সাপ উদ্ধারে গিয়ে নানা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার মুখোমুখিও হয়েছেন শাকীব
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার আগ থেকেই সাপ উদ্ধার করেন তাসবীন শাকীব। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের এই শিক্ষার্থীর মুখ থেকেই তাঁর সর্পপ্রীতির শুরুর গল্পটা শোনা যাক, ‘ছোটবেলা থেকেই সরীসৃপের প্রতি আমার খুব কৌতূহল। সাপ, টিকটিকি, গুইসাপ দেখলেই মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতাম। আমার আশপাশের মানুষের মধ্যে বিষয়টা কখনো লক্ষ করিনি। ভাবতাম, আমি হয়তো একাই এমন। আমার এই দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটায় “ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ অর্গানাইজেশন” (বর্তমান নাম ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন) নামে ফেসবুকের একটি গ্রুপ। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারি, আমার মতো অনেকেই সেখানে আছেন। দেরি না করে তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাই। প্রশিক্ষণ নিয়ে সাপ উদ্ধার শুরু করি।’
ঢাকার সাভারে শাকীবের বাসা। নিজ এলাকা ছাড়াও মানিকগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও মুন্সিগঞ্জে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। এ সময় কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সামনেও তাঁকে পড়তে হয়েছে। তাসবীন শাকীব যেমন বললেন, ‘গত বছর রাসেলস ভাইপারের কামড় খেয়ে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক সাপুড়ে ভর্তি হন। গ্রামবাসী সেই সাপ মাছ ধরার জালে করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। বন বিভাগের পরামর্শে ঢাকা থেকে আমি ও আমাদের দুই সদস্য সেখানে যাই। তখন কিছু দালালের খপ্পরে পড়ি। তাঁরা সাপুড়ের পরিবার ও গ্রামবাসীকে ফুঁসলিয়ে আমাদের কাছে টাকা দাবি করেন। আমাদের একটি ঘরে আটকে রাখেন। স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় আমরা পরে সাপ উদ্ধার করতে সক্ষম হই। এ বছরও মানিকগঞ্জের চর হরিরামপুরে রাসেলস ভাইপার উদ্ধার করতে গিয়ে একই রকম ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি। সেখানে এক জেলের জালে রাসেলস ভাইপার আটকে পড়ে। প্রচলিত গুজবে বিশ্বাস করে তিনি আমাদের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। সেখানেও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় সাপটিকে উদ্ধার করে আমরা নিয়ে আসি।’
তিন বছরের বেশি সময় সাপ উদ্ধার কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত এই তরুণ। ইতিমধ্যে ৪০টির বেশি সাপ উদ্ধার করেছেন। এর মধ্যে বিষধর রাসেলস ভাইপার, ছোট কালকেউটে ও গোখরা অন্যতম। তবে সবচেয়ে বেশি যে সাপ উদ্ধার করেছেন, সেটি নির্বিষ ঘরগিন্নি।