মেট্রোরেল স্টেশনে হেঁটে বেড়াচ্ছেন, কে এই ছোট্ট ‘দুর্গা’
পূজার ডাকে স্বর্গ থেকে মর্ত্যে রওনা দিয়েছেন দেবী দুর্গা। কিন্তু একি! কোথায় তাঁর হাতি, ঘোড়া, পালকি বা নৌকা? এসবের বদলে এবার কি তাহলে মেট্রোরেলে চড়ে বসেছেন দেবী?
সম্প্রতি ফেসবুকে ভাইরাল এক ভিডিওতে দেখা মিলছে ছোট্ট এক ‘দুর্গা’র। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মেট্রোরেল স্টেশনে হেঁটে বেড়াচ্ছেন দেবী দুর্গা। ভীষণ ব্যস্ত তাঁর ভঙ্গি। যেন ট্রেন ধরতে পারলেই হলো।
টুকটুকে লাল বেনারসি শাড়ি, গলায় মালা, মাথায় মুকুট আর খোলা চুলের দুই পাশে দুটি লাল গোলাপে সেজেছেন দুর্গা। হাতে-পায়ে আলতা আঁকা, কপালে তাঁর ত্রিনয়ন। কোমরের বন্ধনীতে গুঁজেছেন একগুচ্ছ পদ্মফুল। ছোট গণেশকে নিয়েছেন কোলে।
যাচ্ছেন বাবার বাড়ি। তাই সঙ্গে নিয়েছেন জামাকাপড়ভর্তি ছোট্ট এক নীল স্যুটকেস।
স্টেশনে পৌঁছে লোকের ভিড়ে খানিকটা যেন বিরক্তও হয়েছেন ছোট্ট দেবী। ট্রেনে উঠতে গিয়েও হিমশিম খাচ্ছেন। ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে করতে গেছেন ঘুমিয়ে। কাণ্ড দেখে অবাক বনে গেছেন অন্য যাত্রীরাও।
দুর্গার আসল পরিচয়
দেবী দুর্গার আগমনীর সাজে এই ছোট্ট মেয়েটির নাম তর্জনী সাহা। ডাকনাম রুদ্রী। বয়স সাড়ে চার বছর। মেয়ের রুদ্রীর জন্মের পরপরই তার নামে একটি ফেসবুক পেজ খুলেছেন মা তিথি সাহা। সেই পেজের বর্তমান ফলোয়ার ৮০ হাজার।
মেয়েকে দুর্গার রূপে নিজেই সাজিয়ে দিয়েছেন তিথি। পূজার আমেজ থেকেই মেয়েকে এভাবে সাজিয়েছেন জানিয়ে তিথি বলেন, ‘মেয়ে তো দেবীরই প্রতিরূপ। এভাবে পূজার সময়টা নিজেদের মতো করে উদ্যাপন করার চেষ্টা করছি।’
কে তুলেছেন ছবিগুলো
দুর্গা সাজে রুদ্রীর এসব ছবি তুলেছেন আলোকচিত্রী অনিক সাহা। ২০১৫ সাল থেকে আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করছেন তিনি। তাঁর ফেসবুক পেজের নাম ‘ফটো অ্যান্ড ফিল্ম ক্যাফে’।
২০২২ সালে প্রথমবারের মতো রুদ্রীর ছবি তুলেছিলেন অনিক। সেই থেকেই রুদ্রীর মা–বাবার সঙ্গে পরিচয়। এত দিনে একেবারে পরিবারের সদস্যের মতো হয়ে গেছেন তাঁরা। রুদ্রী তাঁকে মামা ডাকে।
ছবিগুলোর ব্যাপারে অনিক বলেন, ‘ইট-পাথরের শহরে দেবীর আগমন কীভাবে হতে পারে, এই ভাবনা থেকেই মেট্রোর কথা মাথায় আসে। স্টেশনের বাইরের ছবিগুলো রমনা কালীমন্দিরের।’
ছোট্ট দুর্গার ছবিগুলো এখনকার পূজার আমেজকে আরও বাড়িয়ে দিলেও ছবিগুলো আদতে গত বছরের, জানালেন অনিক।
তবে এ বছর পূজায় আরও তিনটি আবহে রুদ্রীর ছবি তুলবেন বলে জানালেন। সেসব ছবিতে দেখা যাবে, বাবার বাড়ি এসে দেবীর নৌকায় বেড়ানো, অষ্টমীতে টিএসসির ফুচকা খাওয়া আর দশমীর বিদায়বেলা।