বাবাকে নিয়ে লিখে পুরস্কার পেলেন ১০ জন

এক পা, দুপা করে বাবার হাত ধরে হাঁটতে শেখা। কিংবা বাবার হাতে হাত রেখে হাঁটতে হাঁটতে আস্তে আস্তে বড় হওয়ার স্মৃতি প্রত্যেক মানুষের স্মৃতির মণিকোঠায় উজ্জ্বল হয়ে থাকে। সন্তানের ভালো-মন্দ বুঝতে পারার ক্ষমতার একটা বড় অংশ তৈরি হয় বাবার আদর্শকে ঘিরে। বাবার আদর্শই সন্তানদের ভবিষ্যৎ গঠনে প্রেরণা জোগায়। বাবা এমন একজন, জীবনে যাঁর অবদান লিখে শেষ করা যাবে না। কিন্তু নানা কারণে বাবার এ অবদান বা ভালোবাসার কথা অনেকেই মুখ ফুটে বলতে পারেন না। গত ১৯ জুন ‘বাবা দিবস’ উপলক্ষে যৌথভাবে সে সুযোগই করে দিয়েছিল গোদরেজ প্রটেক্ট ম্যাজিক হ্যান্ডওয়াশ ও প্রথম আলো ডটকম। ‘বাবা, তোমাকে বলা হয়নি...’ শিরোনামে তৃতীয়বারের মতো বাবাকে নিয়ে গল্প-অনুভূতি লেখার এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

পুরস্কারপ্রাপ্তদের সঙ্গে লেখক আনিসুল হক
ছবি: প্রথম আলো

গতকাল সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত প্রথম আলো কার্যালয়ে এ প্রতিযোগিতার ‍পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া সাত শতাধিক লেখার মধ্য থেকে সেরা ১০ জনকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রতিযোগিতার বিচারক, কথাসাহিত্যিক ও প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হক। এ সময় তিনি বলেন, ‘মনের কথা প্রকাশ করা জন্য লেখার বিকল্প নেই। যত বেশি লেখক তৈরি হবে, পৃথিবী তত বেশি সুন্দর হবে। পৃথিবীকে সুন্দর ও বাসের উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্যই বেশি বেশি লেখা উচিত।’ বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে আনিসুল হক আরও বলেন, ‘সন্তান যখন বাবাকে নিয়ে লেখে, সেটাই পৃথিবীর সেরা লেখা। এ আয়োজনের মাধ্যমে বাবাকে না-বলা কথাগুলো প্রকাশ করার সুযোগ পেয়েছে সন্তানেরা।’

বাবাকে নিয়ে লিখেছেন এমন সেরা ১০ লেখকের হাতে তুলে দেওয়া হয় পুরস্কার
ছবি: প্রথম আলো

এবারের আয়োজনে বিজয়ী ১০ লেখক হলেন শফিকুর রহমান শান্তনু (‘শৈশবে যাকে যমের মতো ভয় পেতাম, সে-ই হয়ে গেল বন্ধু’), মাহফুজা খাতুন (‘মলাটবন্দী ভালোবাসা’), গোপাল রায় (‘মহারাজা, তোমারে সেলাম!’), সোয়েব আল হাসান (‘ঝড়ে ডুবে গেল নৌকা, তারপর?’), সানজিদা আলম (‘মায়ার অন্য নাম’), আহাম্মেদ আলী (‘বাবাকে কোলে নিতে পারা একই সঙ্গে আনন্দ ও বেদনার’), ফারহানা রহমান (‘আমার যোদ্ধা বাবা’), নিলুফার রুখসানা (‘আকাশ বরাবর লেখা’), প্রার্থয়িতা গাইন জয়ীতা (‘কাছে গেলে বাবা বলত, আপনি কে?’) ও ফাল্গুনী তানিয়া (‘এক টাকার ঘুড়ি’)।

লেখক ও তাঁদের বাবাদের জন্য উপহার হিসেবে ছিল গোদরেজ হাউসহোল্ড প্রোডাক্টস বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিশেষ গিফট হ্যাম্পার এবং প্রথম আলোর পক্ষ থেকে এক হাজার টাকা সমমূল্যের বই ও অভিনন্দনপত্র।

পুরস্কারপ্রাপ্তরা জানান তাঁদের অনুভূতি
ছবি: প্রথম আলো

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গোদরেজ হাউসহোল্ড প্রোডাক্টস বাংলাদেশের মার্কেটিং লিড ভাস্কর কুমার দে। তিনি বলেন, ‘গত দুই বছরের মতো এবারও এ আয়োজনে থাকতে পেরে গোদরেজ পরিবার আনন্দিত। সব সময় ভালো কাজের সঙ্গে থাকতে চায় গোদরেজ। তারই ধারাবাহিকতায় বাবা দিবসে প্রথম আলোর সঙ্গে যৌথভাবে আমরা এ আয়োজন করছি। ভবিষ্যতেও আমরা প্রথম আলোর এমন আয়োজনের সঙ্গী হব।’

আনিসুল হক বলেন, ‘সন্তান যখন বাবাকে নিয়ে লেখে, সেটাই পৃথিবীর সেরা লেখা’
ছবি: প্রথম আলো

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন গোদরেজ হাউসহোল্ড প্রোডাক্টস বাংলাদেশের কান্ট্রি এইচআর লিড মো. অহিদুল ইসলাম। আরও উপস্থিত ছিলেন গোদরেজ হাউসহোল্ড প্রোডাক্টস বাংলাদেশের ট্রেড মার্কেটিং লিড শাহাদাত হোসাইন এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্র্যান্ড ম্যানেজার তাহসীন নাঈর চৌধুরী।

বাবা দিবস উপলক্ষে গোদরেজ প্রটেক্ট ম্যাজিক হ্যান্ডওয়াশ ও প্রথম আলো ডটকমের এ যৌথ আয়োজনে ১২ থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত লেখা সংগ্রহ করা হয়। দেশ এবং বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে পাঠকেরা এ আয়োজনে অংশ নিয়েছিলেন। পাঠকদের পাঠানো সাত শতাধিক লেখা থেকে প্রাথমিক বাছাই শেষে আনিসুল হকের কাছে ৩০টি লেখা জমা দেওয়া হয়। সেখান থেকে তিনি সেরা ১০টি লেখা নির্বাচন করেন, যেগুলো প্রকাশিত হয়েছে প্রথম আলো ডটকমে।