মারা যাওয়া গাছটা ছিল মেয়েটার নিজ হাতে লাগানো

পাঠকই প্রথম আলোর প্রাণ। আর পাঠকের আপন আঙিনা ‘ছুটির দিনে’। প্রথম আলোর রজতজয়ন্তীতে তাই আমরা পাঠকের লেখা নিয়েই হাজির হয়েছি। তাঁদের কেউ জানিয়েছেন ‘ছুটির দিনে’তে পড়া হৃদয়ছোঁয়া কোনো লেখার কথা। কেউ স্মৃতির ঝাঁপি খুলেছেন স্বনামে প্রকাশিত লেখা নিয়ে, জানিয়েছেন প্রিয় ক্রোড়পত্র নিয়ে নিজের ভালো লাগার কথাও। পড়ুন এমন একটি লেখা।

প্রথম আলো ও আমার জন্মদিন একই দিনে। তাই জন্মদিনের আমেজটা আমি খুব সকালেই টের পেতাম। হকার পেপারটা মুড়িয়ে রাস্তা থেকেই ছুড়ে মারত আমাদের খোলা বারান্দায়। ঘুম থেকে উঠে খুলে দেখতাম ঝলমলে প্রথম আলো।

মাধ্যমিকে পড়ার সময় ‘ছুটির দিনে’র সঙ্গে সখ্য। এই ক্রোড়পত্রে পাঠকের একটা লেখা প্রচণ্ডভাবে আমার আবেগকে নাড়া দিয়েছিল। একটা ছেলে ও মেয়ে পাশাপাশি বিল্ডিংয়ের থাকে। তাঁরা জানালা দিয়ে চিরকুট ছোড়াছুড়ি করে প্রেম করে। একসময় পাশাপাশি জানালার মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ায় একটা গাছ। ছেলেটা প্রতিদিন গোপনে গাছের গোড়ায় লবণপানি ঢেলে দিয়ে আসতে থাকে। একসময় গাছটা মারা যায়। এরপর ছেলেটা জানতে পারে গাছটা ছিল মেয়েটার পরম যত্নের, তাঁর নিজ হাতে লাগানো।

এই লেখাটা কৈশোরে আমার আবেগকে ভীষণ নাড়া দিয়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়েছি বছরখানেক হলো। ছোটবেলার রোজকার মতো মেঝেতে হাঁটু গেড়ে পত্রিকা পড়া হয় না অনেক দিন। কিন্তু মাঝেমধ্যে ‘ছুটির দিনে’ সামনে এলে প্রায়ই ভাবি হালকা রঙের অলংকরণে ছাপা সেই গল্প। জানি না সেটা নিছকই গল্প ছিল, নাকি মেয়েটার কান্না!