আইভী আর শামীম ওসমানের দূরত্বও কমিয়ে দিয়েছিলেন?

আ. হো.: হা হা হা! ভাই, আমি বিনয়ী মানুষ! সব ক্রেডিট তো নিজে নিতে পারি না!

র. আ.: আচ্ছা, এই বিনয়ের ওপরে যদি কলপ মাখানো হয়, তাহলে কি বয়সের মতো বিনয়ও কমে যাবে?

আ. হো.: দূর মিয়া, আপনি বেশি প্যাচাল পাড়েন! যান তো এখন। আপনাদের বসতে দিলে শুতেও চান। বিনয়ের কী বোঝেন আপনারা, হ্যাঁ? বিনয়ী মানুষ দেখেছেন কখনো? গেট লস্ট...

কাল্পনিক সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন: শরীফ মজুমদার