বিমান দুর্ঘটনার পরই কেন ‘ব্ল্যাক বক্স’ খোঁজা হয়, কী থাকে এই যন্ত্রে
সম্প্রতি ভারতের আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান বিধ্বস্তের পর বিমানে সংরক্ষিত ‘ব্ল্যাক বক্স’টি উদ্ধার করা হয়েছে। যেকোনো বিমান দুর্ঘটনার পর তদন্তের জন্য প্রথমেই ব্ল্যাক বক্সের খোঁজ করা হয়। কারণ এই ব্ল্যাক বক্সে ফ্লাইটের যাবতীয় তথ্য এবং ককপিটে পাইলট, কো-পাইলট ও অন্যদের কথোপকথন স্বয়ংক্রিয়ভাবে রেকর্ড হয়ে থাকে। ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (এফডিআর) ও ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (সিভিআর)—এ দুটি ব্ল্যাক বক্স থাকে প্লেনের পেছনের দিকে। পাইলটদের হেডসেট ও ককপিটের মাঝামাঝি স্থানে থাকে প্রায় চারটি মাইক্রোফোন। ওদের কাজ হলো সেখানকার কথোপকথন ধারণ করে পেছনের ব্ল্যাক বক্সে জমা করা। আধুনিক মডেলের সিভিআরে শেষ দু ঘণ্টা পর্যন্ত কথাবার্তা রেকর্ড থাকে। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে ব্ল্যাক বক্সের বিভিন্ন তথ্য থেকে শেষ মুহূর্তের পরিস্থিতি জানা যায়। এভাবে দুর্ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনের মাধ্যমে পরবর্তীকালে ওই ধরনের বিপর্যয় এড়ানোর উপায় বের করা ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা নেওয়া সম্ভব ব্ল্যাক বাক্স তাই খুব জরুরি।
রাইট ব্রাদার্স প্রথমে বিমানের পাখার ঘূর্ণন সম্পর্কিত রেকর্ড রাখার ব্যবস্থা করেছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর কালে উন্নত ধরনের ব্ল্যাক বক্সের প্রচলন হয়। ব্ল্যাক বক্সগুলো এমনভাবে তৈরি যে আগুন, পানি, চাপ, তাপ বা আঘাতে সহজে নষ্ট হয় না। দুর্ঘটনায় বিমান হয়তো ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়, আগুনে পুড়ে যায় বা পানিতে ডুবে যায় কিন্তু ব্ল্যাক বক্স টিকে থাকে।
নামে ব্ল্যাক বক্স হলেও এর রং কিন্তু কালো নয়। সাধারণত এটি উজ্জ্বল কমলা রঙের, এর গায়ে থাকে প্রতিফলক ফিতা (রিফ্লেক্টিভ টেপ), যার ওপর আলো পড়লে জ্বল জ্বল করে প্রতিফলিত হয়। দুর্ঘটনার পর সহজে যেন খুঁজে পাওয়া যায় সে জন্য এ ব্যবস্থা। রং কালো না হওয়া সত্ত্বেও কেন ব্ল্যাক বক্স নাম হলো তার দুটি কারণ থাকতে পারে। হয়তো প্রথম দিকে এর রং সত্যিই কালো ছিল, সেখান থেকেই তার নাম ব্ল্যাক বক্স, পরে সুবিধার জন্য হয়তো উজ্জ্বল কমলা রঙের করা হয়েছে। আবার এমনও হতে পারে যে, প্রায় ক্ষেত্রে যেহেতু দুর্ঘটনার পর পুড়ে, দুমড়ে-মুচড়ে কালো রং ধারণ করে তাই এর নাম ব্ল্যাক বক্স হয়েছে।