এক কেজি চিনিতে কয়টি হাওয়াই মিঠাই বানান জয়পুরহাটের রুবেল শেখ
জয়পুরহাট সার্কিট হাউস প্রাঙ্গণে ১৪ জানুয়ারি থেকে মেলা চলছে। তারুণ্যের উৎসব নামের সেই মেলা দেখতে গিয়েছিলাম। প্রধান ফটক থেকে বের হতেই সামনে সড়কের পাশে হাওয়াই মিঠাই বানানোর দৃশ্যে চোখ আটকে গেল। কাছে গিয়ে দেখি, হাত দিয়ে প্যাডেল ঘোরাচ্ছেন রুবেল শেখ আর মেশিন থেকে বের হয়ে আসছে হাওয়াই মিঠাই। চিকন কাঠিতে মিঠাইগুলো বসিয়ে পলিথিনে প্যাকেট করছেন তাঁর স্ত্রী সুখী বেগম। পেছনে ব্যাটারিচালিত একটি ভ্যানে ঘুমাচ্ছে তাঁদের ১৬ মাস বয়সী শিশু আলেফ শেখ। শিশুটিকে মশায় কামড়াচ্ছিল। মাঝেমধে৵ই তাই কাজ ফেলে শাড়ির আঁচল দিয়ে বাতাস করে মশা তাড়াচ্ছিলেন মা।
রুবেল শেখ জানান জয়পুরহাট সদর উপজেলার তেঘর বিশা গ্রামে তাঁর বাড়ি। প্রায় দেড় যুগ ধরে হাওয়াই মিঠাই বানান তিনি। সংসারে তাঁর স্ত্রী আর দুই ছেলে—১১ বছরের মালেক শেখ ও ১৬ মাসের আলেফ শেখ। হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করে তাঁদের সংসার চলে। এ কাজে তাঁর স্ত্রী তাঁকে সহযোগিতা করেন।
রুবেল শেখ বলেন, আগে ফেরি করে খেলনা বিক্রি করতেন। বিভিন্ন এলাকায় মেলা, জলসা, নানা রকমের উৎসবে দোকান দিতেন। হাওয়াই মিঠাইয়ের দোকানও আসত। সেখান থেকেই হাওয়াই মিঠাই বানানো শিখেছেন। এরপর নিজেই ১০ হাজার টাকায় হাওয়াই মিঠাই বানানোর মেশিন কিনেছেন। ১৮ বছর আগে ফেরি করে খেলনাসামগ্রীর দোকান বন্ধ করে হাওয়াই মিঠাই বানানোর কাজ শুরু করেন। যেখানেই মেলা, জলসা বা উৎসব, সেখানেই হাজির হন স্বামী–স্ত্রী। রুবেল শেখ বলেন, চিনি ও খাবারের রং হাওয়াই মিঠাই তৈরির মূল উপকরণ। এক কেজি চিনিতে ৪০টি হাওয়াই মিঠাই হয়। প্রতিটির দাম ২০ টাকা।
সুখী বেগম বলেন, একজনের হাওয়াই মিঠাই তৈরি করতে সময় লাগে। এ কারণে আমিও স্বামীর সঙ্গে হাওয়াই মিঠাই বানানোর কাজ করি। ১৬ মাস বয়সী ছেলে আলেফ শেখ একা বাড়িতে থাকতে চায় না। আমরা যেখানেই যাই, ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে যাই। আমরা কাজ করি আর ছেলে খেলাধুলা করে।