যে ৪ কারণে ডিম সেদ্ধ পানি ফেলে দেবেন না
আমরা প্রায় প্রতিদিনই ডিম সেদ্ধ করি এবং সেদ্ধ করা পানি ফেলে দিই। কিন্তু এই ডিম সেদ্ধ পানিতেও রয়ে যায় ডিমের গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। ডিম সেদ্ধ করার সময় ডিমের খোসা এবং ডিমের সাদা অংশ থেকে কিছু পুষ্টি উপাদান পানিতে চলে আসে, যা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায়।
ডিম সেদ্ধ পানি কেন এত কার্যকর
ডিম সেদ্ধ করা পানিতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম এবং সামান্য পরিমাণ ফসফরাস ও আয়রন থাকে। যা গাছপালা, চুলের যত্ন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং কম্পোস্ট সারের জন্য উপকারী। এই পানি মাটিতে দিলে মাটির গুণগত মান উন্নত হয়, মাথার চুল মজবুত হতে পারে, আর ঘরগৃহস্থালির বিভিন্ন জিনিস পরিষ্কার করতেও ব্যবহার করা যায়। এর পাশাপাশি কম্পোস্ট সার বানাতেও কাজে লাগে।
১. গাছের জন্য প্রাকৃতিক সার
ডিম সেদ্ধ পানিতে প্রচুর ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়াম থাকে, যা গাছের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ডিম সেদ্ধ পানি ঠান্ডা করে গাছের গোড়ায় দিলে মাটির গুণগত মান উন্নত হয় এবং গাছের পুষ্টিগ্রহণের ক্ষমতা বাড়ে। ক্যালসিয়াম গাছের শিকড়ের বিকাশে সাহায্য করে, ম্যাগনেশিয়াম ক্লোরোফিল উৎপাদন বাড়িয়ে গাছকে আরও সবুজ ও সতেজ করে তোলে। তবে গরম পানি গাছে প্রয়োগ করলে গাছ মরে যাবে, তাই অবশ্যই পানি ঠান্ডা করে নিতে হবে।
২. চুলের প্রাকৃতিক পরিষ্কারক
শুনতে অদ্ভুত লাগতে পারে, তবে ডিম সেদ্ধ পানি চুলের জন্য দারুণ প্রাকৃতিক পরিষ্কারক হিসেবে কাজ করতে পারে। এই পানিতে থাকা খনিজ উপাদান চুলের গোড়া মজবুত করতে, খুশকি কমাতে এবং চুল উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করে। প্রথমে ডিম সেদ্ধ পানি ঠান্ডা হতে দিন। তারপর সাধারণ কলের পানিতে চুল ধুয়ে নিন। আর শেষবার ধুয়ে নিন ঠান্ডা করে নেওয়া ডিম সেদ্ধ পানি দিয়ে। বিশেষ করে যাঁদের চুল শুষ্ক ও ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁদের জন্য এই পানি বেশ উপকারী। এতে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদান মাথার ত্বক ও চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগায়। এ ছাড়া ডিমের খনিজ উপাদান চুলের স্থিতিস্থাপকতা ও মসৃণতা ফিরিয়ে আনতেও সাহায্য করে।
৩. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় ব্যবহার
ডিম সেদ্ধ পানি শুধু গাছ ও চুলের জন্যই নয়, ঘরগৃহস্থালি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজেও ব্যবহার করা যায়। এর সামান্য ক্ষারীয় উপাদান (অ্যালকালাইন) চর্বি ও ময়লা তুলতে সাহায্য করে। রান্নাঘরের বেসিন, চুলার ওপরের অংশ বা আঠালো দাগ পরিষ্কারে ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া এই পানি ডিশওয়াশার বা ওয়াশিং মেশিনে ব্যবহার করলে জিনিসপত্র হবে ঝকঝকে। সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হলো, রাসায়নিক ক্লিনারের পরিবেশবান্ধব বিকল্প হতে পারে এই পানি।
৪. কম্পোস্টিংয়ে সহায়তা করে
ডিম সেদ্ধ পানিতে থাকা খনিজ উপাদান জৈব বর্জ্য দ্রুত ভাঙতে বা পচতে সাহায্য করে। ঠান্ডা করা ডিম সেদ্ধ পানি কম্পোস্টে ঢালা হলে উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায়, যা কম্পোস্টকে আরও কার্যকর করে তোলে। এ ছাড়া এটি কম্পোস্টের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে, যা জৈব বর্জ্য দ্রুত পচতে সহায়তা করে।
সূত্র: ইয়াহু