অনলাইন দুনিয়ায় এই কাজগুলো করবেন না
সামাজিক জীবনের আদবকেতা পরিবার থেকেই শেখানো হয়, পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকাও থাকে। কিন্তু অনলাইন দুনিয়ার আদবকেতার পাঠ কি কোথাও দেওয়া হয়? এখানেও তাঁর সামাজিক জীবনের আদবকেতার শিক্ষা এবং নিজের বিবেচনা বোধকে কাজে লাগাবেন একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি, এমনটাই কাম্য। তবে বাস্তবের সামাজিক জীবনের মতো এখানেও অনেকে জেনেবুঝে কিংবা নিজের অজান্তেই আচরণগত ভুল করে বসেন।
এই যেমন বার্তা পাঠানোর বেলায় দেখা যায়, কেউ কেউ স্থান-কাল-পাত্র বিবেচনায় রাখেন না। অপরিচিত মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতা শুরুর সময় সম্ভাষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আলাপ কেবল তখনই এগোনো উচিত, যখন বুঝতে পারবেন অপরপক্ষ আগ্রহী। কেমন আছেন, কী করছেন—এসব বার্তা বারবার কোনো অপরিচিত ব্যক্তিকে পাঠানো উচিত নয়, যদি না তিনি অপরিচিত থেকে নিদেন খানিকটা পরিচিত হয়ে ওঠেন।
জানুন প্রশ্নের সীমা
ব্যক্তিগত, সংবেদনশীল কিংবা বিব্রতকর বিষয়ে কথা বলবেন না। একজন ব্যক্তি কেন বিয়ে করেননি বা কেন তাঁর বিয়ে টেকেনি—এসব বিষয় অত্যন্ত সংবেদনশীল।
আপনি যাঁর সঙ্গে আলাপ করছেন, তাঁর প্রোফাইলে প্রদর্শিত তথ্য তাঁকে আবার জিজ্ঞেস করা উচিত নয়। যেমন যদি তাঁর কর্মস্থলের তথ্য প্রদর্শিত থাকে, তাঁকে বার্তা পাঠিয়ে কর্মস্থল জানতে চাওয়াটা অর্থহীন ও বিরক্তিকর।
সময় জ্ঞান
যখন-তখন যে কাউকে বার্তা পাঠানো উচিত নয়। যাঁকে বার্তা পাঠাচ্ছেন, আপনি তাঁর কতটা কাছের, সেটা বিবেচনায় রাখুন। রাতবিরেতে কাউকে ‘অনলাইন’ দেখলেই বার্তা পাঠাবেন না বা কল করবেন না। আপনি তাঁর কাছের কেউ না হলে তিনি বিরক্ত হবেন, এটাই স্বাভাবিক। আবার কেউ হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছিলেন, আপনার অনাকাঙ্ক্ষিত বার্তার টুং টাং শব্দে তাঁর ঘুম ভেঙে যেতে পারে।
সবার সঙ্গে চলতে
সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক মন্তব্য এবং এ ধরনের কোনো পোস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।
কোথাও এমন কোনো মন্তব্য করবেন না, যাতে কারও মনে আঘাত লাগতে পারে।
যাঁকে খুশি তাঁকে নিজের পোস্ট বা ছবিতে ‘ট্যাগ’ করবেন না। রক্তদান বা আর্ত মানবতার সেবাসংক্রান্ত পোস্ট হলে অবশ্য ভিন্ন কথা।
এমন স্থান, যেখানে সবাই আপনার মন্তব্য বা লেখা পড়তে পারছেন (যেমন ফেসবুক ওয়াল), সেটি যদি আপনার একান্ত আপনজনেরও হয়, সেখানে লেখার সময় অবশ্যই পারিপার্শ্বিকের কথা বিবেচনায় রাখুন।
সম্মান করুন সব নারীকে
নারীর প্রতি ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন। কে কেমন পোশাক পরে ছবি তুলবেন, সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেবেন কি না, এগুলো নিতান্তই তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। আপনার পছন্দ না হলে তাঁকে অনুসরণ করা থেকে বিরত থাকতে পারেন। কারও পরিবার সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করবেন না। মনে রাখবেন, আপনার মন্তব্য আপনার নিজের পরিবারের পরিচয় বহন করে।
প্রসঙ্গ ছবি
অর্ধপরিচিত বা আপনার খুব কাছের কেউ নয়, এমন ব্যক্তির ছবি তোলা কিংবা পোস্ট করার আগে তাঁর অনুমতি নেওয়াটা সৌজন্যবোধের পরিচায়ক। কারও অসম্মতিতে তাঁর ছবি পোস্ট করবেন না।
অন্যের শিশু বা পোষা প্রাণীর ছবি তোলা এবং পোস্ট করার আগে অনুমতি নিন।
অনেক ক্ষেত্রে নিজেদের ছবি তোলার সময় ফ্রেমের মধ্যে অপরিচিত কেউ অনিচ্ছাকৃতভাবে চলে আসতে পারেন। এমন ছবিতে ওই ব্যক্তির অংশটা কেটে দেওয়া বা ঝাপসা করে দেওয়া উচিত।
নিজেদের ছবি পোস্ট করার ক্ষেত্রেও সামাজিক মূল্যবোধের প্রতি খেয়াল রাখা বাঞ্ছনীয়।