সবচেয়ে অসুবিধায় পড়তাম ইংরেজি ব্যাকরণ বই নিয়ে

বছরের শুরু থেকেই স্কুলের পাঠ্যবই নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। কদিন আগেই যাঁরা স্কুলের গণ্ডি পেরিয়েছেন, এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন, তাঁদের কী অভিমত? কেমন হওয়া উচিত স্কুলের পাঠ্যবইগুলো? নানা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন তাঁদের অভিমত। এখানে পড়ুন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ ও প্রকৌশলবিদ্যা বিভাগের আরমান শাহরিয়ার এর লেখা।

আরমান শাহরিয়ার
ছবি: সংগৃহীত

ছোট্ট একটা ঘটনা দিয়ে শুরু করি। আমি নিয়মিত স্কুলে উপস্থিত থাকতাম। দুই–একবার এ জন্য পুরস্কারও পেয়েছি! সম্ভবত তখন দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ি। কোনো এক কারণে স্কুল কামাই করলাম। বাবা জানতে পেরে বললেন, ‘স্কুলে না গেলে সব বই বিক্রি করে দেব।’ শুনে আমার খুব মন খারাপ হয়েছিল। এ জন্য নয় যে পড়া বন্ধ হয়ে যাব। কারণ, স্কুলের বইগুলোর প্রতি একটা অন্য রকম টান ছিল। মনে হচ্ছিল, বই বিক্রি করে দিলে খুব প্রিয় একটা কিছু হারিয়ে ফেলব!

বাবা অবশ্য বই বিক্রি করে দেননি। স্কুলের পাঠ্যবই নিয়ে সব সময় আমার মধ্যে বিস্ময় কাজ করত। যেসব অনুশীলনে ছবি দেওয়া থাকত, সেগুলো মনোযোগ দিয়ে দেখতাম।

আমাদের পাঠ্যপুস্তকে যেসব পরিভাষা ব্যবহার করা হয়, অনেকাংশে তা আমরা হয়তো কখনোই শুনিনি বা ভবিষ্যতে শুনবও না। অনেক ক্ষেত্রে বিদেশি কিছু ভাষার উচ্চারণ দেওয়া থাকত। একেক জায়গায় উচ্চারণ একেক রকম। সবচেয়ে অসুবিধায় পড়তাম ইংরেজি ব্যাকরণ বই নিয়ে। বইয়ের আকার দেখেই ভয় পেয়ে যেতাম। প্রতিবছর ওই একই আকারের বই, একই ধরনের বাক্য। ঘুরেফিরে মুখস্থের দিকে ঝুঁকতাম। দিন শেষে ইংরেজি ভাষাটা অধরাই থেকে যেত।

আমি মনে করি, ইংরেজি ব্যাকরণের ক্ষেত্রে বছর বছর একই জিনিস না পড়িয়ে ধাপে ধাপে শেখালে সুবিধা হতো।

প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীরই কোনো না কোনো একটা বিষয়ের প্রতি অনীহা থাকে। বিজ্ঞানের ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি সম্ভবত সমাজবিজ্ঞান। মনে হতো, এই বই পড়ে আমার কী উপকার হবে! কিন্তু এখন বুঝি, নিজের জ্ঞানগুলো প্রয়োগ করতে গেলে চারপাশের সমাজ সম্পর্কে জানতে হয়। আমি সুযোগ পেলে পাঠ্যবইগুলোয় বিষয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সুন্দর সুন্দর ছবি দিতাম। কারণ, লেখার চেয়ে ছবিটাই আমাদের মনে থাকে বেশি।