সুন্দর হাসির জন্য যা করতে হবে

সুন্দর হাসির জন্য চাই সুস্থ, ঝকঝকে, পরিষ্কার, দাগহীন দাঁতছবি: সুমন ইউসুফ

পরিপাটি পোশাকে খুব সেজেগুজে কোথাও গিয়ে আপনি যদি থাকেন গোমড়ামুখ, তাহলে আপনার এত সাজপোশাকও কিন্তু হাসির অভাবটা পূরণ করতে পারবে না। অন্তরে যদি ধারণ করেন আনন্দ, প্রাণভরে উপভোগ করেন জীবন, তাহলে আপনি নিশ্চয়ই হাসিখুশি থাকবেন। আর আপনাকে দেখাবেও দারুণ। চমৎকার একটা হাসি সাজের অপূর্ণতাকেও মিটিয়ে দিতে পারে।

আর সুন্দর হাসির জন্য চাই সুস্থ, ঝকঝকে, পরিষ্কার, দাগহীন দাঁত, চাই সুস্থ ঠোঁট। আর অবশ্যই চাই প্রাণের উচ্ছ্বাস। হাসির সময় সুন্দর মুখভঙ্গি করার চর্চাও করা যেতে পারে। তবে যে হাসি প্রাণের গভীর থেকে আসে, তার সঙ্গে অবশ্য চর্চার কোনো সম্পর্ক নেই। প্রাণখোলা হাসি এমনিতেই সুন্দর। এমনটাই বলছিলেন হারমনি স্পার আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা।

দাঁতের যত্ন

দাঁতের যত্নের নিয়মকানুন কমবেশি সবারই জানা। সেই জানা কথাগুলোই আরেকবার মনে করিয়ে দেওয়া যাক। ঢাকা ডেন্টাল কলেজের সাবেক পরিচালক ও অধ্যক্ষ ডা. এস এম ইকবাল হোসেন জানান, প্রতিবার খাওয়ার পরপরই ভালোভাবে দাঁত পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। অন্তত দুই বেলা ব্রাশ করার সময় টুথপেস্ট ব্যবহার করতে হবে। বাকি বেলায় শুধু পানি দিয়ে ভিজিয়েই ব্রাশ করতে পারবেন। মেসওয়াকও করতে পারবেন।

ভালোভাবে কুলকুচা করাও জরুরি। প্রতি বেলা ব্রাশ করার পর কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলকুচা করার অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন। গরম পানি না পেলে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতেই লবণ মিশিয়ে কুলকুচা করুন।

আর প্রতিদিন রাতে শোবার আগে অর্থাৎ দাঁত ব্রাশ ও কুলকুচার পর দাঁতের মাড়ি মালিশ করে নিতে হবে। পরিষ্কার আঙুলের সাহায্যে ওপরের মাড়িতে একবার ওপর থেকে নিচের দিকে মালিশ করুন, একবার নিচ থেকে ওপরের দিকে মালিশ করুন। একই পদ্ধতিতে এরপর মালিশ করুন নিচের মাড়িটিও। এ কাজে রোজ মাত্র একটি মিনিট বিনিয়োগ করলেই যথেষ্ট। দাঁত সুস্থ থাকবে।

সেই সঙ্গে বছরে অন্তত একবার দন্তচিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।

 

ঠোঁটের যত্ন

রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা জানালেন ঠোঁটের যত্নের কিছু উপায়।

লিপবাম তৈরির জন্য একটি স্টিলের পাত্রে বিটরুটের রস নিন ২ টেবিল চামচ, সঙ্গে ১ চা-চামচ পেট্রোলিয়াম জেলি। আরেকটু বড় একটি পাত্রে খানিকটা গরম পানি নিয়ে প্রথম পাত্রটি এই পাত্রের ওপর রাখুন, যাতে এই পানির উত্তাপে পেট্রোলিয়াম জেলি গলে যায়। এরপর প্রথম পাত্রের উপকরণ দুটিকে চামচ দিয়ে ভালোভাবে নেড়েচেড়ে মিশিয়ে নিন। কাঠের চামচ ব্যবহার করা ভালো। মেশানো হয়ে গেলে পাত্রটি সরিয়ে ফেলুন। মিশ্রণটি এবার ঢেলে রাখুন ছোট কাচের বয়ামে। ঠান্ডা হলে জমে যাবে। হয়ে গেল লিপবাম। ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন এই লিপবাম। এটি ব্যবহারে ঠোঁটে আসবে গোলাপি আভা।

বিকল্প আরেকটি লিপবামও তৈরি করতে পারেন। প্রস্তুত প্রণালিও একই রকম। কেবল উপকরণগুলো আলাদা। গোলাপের পাপড়িবাটা নিন ১ চা-চামচ, সঙ্গে ১ চা-চামচ গোলাপজল, ১ চা-চামচ পেট্রোলিয়াম জেলি আর আধা চা-চামচ গ্লিসারিন। একইভাবে এই উপকরণগুলোকে একটি স্টিলের পাত্রে নিয়ে আরেকটু বড় পাত্রে গরম পানি নিন। এই পানির ওপরে প্রথম পাত্রটি রাখা হলে পেট্রোলিয়াম জেলি গলে যাবে। তারপর সব উপকরণ একইভাবে নেড়েচেড়ে মিশিয়ে নিয়ে পাত্রটি নামিয়ে ফেলুন। কাচের বয়ামে রেখে দিন। ঠান্ডা হলে একইভাবে জমে যাবে। ফ্রিজে রেখে ব্যবহার করতে পারবেন প্রতিদিন।

সপ্তাহে এক দিন ঠোঁটের মৃতকোষ তুলে ফেলতে হবে। এ জন্য লেবুর রস নিতে হবে ২ চা-চামচ, সঙ্গে আধা চা–চামচ মধু ও সামান্য চিনি। এই মিশ্রণ দিয়ে আলতোভাবে ঘষে নিন ঠোঁট। ধোয়ার পর লিপবাম লাগাতে ভুলবেন না।