গাড়ির শব্দ শোনা যাচ্ছে, কোথাও যাচ্ছেন?
চারুকলায় যাচ্ছি। আমার বাসা আদাবরে। সেখান থেকে বাসে শাহবাগে এসে নামলাম। প্রায় ২০ বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রায় স্বেচ্ছাসেবক শিল্পী হিসেবে কাজ করি। এবারও করছি।
প্রথম আলো :
ঈদে তাহলে ঢাকাতেই থাকছেন?
ঈদে ঢাকাতেই থাকছি। স্ত্রী আর দুই ছেলেকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি (দিনাজপুরের) পার্বতীপুরে যাব কয়েক দিন পর। গ্রামই তো আমাদের শিকড়।
আপনার একক প্রদর্শনী হলো...
‘বাঘের দেশে বৈশাখ’ নামে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার লা গ্যালারিতে একক প্রদর্শনীটি হয়েছে। এটি আমার ৬০তম একক প্রদর্শনী ছিল। এখানে আমার আঁকা নতুন ও পুরোনো ৫৫টি পটচিত্র স্থান পেয়েছিল। দারুণ সাড়াও পেয়েছি।
প্রথম আলো :
প্রদর্শনীর নাম কেন ‘বাঘের দেশে বৈশাখ’?
বৈশাখেই তো আমরা সবাই পুরো বাঙালি হয়ে যাই। আর বেঙ্গল টাইগার আমাদের জাতীয় প্রতীক। জাতীয় দলের ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের আমরা ‘টাইগার’ বলি। তাঁরা জয়লাভ করলে উল্লাস করি। দীর্ঘদিন ধরেই পটচিত্রে বাঘ আঁকি। আমার বাঘ জমিতে হাল চাষ করে, একতারা-ঢাক-ঢোল বাজায়, রেলগাড়ি ও বিমান চালায়, সুখ-দুঃখ, আনন্দ-ভালোবাসায় বন্ধুর মতো মানুষের পাশে থাকে। তাই প্রদর্শনীর এমন নামকরণ।
বিদেশেও তো আপনার প্রদর্শনী হয়েছে?
২০১৩ সালে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূতের আমন্ত্রণে ‘সেতুচি আর্ট ট্রিনিয়াল’ প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছিলাম। প্রদর্শনীতে আমার বাঘের পটচিত্র সবার নজর কাড়ে। সে সময় আমার বাঘের মাসকট নির্বাচিত হয় জাপান-বাংলাদেশ ‘গুডউইল অ্যাম্বাসেডর’ হিসেবে।
প্রথম আলো :
আঁকাআঁকি শিখলেন কোথায়?
আমি গ্রামে বড় হয়েছি। ১৯৮২ সালে পার্বতীপুরে আমার জন্ম, সেখানেই পড়াশোনা। আঁকাআঁকিতে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। সব নিজে নিজে শিখেছি। দেখে দেখে আঁকা শিখেছি।
আপনার আঁকায় বাঘ কীভাবে এল?
বিখ্যাত শিল্পীদের দেখতাম, নানা বিষয়ে আঁকলেও নিজস্বতা রাখতেন। শিল্পকর্ম দেখলেই বোঝা যেত কার আঁকা। আমিও একটা স্বকীয়তা ফুটিয়ে তুলতে বাঘকে বেছে নিয়েছি। তাই আমার আঁকা পটচিত্রে আবহমান বাংলার লোককাহিনি যেমন, তেমনি বাঘও জায়গা পায়।
প্রথম আলো :
পাবলিক লাইব্রেরির সামনের ফুটপাতে আপনাকে এখনো পাওয়া যায়?
জি। পাবলিক লাইব্রেরির সামনের ব্যস্ততম ফুটপাতেই আমি আঁকাগুলো নিয়ে বসি। বড় বড় আর্ট গ্যালারিতে তো সাধারণ মানুষ যান না। এখানেই তাঁরা আমার কাজগুলো দেখতে পান। অনেকে সংগ্রহও করেন।