শিশুদেরও কি স্ট্রোক হতে পারে
আমরা জানি স্ট্রোক সাধারণত বয়স হলে হয়। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে কোলেস্টেরলের সমস্যা—স্ট্রোকের এসব কারণও সাধারণত বেশি বয়সে হয়ে থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিশুদেরও স্ট্রোক হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১০ লাখ শিশুর মধ্যে ২ দশমিক ৫ থেকে ১৩টি শিশু স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়।
শিশুদের স্ট্রোকের কারণ
হৃৎপিণ্ডে জন্মগতভাবে ছিদ্র থাকা বা ভালভের সমস্যা থাকলে শিশুদের স্ট্রোক হতে পারে। হৃৎপিণ্ডের যেকোনো জন্মগত ছিদ্র বা ভালভের সমস্যা থাকলে সেখান থেকে রক্তনালির চাকা (থ্রম্বাস) মস্তিষ্কে গিয়ে রক্তনালি আটকে দিয়ে স্ট্রোক হতে পারে।
মস্তিষ্কের রক্তনালির জন্মগত ত্রুটি থাকলে শিশুরা স্ট্রোক করে। মস্তিষ্কের রক্তনালির জন্মগত কিছু রোগ থাকে যেমন অ্যানিউরিজম, এভিএম অথবা ময়া ময়া রোগ। এসব সমস্যা থাকলে অল্প বয়সেই স্ট্রোক হতে পারে।
রক্ত জমাট বাঁধার জন্মগত সমস্যা থাকলে শিশুদের স্ট্রোক হতে পারে। এ ক্ষেত্রে রক্তের ঘনত্ব বেড়ে গেলে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা বেড়ে যায়। যেমন- সিকেল সেল ডিজিজ।
আরও বেশ কিছু কারণে শিশুদের স্ট্রোক হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে মস্তিষ্কের ইনফেকশন (মেনিনজাইটিস, এনকেফেলাইটিস), জন্মের সময় মাথায় আঘাত, দীর্ঘ সময় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি থাকা।
লক্ষণ ও চিকিৎসা
স্ট্রোকের লক্ষণ সব বয়সের জন্য একই। হঠাৎ মুখ বাঁকা হয়ে যাওয়া, কথা জড়িয়ে যাওয়া অথবা এক দিকের হাত-পা অবশ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি স্ট্রোকের লক্ষণ।
স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত মাথার সিটি স্ক্যান বা এমআরআই করাতে হবে। হৃৎপিণ্ডের যেকোনো জন্মগত ছিদ্র বা ভালভের সমস্যা নির্ণয়ের জন্য ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাম, বুকের এক্স-রে পরীক্ষা করা যেতে পারে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে রক্তনালির জন্মগত সমস্যা নির্ণয়ে মস্তিষ্কের এনজিওগ্রাম করার প্রয়োজন হতে পারে।