৩০ জুলাই না আগস্টের প্রথম রোববার, বন্ধু দিবস আসলে কবে?

‘পুরো পৃথিবী এক দিকে, আর আমি অন্য দিক/সবাই বলে করছ ভুল, আর তোরা বলিস ঠিক/তোরা ছিলি, তোরা আছিস/জানি তোরাই থাকবি/বন্ধু বোঝে আমাকে, বন্ধু আছে আর কী লাগে?’ শিল্পী তপুর গাওয়া গানটা মনে পড়ে? বন্ধুত্ব ঠিক যেন এমনই।

মানুষ যুগ যুগ ধরে এই বন্ধুত্বকে উদ্‌যাপন করেছে। কিন্তু আগস্টের প্রথম রোববার যে বন্ধু দিবস সেটা এল কী করে? মজার ব্যাপার হচ্ছে, বন্ধু দিবস দুই বন্ধুর অমর কোনো কাহিনি নয়। সম্পূর্ণ ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যেই এর প্রচলন শুরু হয়েছিল। ১৯৩০ সালে এই কাজটি করেছিলেন বিশ্বখ্যাত উপহারসামগ্রী ও কার্ড বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান হলমার্কের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা জয়েস হল। তিনি প্রতিবছর ২ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধুত্ব দিবস উদ্‌যাপনের বিষয়টি সামনে আনেন। এদিন কার্ড আদান-প্রদানের মাধ্যমে বন্ধু দিবস পালন করার চল শুরু হয়। অবশ্য তাঁর সে প্রচেষ্টা অতটা সফল হয়নি। ১৯৪০ সাল নাগাদ মানুষ বুঝতে পারে, এটা কোনো মহৎ উদ্দেশ্য নয়, বরং হলমার্কের কার্ড ব্যবসা বাড়ানোর ফন্দি। এরপর থেকে বন্ধু দিবস উদ্‌যাপন একরকম বন্ধই হয়ে যায়।

বন্ধুত্বের হয় না তুলনা
ছবি: প্রথম আলো

জয়েস হলের উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রে হালে পানি না পেলেও ইউরোপ-এশিয়ার বিভিন্ন দেশে একসময় ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে বন্ধু দিবস উদ্‌যাপনের রেওয়াজ। তবে এই দিবস উদ্‌যাপনের ব্যাপারটিতে মোড় ঘুরিয়ে দেন প্যারাগুয়ের চিকিৎসক র‌্যামন আর্থেমিও ব্রেচ। তিনি ১৯৫৮ সালের ২০ জুলাই বিশ্বব্যাপী বন্ধু দিবস পালনের প্রস্তাব দেন। এরপরই বিশ্বব্যাপী ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে বন্ধুত্ব, ঐক্য ও ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে গঠন করা হয় ‘বন্ধুত্ব ক্রুসেড’। পরবর্তী সময়ে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান ৩০ জুলাইকে বন্ধু দিবস ঘোষণা করেন। জাতিসংঘ জুলাইয়ের ৩০ তারিখ বন্ধু দিবস পালন করলেও বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আগস্টের প্রথম রোববার বন্ধু দিবস হিসেবে পালিত হয়।

ফ্রেন্ডশিপ ডে ওয়েবসাইট ও ইন্ডিয়া টুডে অবলম্বনে