খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রিদমের নাম শুনেছেন?

সারা বছরই নাচের চর্চা করেন ক্লাবের সদস্যরা
ছবি: দ্বীপাক্ষিক

নামের মধ্যেই একটা ‘ছন্দ’ আছে বটে। ২০০৯ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে প্রতিষ্ঠা করেন নাচবিষয়ক সাংস্কৃতিক সংগঠন—রিদম। এ সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিল সাংস্কৃতিক চর্চা ও নৃত্যকলার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে সহায়তা করা।

সুরের ছন্দে নাচের যে অভিব্যক্তি ফুটে ওঠে, সেটা বোঝাতেই এমন নাম রেখেছিলেন ক্লাবটির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যরা। বর্তমানে ‘রিদম’ সবার কাছে বেশ জনপ্রিয় হলেও শুরুর সময়টা খুব সহজ ছিল না। নিয়মিত অনুশীলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য জায়গা পর্যন্ত ছিল না। একটি একাডেমিক ভবনে অনুশীলন চালিয়ে যেতে হয়েছে দিনের পর দিন। মাত্র সাত সদস্য নিয়ে ক্লাবটি যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে এর সদস্যসংখ্যা ৮৪।

ক্লাবের সদস্যদের একাংশ
ছবি: দ্বীপাক্ষিক

বর্তমান সভাপতি মো. আছাদুর রহমান বলেন, ‘রিদমের প্রধান আকর্ষণ ক্ল্যাসিক্যাল ও ফোক নাচ। পাশাপাশি হিপহপ, ফ্রি স্টাইল, সালসাসহ সব ধরনের নাচই গুরুত্ব পায় এখানে। তবে রিদম সব সময় হিন্দি গান এড়িয়ে চলে, দেশীয় গানকেই সব সময় প্রাধান্য দেওয়া হয়।’ ক্লাবটির পক্ষ থেকে প্রতিবছর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রিদমের সবচেয়ে বড় আয়োজন হলো ‘ইন্টার ইউনিভার্সিটি ড্যান্স ফেস্ট’ (আন্তবিশ্ববিদ্যালয় নাচ উৎসব)। যেখানে দেশের নানা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নাচের দল আসে তাদের পরিবেশনা তুলে ধরতে। অনুষ্ঠানটি ২০১৯ সাল থেকে নিয়মিত আয়োজন করে আসছে এই ক্লাব, যার ষষ্ঠ মৌসুম অনুষ্ঠিত হয়েছে এ বছর। এ ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকে ক্লাবটি। যেমন নৃত্যে মুক্তি, ড্যান্স থ্রু দ্য ডিকেডস, ফ্ল্যাশমব, কর্মশালা, জাতীয় দিবস উদ্‌যাপন ইত্যাদি।

আরও পড়ুন

শুধু যে অন্যান্য ক্যাম্পাসের নাচের দলই রিদমের ইভেন্টে অংশ নেয়, তা নয়; বরং রিদমের সদস্যরাও অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এমনকি ভারতে অনুষ্ঠিত চতুর্থ সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটিজ ইয়ুথ ফেস্টিভ্যালেও (এসএইউফেস্ট) অংশগ্রহণ করা হয়েছিল ক্লাবের পক্ষ থেকে। সেখানে বাংলাদেশসহ অংশ নিয়েছিল দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়।

শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে সহায়তা করাই ক্লাবটির লক্ষ্য
ছবি: দ্বীপাক্ষিক

এত রকম আয়োজন করা ও ক্লাবটির কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ—অর্থ। ক্লাবের সদস্য ও অ্যালামনাইদের তহবিলে চলে ক্লাবটির সব কার্যক্রম। তবে বড় বড় অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও পৃষ্ঠপোষকতা করে। আর্থিক সমস্যার মধ্যেও ক্লাবটি এখন পর্যন্ত তিনবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ‘প্রাউড অব ইউ’ পুরস্কার পেয়েছে, যা ক্লাবের সদস্যদের নিয়মিত সাংস্কৃতিক চর্চা চালিয়ে যেতে আরও অনুপ্রাণিত করছে। রিদমের বর্তমান সভাপতি জানালেন, রিদমকে তাঁরা ভবিষ্যতে দেশসেরা নৃত্য সংগঠন হিসেবে দেখতে চান। পাশাপাশি ইন্টার ইউনিভার্সিটি ড্যান্স ফেস্ট তিন দিনব্যাপী আয়োজন করার পরিকল্পনা আছে।