ভবিষ্যতের স্থপতির পুরস্কার বুয়েট, চুয়েট, ইউএপির শিক্ষার্থীর

বুয়েটের রাহুল হয়েছেন প্রথম
ছবি: সংগৃহীত

‘কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড ফর ফিউচার আর্কিটেক্ট ২০২২’ প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করা হয় মূলত ভবিষ্যৎ স্থপতিদের অনুপ্রেরণা দিতে। এবারের প্রতিযোগিতায় প্রথম সেরার পুরস্কার জিতেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তাওরেম রাহুল সিংহ। তিনি বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী। দ্বিতীয় হয়েছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) স্থাপত্য বিভাগের মাহির অরিত্র। আর তৃতীয় হয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের (ইউএপি) মো. নাফিউ।

প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের থিসিস প্রকল্পের নকশার পোস্টার ও মডেল জমা দিতে হয়। গত ১২ নভেম্বর জমা নেওয়ার পর পাঁচ বিচারক নিয়ে গঠিত জুরি প্যানেল প্রকল্পগুলো যাচাই করেন। আলোচনা-নিরীক্ষার পর বিজয়ী নির্বাচন করা হয়। ১৭ নভেম্বর ঢাকার আগারগাঁওয়ে দ্য ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্ট বাংলাদেশ (আইএবি) সেন্টারে ঘোষণা করা হয় চূড়ান্ত ফলাফল।

প্রতিযোগিতার প্রথম পর্যায়ে ১২টি আইএবি স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগ থেকে ৩টি করে মোট ৩৬টি প্রকল্প মনোনীত হয়। তিনজনকে দেওয়া হয় সেরার পুরস্কার। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারীর জন্য পুরস্কারের অঙ্ক ছিল যথাক্রমে ১ লাখ, ৭৫ হাজার ও ৫০ হাজার টাকা। এসবের বাইরে তিনজনকে সম্মাননা পুরস্কারও দেওয়া হয়। তাঁরা হলেন বুয়েটের তাওরেম সানানু, চুয়েটের নাসিফ সাদমান ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আতিকা ফারজানা বারি।

দ্বিতীয় হয়েছে মাহির
ছবি: সংগৃহীত

প্রথম হওয়া রাহুলের প্রকল্পের বিষয় ছিল ঐতিহাসিক গাঁজামহলের সংরক্ষণ। রাহুল বলেন, ১৯১৫ সালে নওগাঁয় গাঁজা সমবায় সমিতির জন্ম হয়। অন্য দেশে গাঁজা রপ্তানি করে রাজস্ব অর্জন করত তারা। বলা হয়, নওগাঁ শহরের প্রাথমিক স্থাপনাগুলো গাঁজা সমিতি প্রতিষ্ঠা করেছিল। কিন্তু ১৯৭৪ সালে গাঁজা অবৈধ ঘোষণার পর সমিতির আয়ের উৎস ব্যাহত হয়। এরপর অনেক স্থাপনা পরিত্যক্ত হয়ে যায়। এই স্থাপনাগুলো সংরক্ষণ, একই সঙ্গে মাদকের কুফল সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার উদ্দেশ্যেই একটি প্রকল্প দাঁড় করিয়েছেন রাহুল। যে প্রকল্প পেয়েছে প্রথম পুরস্কার। গাঁজার গুদামঘরগুলোকে বইঘর, লাইব্রেরি, স্টেশনারি দোকান হিসেবে সাজানোর পরিকল্পনা তৈরি করেছেন বুয়েটের এই ছাত্র।

সমুদ্রে বিদ্যমান কাঠামো ব্যবহার করে একটি বহুতল ভবনের নকশা করে দেখিয়েছেন চুয়েটের মাহির অরিত্র। তিনি মনে করেন, এটি গবেষণা ও পর্যটনে নতুন সুযোগ তৈরি করবে। মাহির বলেন, ‘মূলত এই প্রতিযোগিতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের থিসিস প্রজেক্টটি মূল্যায়ন করা হয়। পরে প্রতিযোগিতায় প্রেজেন্টেশন, পোস্টার ও মডেল নির্মাণের জন্য এক মাস সময় পায়। সেই সময়ে নিজেকে প্রস্তুত করেছি।’

টিকুইল গ্রাম নিয়ে কাজ করে তৃতীয় হয়েছেন নাফিউ
ছবি: সংগৃহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার টিকুইল গ্রাম নিয়ে কাজ করেছেন মো. নাফিউ। লোকে এই গ্রামকে মূলত আলপনা গ্রাম নামে চেনে। এই গ্রাম নিয়ে কীভাবে গবেষণা হতে পারে, সেটিই তুলে ধরেছেন তিনি।

তিন স্থাপত্যের শিক্ষার্থী মনে করেন, এই পুরস্কার তাঁদের আরও ভালো কিছু করতে প্রেরণা জোগাবে।