এক নম্বরের আক্ষেপ থেকে ‘এক নম্বর’ রাজশাহীর আহনাফ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সি ইউনিটে (সি-টু গ্রুপ) প্রথম হয়েছেন রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের শাহরিমন আহনাফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন তানভীর রহমান

শাহরিমন আহনাফ
ছবি: সংগৃহীত

মাত্র এক নম্বরের জন্য রাজশাহী কলেজে পড়তে পারেননি শাহরিমন আহনাফ। ভর্তি হন রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজে। পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে না পারার আক্ষেপ তো ছিলই, তার সঙ্গে যোগ হয়েছিল নানাজনের সমালোচনা। আহনাফ দমে যাননি। নতুন উদ্যমে পরিশ্রম করে গেছেন। দুই বছর পর হাতেনাতে ফলও পেলেন। এ বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে (সি-টু গ্রুপ) প্রথম স্থান অধিকার করেছেন এই তরুণ। মেডিকেল ও ডেন্টালের ভর্তি পরীক্ষায় টিকেছেন এই তরুণ। আহনাফ বলেন, ‘রাজশাহীতে পরীক্ষা ভালো হয়েছিল, প্রথম হয়ে যাব ভাবিনি। দেশসেরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এত এত পরীক্ষার্থীর মধ্যে প্রথম হয়ে ভালো লাগছে।’

ভালো ফল করতে হবে—এই ছিল লক্ষ্য। একাডেমিক জীবনের শুরু থেকে সেই লক্ষ্যের পেছনে ছুটেছেন। নিজের পড়া নিজে করেছেন। মুখস্থ না করে বুঝে বুঝে পড়েছেন। মূল বিষয় সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখার চেষ্টা করেছেন। আহনাফ বলেন, ‘মা-বাবাকে কখনোই বলতে হয়নি “পড়তে বসো”। নিয়মিত পড়াশোনা আর একনিষ্ঠভাবে লেগে থাকাই আমাকে সাফল্য এনে দিয়েছে।’

আরও পড়ুন

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাকে ‘মাইন্ড গেম’ বা মনস্তাত্ত্বিক খেলা বলে উল্লেখ করে আহনাফ বলছিলেন, ‘এখানে যে যত শান্ত ও চিন্তামুক্ত থাকতে পারবে, সে তত ভালো করবে।’ আহনাফের যেহেতু প্রথম ভর্তি পরীক্ষাই ভালো হয়েছিল, তাই আত্মবিশ্বাসের কমতি ছিল না। তারই প্রতিফলন পরবর্তী পরীক্ষাগুলোয়ও দেখা গেছে।

পড়ালেখার পাশাপাশি কবিতা ও গল্প লিখতে পছন্দ করেন আহনাফ। বিতর্ক, আবৃত্তি, বক্তৃতার মতো সহশিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। একাধিক পুরস্কারও পেয়েছেন। ২০১৮ সালের সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতায় বিভাগীয় পর্যায়ে সেরা মেধাবী হয়েছেন। রচনা ও বক্তৃতা প্রতিযোগিতাতে ছিলেন জেলা পর্যায়ে সেরা। এ ছাড়া ২০১৯ সালের জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে আঞ্চলিক পর্যায়ে রানারআপ হয়েছেন এই তরুণ।

ছোটবেলা থেকেই চিকিৎসক হওয়ার প্রবল ইচ্ছা। পেশাজীবনে তাই হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ হতে চান। বলছিলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষকে চিকিৎসার জন্য যখন পাশের দেশের ওপর নির্ভর করতে দেখি, খুব খারাপ লাগে। জ্ঞান, মেধা ও শ্রম দিয়ে মানুষের পাশে থাকতে চাই। একজন মানবিক ডাক্তার হতে চাই।’