সাবিলা নূরের সিজিপিএ জানেন?

সিনেমা হলগুলোতে চলছে সাবিলা নূর–এর তাণ্ডব। নাটক, ওয়েব সিরিজ, আর সম্প্রতি চলচ্চিত্রে সাফল্য পাওয়া এই অভিনেত্রী কিন্তু পড়ালেখাতেও ভালো। আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (এআইইউবি) থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক করেছেন তিনি। সিজিপিএ ৩ দশমিক ৯৭ (৪-এর মধ্যে)। অভিনয়ের রঙিন দুনিয়ায় কাজের পাশাপাশি কীভাবে পড়ালেখাতেও মনোযোগ ধরে রেখেছিলেন তিনি? শুনুন তাঁর মুখ থেকেই।

সাবিলা নূর
ছবি: কবির হোসেন

আমার স্নাতক শেষ হয় ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এআইইউবিতে যখন পড়েছি, তখন কিন্তু টেলিভিশনের জন্যও কাজ করতাম সমানতালে। সব সামাল দিয়ে ৩ দশমিক ৯৭ সিজিপিএ ধরে রাখা খুব সহজ ছিল না।

স্কলাস্টিকা থেকে ও লেভেল এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল থেকে প্রাইভেট শিক্ষার্থী হিসেবে এ লেভেল শেষ করি। ইংরেজি সাহিত্যের প্রতি একটা ভালো লাগা কাজ করত। সে জন্যই ‘বিএ ইন ইংলিশ লিটারেচার’ বেছে নেওয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন নাটকে তো বটেই, বিজ্ঞাপনেও কাজ করতে হয়েছে। কাজ ও পড়ালেখা—দুটোর ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করেছি সব সময়। যেদিন সকালে ক্লাস থাকত, সেদিন দুপুরে বা বিকেলে কাজ রাখার চেষ্টা করতাম। দেখা যেত, শুটিংয়ের ফাঁকফোকরে কোনো নিরিবিলি জায়গায় বসে ক্লাসের প্রেজেন্টেশনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, অ্যাসাইনমেন্ট করছি। এ ক্ষেত্রে আমার অভিনয় অঙ্গনের সহকর্মী বলি, কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-সহপাঠী, সবাই খুব সহযোগিতা করেছেন। আমার সৌভাগ্য, পুরো বিশ্ববিদ্যালয়জীবনেই এই সহযোগিতা অব্যাহত ছিল। কখনো ঘুমে ছাড় দিতে হয়েছে, কখনো বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আড্ডা-ঘোরাঘুরিতে ছাড় দিয়েছি, কিন্তু পড়ালেখায় ‘সিরিয়াসনেস’টা ধরে রাখতে চেয়েছি সব সময়।

আগ্রহের বিষয় আর পড়ালেখার বিষয় যদি মিলে যায়, তাহলে শিক্ষাজীবনও সহজ হয়ে যায় অনেকখানি। ফিকশন আমার খুব পছন্দ। এডগার অ্যালান পোর হরর গল্প গোগ্রাসে গিলেছি। জাপানি লেখক ওসামু দাজাইয়ের নো লঙ্গার হিউম্যান বইটা আছে পছন্দের তালিকায়। এ ছাড়া দস্তয়েভস্কি, আলবেয়ার কামু, জাঁ–পল সার্ত্রের দর্শনভিত্তিক লেখা আমার খুব পছন্দ। সাহিত্যনির্ভর সিনেমাও দেখি সুযোগ পেলেই। ড্যারেন অ্যারোনোফস্কির রিকুয়েম ফর আ ড্রিম খুব আগ্রহ নিয়ে দেখেছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় এই সিনেমা নিয়ে একটা বড় নিবন্ধও লিখেছি।

আরও একটা বড় সমর্থনের কথা বলতেই হয়। সেটা পরিবার। আমাদের বাসায় পড়াশোনা কিংবা শিল্পসাহিত্যের চর্চার পরিবেশ ছিল সব সময়। বড় বোন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) পড়েছে। আর ভাই আমার থেকে ১৪ বছরের বড়—সে–ও ছিল এআইইউবির ছাত্র। ওরাও ক্যাম্পাসে নিজেদের মতো করে সহশিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত ছিল। এটা সম্ভব হয়েছে মূলত আমার মায়ের উৎসাহে। মা চাইতেন, আমরা যেন পড়ালেখার পাশাপাশি আরও নানা কিছুতে যুক্ত হই।

বিশ্ববিদ্যালয়ে একবার একটা লেখালেখির প্রতিযোগিতায় কবিতা লিখে পুরস্কার পেয়েছিলাম। ইংরেজি ভাষা আর সাহিত্যটা ভালো লাগলেও গণিত আর পরিসংখ্যান আমার একদম পছন্দ না। ভাগ্যিস, নিজের পছন্দের বিষয় নিয়েই পড়তে পেরেছি। নইলে হয়তো ভালো সিজিপিএ ধরে রাখা কঠিন হয়ে যেত।

আরও পড়ুন