আমার ভাবি আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন

পাঠকের প্রশ্ন বিভাগে আইনগত সমস্যা নিয়ে নানা রকমের প্রশ্ন পাঠিয়েছেন পাঠকেরা। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মিতি সানজানা নির্বাচিত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন এবার।

পরামর্শ দিয়েছেন মিতি সানজানা

প্রশ্ন: আমরা দুই ভাই। আমি ছোট। আমাদের বাড়িতেই আমার ভাই আলাদা থাকে। আমি আব্বু-আম্মুর সঙ্গে থাকি। কিছুদিন পরপর সামান্য বিষয় নিয়ে আব্বু-আম্মুর সঙ্গে ঝগড়া বাধায় আমার ভাবি। রাগের বশে মাঝেমধ্যে ভাবিকে আমাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন আমার আব্বু। ইদানীং আত্মহত্যা করে আমাদের ফাঁসানোর হুমকি দিচ্ছেন আমার ভাবি। তিনি এই বাড়িতে থাকতে না পারলে আমাদেরও থাকতে দেবেন না বলে হুমকি দেন। এখন আমরা আইনানুগ কী ব্যবস্থা নিতে পারি।

ইমরান

উত্তর: প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ। প্রশ্ন থেকে বুঝতে পারছি আপনার ভাবি আত্মহত্যা করার হুমকি দিচ্ছেন, সেই সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে আপনার পরিবারকে ভীতি প্রদর্শন করছেন। এ জন্য তাঁকে অবশ্যই একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। অনেকের মধ্যে এ ধরনের আবেগপ্রবণতা দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রে কেউ কেউ আবার সত্যি সত্যিই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

এবার আসি আইনি দিকে। দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ৩০৬ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি আত্মহত্যা করে, তাহলে যে ব্যক্তি আত্মহত্যায় সাহায্য করবে বা প্ররোচনা দেবে, সেই ব্যক্তিকে ১০ বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত করা হবে।

আরও পড়ুন

সাক্ষ্য আইন ১৮৭২-এর ৩২ ধারায় বলা আছে, আত্মহত্যাকারীর মৃত্যুর আগে রেখে যাওয়া সুইসাইড নোট প্ররোচনা দানকারীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য হিসেবে গণ্য হবে। তবে শুধু একটি সুইসাইড নোটের ভিত্তিতে কাউকে শাস্তি দেওয়া যাবে না। সুইসাইড নোটের সমর্থনে আরও সাক্ষ্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে। তাই আপনার পরিবারের সঙ্গে কোনো মনোমালিন্যের সূত্র ধরে আপনার মা-বাবাকে দায়ী করে তিনি যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটান, তবে অবশ্যই তাঁদের আইনগত জটিলতার মুখে পড়তে হবে। সাক্ষ্য প্রমাণ উপস্থাপনের মাধ্যমে কারও বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করা গেলে তখনই শাস্তি প্রদান করা যাবে।

আপনার মা-বাবার উচিত হবে অতিদ্রুত মেয়েটির পরিবারের লোকজনদের বিষয়টি জানানো। সেই সঙ্গে আপনার ভাইয়ের উচিত আপনার ভাবিকে একজন মানসিক রোগবিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়া। তা ছাড়া আপনি যদি মনে করেন পরিস্থিতি গুরুতর, সে ক্ষেত্রে নিকটস্থ থানায় গিয়ে এই মর্মে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে রাখতে পারেন।

আরও পড়ুন

লেখা পাঠানোর ঠিকানা

পাঠকের প্রশ্ন পাঠানো যাবে ই–মেইলে, ডাকে এবং প্র অধুনার ফেসবুক পেজের ইনবক্সে। ই–মেইল ঠিকানা: [email protected] (সাবজেক্ট হিসেবে লিখুন ‘পাঠকের প্রশ্ন’)

ডাক ঠিকানা

প্র অধুনা, প্রথম আলো, প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবন, ২০–২১ কারওয়ান বাজার, ঢাকা ১২১৫। (খামের ওপর লিখুন ‘পাঠকের প্রশ্ন’)  ফেসবুক পেজ: fb.com/Adhuna.PA